মাদ্রাসা, বাসে এবং এখানে সেখানে যেমনি ছাত্রী ও নারী নির্যাতন প্রবণতা বেড়ে চলছে তেমনি এ জ্বালা যন্ত্রনা সহ্য করতে না পেরে অনেকই আত্মহত্যার পথও বেছে নিচ্ছে। অহরহ এতসব ঘটনার মধ্যে সম্প্রতি আলোচিত দুটি ঘটনা হচ্ছে ফেনীর সোনাগাজী মাদ্রাসার ছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে নারী নির্যাতন, পুড়িয়ে মারা এবং অপরটি হচ্ছে কিশোরগঞ্জের কটিয়াদীর বাসে নার্স তানিয়াকে ধর্ষণ ও হত্যা। সভ্য সমাজে মানুষ হিসেবে পরিচিত কিছু নরকীট, দানব ও দজ্জাল মানবতার সবকিছু লংঘন করে বন্য হাতীর মতো পদলেহন ও ডিনামাইটের মতো গুড়িয়ে দিয়ে আইয়্যামে জাহেলিয়ার ন্যায় বর্বরতম, নিষ্ঠুর কুৎসিত পথ থেকে আজও সরে যাচ্ছে না। মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এর জন্মের আগেও ইসলাম ধর্মের আবির্ভাবের আগের যুগকে বলা হয়ে থাকে আইয়্যামে জাহেলিয়ার যুগ, অন্ধতার যুগ, অজ্ঞতার যুগ, মূর্খতার যুগ, কৃষ্ণ যুগ বা অমব ড়ভ ওমহড়ৎধহপব এর যুগ। সেই যুগে অন্যায়, ব্যাভিচার, নারী নির্যাতন, কন্যা সন্তানকে জীবন্ত কবর দেয়া ছিল নিত্যদিনের ভূষন। কিন্তু আখেরী জামানার সর্বশেষ নবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এর আবির্ভাবের পর পবিত্র কোরআন নাজিল ও হযরত জিবরাঈল (আঃ) এর মাধ্যমে রাসূল (সাঃ) এর নিকট ওহীর মাধ্যমে আল্লাহর তরফ থেকে মানুষের হেদায়েতের জন্য সময়ে সময়ে বিভিন্ন নির্দেশনা এসে থাকে। যার ফলে নবী করিম (সাঃ) ও তাঁহার সাহাবীদের পরামর্শে অনেকেই নারী নির্যাতন, কন্যা সন্তানকে জীবন্ত কবর, অন্যান্য পাপাচার ও বেদাত থেকে সরে এসে দলে দলে ইসলাম ধর্মের শান্তির পতাকা তলে সমবেত হয়ে থাকে। কোরআন নাজিলের আগেও নবীদের ওপর তাওরাত, যাবুর, ইঞ্জিল নাজিল হলেও কোরআন ছিল সর্বশেষ ও সর্বশ্রেষ্ঠ ধর্মগ্রন্থ।
কন্যা সন্তানকে জীবন হত্যা করা এবং জীবন্ত কবর দেয়ার কারণে মা জাতিকে সম্মান দেয়ার জন্যে পবিত্র কোরআনে আল জান্নাতু তাহতা আকদামেল উম্মেহাত অর্থাৎ মায়ের পায়ের নীচে সন্তানের বেহেশত উল্লেখ করা হয়ে থাকে। এছাড়া ইসলাম সাম্যের ধর্ম, শান্তির ধর্ম, সম্প্রীতির ধর্ম। এখানে যেমন জোর জুলুমের স্থান নেই তেমনি প্রত্যেকে প্রত্যেকের ধর্ম স্বাধীনভাবে পালনের নির্দেশ দিয়ে লাকুম দীনুকুম ওয়ালিয়া দ্বীন, অর্থাৎ তোমার জন্য তোমার ধর্ম এবং আমার জন্য আমার ধর্ম পালনের নির্দেশ দিয়ে থাকে। এমনকি অন্যের ধর্মে কোনো প্রকার হস্তক্ষেপ না করার জন্য আল্লাহ রাব্বুল আল আমীন কঠোর নির্দেশনা দিয়ে থাকেন। তারপরও দেখা যায় হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এর ওফাতের পর তোলায়হা, মুসায়লামা, সাজাহ ও উসামা নামে চারজন ভন্ড নবী হিসেবে দাবী করে। সেই সময় হযরত আবু বকর (রাঃ) এর মতো সুযোগ্য ব্যক্তি না থাকলে ইসলাম তখনই মহাসংকটে নিপতিত হত বলে সমকালীন ঐতিহাসিকরা মনে করে থাকে। অর্থাৎ ইসলাম ধর্মের আবির্ভাবের পর থেকে মুসলমানদের ওপর এমনিতেই একটা পর একটা বিধর্মীদের চক্রান্ত, ষড়যন্ত্র ও বিরোধীতা চলেই আসছে। আজও একটা শ্রেণী সুমহান ইসলাম ধর্মের নামাবলী গায়ে নিয়ে ইহুদী, নাসারা ও কুপমন্ডুকদের ইন্ধনে জঙ্গি তকমা নিয়ে দুনিয়ার বিভিন্ন দেশে হত্যাকান্ড চালিয়ে অগনিত নারীপুরুষ ও কোলের শিশুকেও হত্যা করতে কুন্ঠাবোধ করছেনা। যদিও ইসলাম এ পথকে
চলমান পাতা/২
পাতা: ২
কঠোরভাবে ঘৃণা করে এবং এর জন্য দায়ীদের কঠোর শাস্তির ঘোষণা দিয়ে রেখেছে। তাতে গোটা বিশ্বে শান্তির ধর্ম ইসলাম ধর্মকে তথাকথিত ইসলামের নামদারী ঘৃণ্য ও জননিন্দিত জঙ্গিরা কোথায় নিয়ে যাচ্ছে তা চিন্তা করলে যেকোনো মুসলমানের শরীর শিহড়িয়ে না উঠার কথা নয়। এছাড়া নিজের জীবনকে নিজে কোনো অবস্থাতেই জীবনহানি এবং জীবন ধ্বংসের বিরুদ্ধে কঠোর হুঁশিয়ারী উচ্চারণ করেছে। তারপরও জঙ্গিরা আত্মঘাতি বোমার মাধ্যমে নিজেকে ছিন্নভিন্ন করে উড়িয়ে দিয়ে থাকে। যা ইসলাম ধর্মে যেমনি নিষিদ্ধ তেমনি পবিত্র কোরআনের বিভিন্ন আয়াত, সূরা এবং হাদীসে সুস্পষ্টভাবে বর্ণনা করা হয়েছে।
নারী নির্যাতন, ধর্ষণ, শ্লীলতাহানী সম্পর্কে পবিত্র কোরআন, কওলী, ফেলী, তকরিরি হাদীসসহ বিভিন্ন বর্ণনায় কঠোর শাস্তি হিসেবে উল্লেখ করা হলেও দিনের পর দিন নারী নির্যাতন, ধর্ষণ, শ্লীলতাহানী, সন্তানতূল্য ছাত্রী নির্যাতন, পুড়িয়ে মারা, হত্যা যেন দিনের পর দিন বেড়েই চলছে। এসব দেখে মনে হচ্ছে নারীদের যেন আত্মসম্মান, মর্যাদা, নিরাপত্তা, সম্ভ্রব নিয়ে বেঁচে থাকার জায়গাটুকু যেন দিনের পর দিন ক্ষীণ হয়ে আসছে। এ ব্যাধি নতুন কিছু নয়, সনাতন ব্যাধি হিসেবে গণ্য করা হয়ে থাকে। অনেকেই মনে করে প্রাথমিকভাবে এর প্রতিকারের ব্যবস্থা বা ডাস্টিক এ্যাকশন (উঁংঃরপ অপঃরড়হ) নেয়া হলে কোনো মতেই এই ব্যাধি মহামারী হিসেবে দেখা যেত না। এই ভয়ে আজ অনেক অভিভাবক স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসায় ছাত্রী শিক্ষার্থীদের পাঠানোর ব্যাপারে নিরোৎসাহিত হয়ে পড়ছে। সম্প্রতি একটি বেসরকারী পরিসংখ্যান থেকে জানা যায়, মাদ্রাসা ছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে নারী নির্যাতন ও দানবীয়ভাবে কেরোসিন ঢেলে পুড়িয়ে মারার দৃশ্যপট দেখে অনেক আগ্রহী অভিভাবক মেয়েদেরকে মাদ্রাসায় পাঠানোর ব্যাপারে আগ্রহ হারিয়ে ফেলছে। এই অবস্থা চলতে থাকলে ছাত্রী শিক্ষার্থীদের অভাবে মাদ্রাসা শিক্ষায় ব্যাপক ধস নামার আশংকা করা হয় উক্ত পরিসংখ্যানটিতে। গণমাধ্যমে দেখা যায়, রাফি কেরোসিনের আগুনে দগ্ধ হয়ে মাদ্রাসার ছাদ থেকে বস্ত্রহীন অবস্থায় বাঁচাও, বাঁচাও বলে চিৎকার করে নামার সময় তার শরীরের মাংস আগুনে ঝলসে গিয়ে ছিটকে পড়তে দেখে মাদ্রাসার জনৈক পিয়ন যে বর্ণনা দিয়েছে গণমাধ্যমে তা দেখে রক্ত মাংসের কোনো মানুষ, সন্তানের পিতা-মাতা কোনো অবস্থাতেই তা সহ্য করার মতো নয়। তদোপরি এ ব্যাপারে মাদ্রাসার কুখ্যাত প্রিন্সিপাল সিরাজউদ্দৌলা ও অন্যান্য দায়ীরা ফেনীর ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টে ১৬৪ ধারার স্বীকারোক্তিতে ঘটনার যে লোমহর্ষক বর্ণনা দিয়েছে তা আরও হৃদয় বিদারক ও শরীর শিহড়িয়ে উঠারই নামান্তর। তেমনিভাবে সম্প্রতি কটিয়াদীর বাসে নার্স তানিয়াকে ধর্ষণ এবং এ ব্যাপারে দায়ীরা কিশোরগঞ্জ ম্যাজিস্ট্রেটের নিকট ১১/৫/২০১৯ ইং শনিবার ১৬৪ ধারায় যে জবানবন্দী দিয়েছে তাও কোনো অবস্থাতেই সহ্য করার মতো নয়। যা এজিদ ও সীমারের নৃশংসতারই পুনরাবৃত্তি। এমনি দুঃখজনক, আমানবিকর ও নৃশংস ঘটনা দেশের আনাচে কানাচে অনেক সময় ঘটলেও তা গণমাধ্যমে ও মিডিয়াতে সবকিছু প্রকাশিত ও প্রচারিত হয় না। অনেক সময় এসব ঘটনার প্রতিকার না পেয়ে অনেকেই আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়ে থাকে বলেও সুত্রে জানা যায়।
সম্প্রতি বেশ কয়েকটি গণমাধ্যমের খবরে একদিনে ১০/১২টি নারী নির্যাতনের ঘটনা অনেকেরই দৃষ্টিতে আসে। ঘটনাগুলো পরখ করলে দেখা যায়, তন্মধ্যে ৭টি নারী নির্যাতন ও ছাত্রী নির্যাতনের ঘটনা মাদ্রাসা শিক্ষার্থী ও মাদ্রাসার শিক্ষকদের নিয়ে। যা দেখে মনে হয়েছে তাদের বিরুদ্ধে এখনই রেপিড এন্ড ডাস্টিক এ্যাকশন (জধঢ়রফ ্ উঁংঃরপ অপঃরড়হ) নেয়া দরকার।
এমনিতেই ইসলাম ও মুসলমানদের শত্রুর শেষ নেই। এসব ঘটনা থেকে ইসলাম ও মুসলমান বিরোধী, ইহুদী, নাসারা ও বিদ্বেষীরা ইসলাম ও মুসলমানদের বিরুদ্ধে যেমন নেমেছে তেমনি বিরতীহীনভাবে তাদের প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়াতে ইসলামের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাতেও কুণ্ঠাবোধ করছেনা। আজ যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, জার্মান, কানাডা, ভারতসহ বিভিন্ন দেশের অমুসলীমরা শান্তির ধর্ম ইসলামের পতাকা তলে আসার কারণে তাদের মনে প্রচন্ড ভয় দেখা দিয়েছে। তাই মাদ্রাসার ছাত্রী নির্যাতন এবং ইসলামের নামে জঙ্গীদের মানুষ হত্যা ইসলামের বিরুদ্ধে বিধর্মীদের হাতিয়ার হিসেবে দেখা দিয়েছে। এমতাবস্থায় যারা ইসলামের কথা বলে, জঙ্গি তকমায় প্রলুব্ধ হয়ে মানুষ হত্যা করে এবং যারা মাদ্রাসা শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে মাদ্রাসার সন্তান তুল্য শিক্ষার্থীদের নারী নির্যাতন করে পুড়িয়ে মারে অনেককে আত্মহত্যায় প্রলুব্ধ করে ওরা যেমনি দেশ, জাতি, জনগণের শত্রু, ইসলামের শত্রু এবং জঙ্গি তকমা এবং তাদের মধ্যে কোনো ব্যবধান নেই। জঙ্গিরা মানুষ হত্যার মাধ্যমে যেমন ঘৃণিত তেমনি নারী নির্যাতনকারীরাও তেমনি ঘৃণিত। কারণ ওরা উভয়েই ইসলাম ও মুসলমানকে গোটা দুনিয়ার কাছে পাষন্ড, হত্যাকারী, অবিবেচক, উজবক, বর্ধক, কম্ভক, ছাত্রী ও নারী নির্যাতনকারী হিসেবে পরিচিতি করতে সচেষ্ট বলে দেশের সচেতন জনগণ ও ইসলামের চিন্তাশীলরা মনে করে থাকে। কোরআন ও ইসলামের দৃষ্টিতে ওদের কী শাস্তি হওয়া উচিত তা পবিত্র কোরআনে ব্যাখ্যা ও সুস্পষ্ট উল্লেখ রয়েছে। কোরআন ও শরীয়তের বিচার যেহেতু আমাদের দেশে চালু নেই তাই আইন বিশেষজ্ঞ ও ইসলামী চিন্তাবিদরা মনে করে থাকে আমাদের দেশের প্রচলিত বিচার ব্যবস্থার সংস্কার করে হলেও দ্রুত এর একটা সুরাহা দরকার। অনেকে আরও মনে করে ওদের ব্যাপারে এমন আইন দরকার যা সামাজিকভাবেও তাদেরকে ঘৃণিত হিসেবে মনে করা হয়ে থাকে। ওরা শুধু ইসলাম, মুসলমান ও দেশের শত্রুই নহে। আল্লাহ, রাসুল (সাঃ), কোরআন ও মানবতার জঘন্য শত্রু।
চলমান পাতা/৩
পাতা: ৩
জানা যায়, দ্রুত সময়ের মধ্যেই নাকি নুসরাত জাহান রাফির মামলা এবং কিশোরগঞ্জের কটিয়াদীর তানিয়া ধর্ষণ ও হত্যা মামলার চার্জশীট দেয়া হবে এবং যত তাড়াতাড়ি সম্ভব তা বিচারের আওতায় নেয়া হবে। এমনিভাবে আরও যে সমস্ত ছাত্রী নির্যাতন, নারী নির্যাতন ও ধর্ষণের পর নির্মমভাবে যাদেরকে হত্যা করা হয়েছে দেশব্যাপী অনুসন্ধ্যান চালিয়ে যাতে প্রতিটি মামলা দ্রুত সময়ে অগ্রাধিকার (চৎরড়ৎরঃু) ভিত্তিতে বিচারে আওতায় এনে বিশেষ কোর্টের মাধ্যমে (ঝঢ়বপরধষ পড়ঁৎঃ) যাতে দ্রুত সময়ে শেষ করা হয় এ ব্যাপারে অনেকেই সরকার ও সংশ্লিষ্ট বিচার বিভাগীয় কর্তৃপক্ষের নিকট প্রত্যাশা করে থাকে। এ ব্যাপারে কিশোরগঞ্জের নারী নির্যাতন ও হত্যার দুটি ঘটনায় যথাসময়ে বিচার না হওয়াতে দুজনের পিতাই আজ দীর্ঘদিন যাবৎ শয্যাশায়ী। জানা যায়, কিশোরগঞ্জ মহিলা কলেজের দুইজন শিক্ষার্থীকে কিশোরগঞ্জে কর্মরত একজন পুলিশ কনস্টেবল ও অন্য একজন প্রতারণা, চক্রান্ত ও ফুঁসলিয়ে ঢাকার এক হোটেলে নিয়ে দুজনকেই নারী নির্যাতন করে এবং তাদেরকে বাগে (আয়ত্বে) আনতে না পেরে নির্মমভাবে হত্যা করে থাকে। একজন ছাত্রীর পিতা প্রাইমারী স্কুলের শিক্ষক (গাইটাল) এবং অপর ছাত্রীর পিতা আয়কর এডভোকেট (স্টেশন রোড সংলগ্ন)। সম্প্রতি মামলার রায়ে দুজনের ফাঁসির আদেশ হয়। দ্রুত সময়ে বিচার হলে দুজন ছাত্রীর পিতা হয়তো এমনিভাবে শয্যাশায়ী হতেন না বলে বিশেষজ্ঞ ডাক্তাররা মনে করে থাকে। অনেক সময় নারী নির্যাতন ও হত্যা মামলার রায় হলেও আইনী জটিলতার কারণে অনেক সময় বছরের পর বছর অতিবাহিত হওয়ার পরও তা কার্যকরী না হয়ে এমনিতেই পড়ে থাকতে বা আপীলে ঝুলে (ঐধহমরহম) থাকতে দেখা যায়। এ সমস্ত মামলাগুলো স্পর্শকাতর হওয়াতে যথেষ্ট গুরুত্বের সাথে টাইম টু টাইম সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের যথেষ্ট গুরুত্বের সহিত দৃষ্টি দেয়ার ব্যাপারেও ভূক্তভোগীসহ অনেকেই অভিমত ব্যক্ত করে থাকে।
উন্নয়নশীল দেশ থেকে মধ্য আয়ের মুসলীম দেশ হিসেবে বাংলাদেশ জঙ্গি তকমার কারণে যেমনি অনেক পেছনে রয়েছে তেমনি মাদ্রাসা শিক্ষায়তনে কতিপয় দুর্বীনিত ও নারী লিপ্সু শিক্ষকদের দ্বারা নারী নির্যাতন, ধর্ষণ ও অন্যান্যভাবে ছাত্রীদের ওপর বেলাল্লাপনা কর্মকান্ডের প্রেক্ষাপটে মুসলমান ও ইসলামের শত্রুরা এটাকে পুঁজি করে ইসলামের মর্মমূলে আঘাত হানতে এমনকি আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ)কে কটাক্ষ করতে গোর্কি, সোনামি ও সম্প্রতি ফনীর ছোবলের মতো আঘাত হানতে তৎপর। যদিও ১৯৯৬ সালে ভারতের দিল্লীতে সুপ্রাচীন ১৬০০ শতকের প্রতিষ্ঠিত বাবরী মসজিদ ধ্বংস করে যখন রামমন্দির বানানোর প্রচেষ্টা চলে, সেই সময় এদেশের দীর্ঘদিনের হিন্দু মুসলীম ভ্রাতৃত্বের মধ্যে যাতে কোনো অবস্থাতে ফাটল না ধরে তা সমুন্নত ও ধরে রাখার জন্য এদেশের শ্রেণীপেশা ও সাধারণ মানুষ রাতদিন পাহাড়া দিয়ে হিন্দু মুসলীম সম্প্রীতি ভ্রাতৃত্বের বন্ধন আরও জোরদার ও অটুট রাখার জন্যে আপ্রাণ প্রচেষ্টা চালিয়ে থাকে। যা বাংলাদেশ গোটা দুনিয়ায় নজির ও দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। যা এদেশের হিন্দু মুসলীম সম্প্রীতির আরও সমৃদ্ধি সৃষ্টি হয়েছে।
এ দেশ থেকে জঙ্গি তকমা ও জঙ্গিবাদ নিরসনে পুলিশসহ বিভিন্ন আইন শৃংখলা বাহিনী, সেনাবাহিনী, কোস্টগার্ড, বিজিবি, র্যাব, এপিবিএন যেমনি সাফল্য অর্জন করেছে তেমনিভাবে বাসে এখানে সেখানে নারী নির্যাতন রোধ এবং মাদ্রাসার ছাত্রী নির্যাতন, ধর্ষণ, পুড়িয়ে মারা এবং এহেন জ্বালায় আত্মহত্যার কারণে দ্রুত সময়ে চার্জশীট (ঈযধৎমব ংযববঃ) দ্রুততম সময়ে বিচারের রায় কার্যকর হওয়া জরুরী বলে আইন বিশেষজ্ঞরা মনে করে থাকে। সম্প্রতি নারী নির্যাতনের মামলা যথাযথ মহিলা ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে জবানবন্দি নেয়ার ব্যাপারে মহামান্য হাইকোর্ট যে নির্দেশনা দিয়েছেন তা যুগান্তকারী পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত। মোদ্দা কথা জঙ্গি তকমা, মাদ্রাসার ছাত্রী নির্যাতন, পুড়িয়ে মারা, বাসে নারী নির্যাতন একই সূত্রে গাঁথা। ওরা যেমনি ইসলাম, মুসলমান ও মানবতার শত্রু, বিষফোঁড়া ও দজ্জাল তেমনি দেশ জাতি ও জনগণের জঘন্য শত্রু। কোনো অবস্থাতেই এসবকে খাটো করে দেখার সুযোগ নেই। জনস্বার্থ ও জনকল্যাণে দেশের শাসন, প্রশাসন, আইন ও বিচার ব্যবস্থার পর্যবেক্ষণ, সংস্কার ও সুনিয়ন্ত্রন সাংবিধানিকভাবে রাষ্ট্র ও সরকারের দায়িত্ব কর্তব্য ও গুরুত্ব অপরিসীম। বিশ্বের দরবারে বাংলাদেশের মর্যাদা ইসলাম ও মুসলমানদের মর্যাদা বৃদ্ধি হোক ইহাই জনপ্রত্যাশা। আমরা নবী করিম (সাঃ) এর উম্মত এর চেয়ে গর্ব করার মতো আর কিছু অবশিষ্ট নেই।
এ.কে.এম শামছুল হক রেনু
লেখক কলামিষ্ট