কিছুদিন আগে জাতীয় প্রেসক্লাবে অনুষ্ঠিত এক অনুষ্ঠানে উপস্থিত বিশিষ্ট গভেষক, বুদ্ধিজীবি, লেখক ও কলামিস্টের কাছে জনৈক ব্যক্তি জানতে চেয়েছিল, দেশে তেলবাজি, চামচা চাটুকারীতা, ভেজাল, গলদ ও ভাঙ্গা ঢোলের বেটকা আওয়াজ এমনি ডাকে আর কতদিন চলবে। প্রতি উত্তর এড়িয়ে গিয়ে তিনি বলেছিলেন মড়ফ শহড়ংি অর্থাৎ আল্লাহ জানেন। আরও সহজ কথায় জনৈক ব্যক্তি জানতে চেয়েছিলেন এমনিভাবে দুর্নীতি আর কতদিন চলবে। প্রতি উত্তরে এবার তিনি এড়িয়ে না গিয়ে বলেছিলেন এ সময়ে ইহা একটি জটিল ও কঠিন জিজ্ঞাসা। সর্বগ্রাসী ও সর্বনাশা দুর্নীতি ক্রমান্বয়ে সুনামির মতো সামনে এগিয়ে চলছে এবং রাহুগ্রাসের মতো করে গিলছে। জনৈক ব্যক্তিকে উদ্দেশ্য করে উক্ত বুদ্ধিজীবি ও কলামিস্ট আরও বলেছিলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীও দুর্নীতির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের কথা বলছেন। এমনকি দুদক চেয়ারম্যানও দুর্নীতির বিরুদ্ধে নেমেছেন এবং সম্প্রতি রাষ্ট্রপতির কাছে দেয়া দুদকের ২০১৮ সালের বার্ষিক প্রতিবেদনে সরকারি, স্বায়ত্বশাসিত ও সংবিধিবদ্ধ সরকারি সংস্থার নিয়োগে দুর্নীতি, অনিয়ম ও স্বজনপ্রীতির যে চিত্র উঠে এসেছে এবং গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে তা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। দুদক বলেছে এসব প্রতিষ্ঠানে দুর্নীতির সুত্রপাত ঘটে শুরু থেকেই। অর্থাৎ যারা ঘুষ দুর্নীতির মাধ্যমে নিয়োগ পায় পরবর্তী সময়ে ওরা আরও বেশী দুর্নীতিতে আশ্রয় গ্রহণ করে থাকে। এক পর্যায়ে তারা ঘুষ দুর্নীতির মাধ্যমে অন্যদের নিয়োগ দেয়। আর এভাবেই চক্রবৃদ্ধি হারে বাড়ছে দুর্নীতি। প্রকৃত পক্ষে দুর্নীতির দুষ্টচক্রের কারণেই সরকারি প্রতিষ্ঠানে দুর্নীতি রোধ করা যাচ্ছেনা বলেও তিনি মন্তব্য করেন। দুর্নীতি দমন করতে চাইলে ভেঙ্গে ফেলতে হবে এ দুষ্টচক্র, তেলবাজ ও ভাঙ্গা ঢোলের বেটকা আওয়াজ। দুদক বার্ষিক রিপোর্টে আরও বলেছে, দুর্নীতি রোধে সর্বাগ্রে নিয়োগক্ষেত্রে দুর্নীতি বন্ধ করা জরুরি বলে নাকি উল্লেখ করে থাকে। নিয়োগে দুর্নীতি রোধ করা গেলে সামগ্রিকভাবে দুর্নীতি অনেকাংশে কমে আসবে। তারপর দুর্নীতিকে বিষফোঁড়া হিসেবে আখ্যায়িত করে উক্ত বুদ্ধিজীবি আরও অনেক উদাহরণ উল্লেখ করে জনৈক ব্যক্তিকে দুদকের এ রিপোর্টটি দেখার ব্যাপারেও পরামর্শ দিয়ে থাকে।
১২ জুন বুধবার, জাতীয় সংসদে প্রশ্নোত্তর পর্বে দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রী জিরো টলারেন্স নীতির কথা পূর্ণ ব্যক্ত করেছেন। তিনি বলেছেন, ঘুষ যে দেবে আর যে নেবে উভয়েই অপরাধী, সেটাই ধরে নিতে হবে। শুধু ঘুষ নিলে তাকে ধরা হবে, তা নয়, যে ঘুষ দেবে তাকেও ধরা হবে। কারণ ঘুষ দেয়াটাও একটা অপরাধ। প্রধানমন্ত্রী দুর্নীতিকে যেভাবে নিয়েছেন, শাসন, প্রশাসনের বড় পদে অধিষ্ঠিত এবং সরকারের অনেক মন্ত্রীরাও এই দুর্নীতি নামক বিষফোঁড়ার বিরুদ্ধে তেমন সোচ্চার না হয়ে তেলবাজি, চামচা, চাটুকারীতা ও ভাঙ্গা ঢোলের বেটকা আওয়াজের সুরেই এই করেছি, সেই করেছি, এই করব, সেই করব, বড়
চলমান পাতা/২
পাতা: ২
বড় কথার ফানুষের মধ্যে বিভোর থাকে বলে অনেকই মনে করে থাকে। তবে এ ব্যাপারে মহামান্য হাইকোর্ট ও সুপ্রীম কোর্টের বিচারকদের যুগান্তকারী নির্দেশনাকে দেশের মানুষ কোনোমতেই খাটো করে না দেখে যথেষ্ট গুরুত্বের সাথে দেখে থাকে। ২৩ মে হাইকোর্টের দ্বৈতবেঞ্চ ভেজাল ৫২টি পণ্য জব্দের আদেশ ও দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের আদেশের সময় বলেছেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আপনি মাদকের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছেন, আপনাকে অনুরোধ জানাবো, প্রয়োজনে ভেজালের বিরুদ্ধেও জরুরী অবস্থার ব্যবস্থা করার। তারপর ১৬ জুন রোববার হলমার্কের চেয়ারম্যান জেসমিন ইসলামের জামিনের বিরুদ্ধে লিভ টু আপীলের শুনানীতে দুদকের আইনজীবিকে উদ্দেশ্যে করে প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে আপীল বেঞ্চ প্রশ্ন রাখেন, দুদক কর্মকর্তাকে ঘুষ দেয়ার কথা স্বীকার করার পরও পুলিশের বিতর্কিত উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) মিজানুর রহমানকে এখন পর্যন্ত গ্রেফতার না করায় উষ্মা প্রকাশ করেছেন আপীল বিভাগ। দুদক আইনজীবীকে উদ্দেশ্যে করে আদালত বলেন, ডিআইজি মিজানকে কেন গ্রেফতার করছেন না ? সে কি দুদুকের চাইতেও বড় ? আদালত আরও বলেন, একজন দুদক পরিচালকের বিরুদ্ধে ঘুষ গ্রহণের অভিযোগ উঠেছে। যেখানে দুদক দুর্নীতির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে, যেখানে দুদক পরিচালকের বিরুদ্ধে অভিযোগ বাস্তবিকই অ্যালার্মিং।
১৮ জুন মঙ্গলবার মেয়াদোত্তীর্ণ ঔষধ বিক্রী বন্ধে জনস্বার্থে করা এক রিট আবেদনের শুনানিকালে বিচারপতি এফ.আর.এম নাজমুল আহসান ও বিচারপতি কামরুল কাদেরের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চে এ শুনানীর এক পর্যায়ে রিটকারী পক্ষের আইনজীবী সাবেক বিচারপতি আলতাফ হোসেন আদালতের উদ্দেশ্যে বলেন, আড়ংয়ে ৭০০ টাকার পাঞ্জাবী কত টাকা রেখেছে দেখেছেন ? এটাকে বন্ধ করতে যেয়ে তৎসংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাকে বদলী করে দেয়া হয়েছে। তখন আদালত বলেন, সবকিছুতে কেন প্রধানমন্ত্রীর ডিরেকশন দিতে হবে ? সেক্রেটারীরা কি তাদের পকেটে ঢুকে গেছে ? বন্ধের সময় বদলীর আদেশ দিয়েছে লজ্জাও নেই। কী বলব, সবকিছুতে প্রধানমন্ত্রী ইন্টারফেয়ার করলে তাদের থাকার দরকার কী ? কত নোংরামি। এ রকম করলেতো যারা সৎ অফিসার তারা ডিমোরালাইজড হয়ে যাবে।
সম্প্রতি জাতীয় স্বার্থে বিচার বিভাগের নির্দেশনায় যে সাহসী ও প্রশংসনীয় ভূমিকা ফুটে উঠেছে, এমনিভাবে জাতীয় স্বার্থে আদালত ও বিচারকদের অসংখ্য উদাহরণের যেন শেষ নেই। মাজদার হোসেন মামলার আলোকে ২০০৭ সালে ব্রিটিশ সৃষ্ট নির্বাহী বিভাগ ও আমলাতান্ত্রিক (ঝঃৎঁপঃঁৎধষ রহঃবৎষড়পশরহম) বেড়াজালে থেকে বিচার বিভাগ পৃথকীকরণে (ঔঁফরপরধষ ঝবঢ়বৎধঃরড়হ) বিচার বিভাগের যুগান্তকারী ভূমিকা অবিস্মরণীয়। যদিও মাজদার হোসেন মামলার আরজির আলোকে অনেক কিছু আজও অসম্পূর্ণ রয়ে গেছে। যদিও বিচার বিভাগকে আরও গতিশীল, পূর্ণাঙ্গ ও এগিয়ে নিতে তা বাস্তবায়ন প্রয়োজন বলে অনেক আইন ও বিচার বিশ্লেষকরা মনে করে থাকে। এছাড়া ১৯৮২ সালের ঢাকার বিয়াম মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত এক সেমিনারে মরহুম বিচারপতি আব্দুর রহমান চৌধুরী আক্ষেপ করে বলেছিলেন, দেশের ভালো মানুষগুলো আজ বড় অসহায়। আর খারাপ লোকগুলো জগদ্দল পাথরের ন্যায় মাথার উপর চেপে বসেছে। সেই সময় তদানীন্তন যুব প্রতিমন্ত্রী আবুল কাশেমের সরকারি বাসভবন থেকে অনেক খুনী মামলার আসামী কালীগঞ্জের ইমদু ও গালকাটা কামালকে গ্রেফতার করা হয়ে থাকে। এছাড়া স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় বেলুচিস্তানের কষাই, দজ্জাল ও নরঘাতক হিসেবে চিহ্নিত পূর্ব পাকিস্তানরে গভর্নর হিসেবে বিশ্ব বেহায়া জল্লাদ ইয়াহিয়ার নিয়োগৃকত লেঃ জেঃ টিক্কা খানকে বন্দুকের নলের মুখেও তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের প্রধান বিচারপতি বি.এ সিদ্দিকি শপথ গ্রহণে অসম্মতি জ্ঞাপন করে থাকেন। তাতে দেখা যায়, দেশ, জাতি ও জনগণের স্বার্থে এদেশের বিচারক, আদালতের গুরুত্ব ও অবদান যেমনি কোনো অংশে কম নহে তেমনি অবিস্মরণীয়ও বটে।
দেশে অনাকাংখিত বেকার সমস্যা রয়েছে। তাই যেকোনো সরকারি অফিস আদালতে চাকরি নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি হলে এমনকি এমএলএসএস (পিয়ন) চাপরাশি, নাইটগার্ড, উমেদার, জারিকারক ও কনস্টেবলের চাকরিতেও অনেকেই বয়স পার হওয়ার কথা চিন্তা করে উচ্চ শিক্ষার কথা গোপন রেখে আবেদন করে থাকে। যখন এ সমস্ত চাকরি নিয়োগ তদবীর সুপারিশ, মামা ভাগ্নে, রাজনৈতিক ক্ষমতা, ডিওলেটার, অভার টেলিফোনে সুপারীশ ও অর্থ লেনদেনের মহার্ঘের কথা শুনা যায় তখন অসহায় চাকরি প্রার্থীর ব্যথা বেদনা, জ্বালা যন্ত্রনার যেন সীমা পরিসীমা থাকেনি। এ যেন ভূক্তভোগীর জন্য বিষাদের কালো ছায়া, বেদনার অশ্রুধারা ও বেদনার মহাকাব্য। জানা যায়, এমনিভাবে এক সময় কিশোরগঞ্জ জজ কোর্ট, জেলা প্রশাসকের কার্যালয় ও সিভিল সার্জন অফিসের তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণীর চাকরি নিয়োগে অনেক মেধা সম্পন্ন ও যোগ্য প্রার্থীদের বাদ দিয়ে তদ্বীর সুপারিশ
চলমান পাতা/৩
পাতা: ৩
ও অনিয়মভাবে নিয়োগ দেয়া হলে নাকি জজ কোর্ট, জেলা প্রশাসকের অফিস ও সিভিল সার্জন অফিসের বারান্দায় চাকরি বঞ্চিতদের হা হুতাশ, কান্না, প্রত্যক্ষদর্শীদের বর্ণনা ও ভিডিও চিত্রের সেই সুকরুণ দৃশ্যের কথা অনেকেই আজও ভুলতে পারেনি। আজও সুকরুণ দৃশ্যের কথা বর্ণনা করতে গিয়ে অনেকেই “গোলাপী এখন ট্রেনে” সিনেমার হায়রে কপাল মন্দ চোখ থাকিতে অন্ধ অভিনেতার ডায়ালগকে উপমা হিসেবে বর্ণনা করে থাকে। এত কিছুর পরও চাকরি নিয়োগে এত সবকিছু বন্ধ হয়ে গেছে তা মনে করার তেমন কিছু নেই। সম্প্রতি উচ্চ আদালতের নির্দেশনা দেখে অনেকেরই প্রতীতি (ইচ্ছা) উচ্চ আদালত যেন চাকরি নিয়োগে দুর্বিসহ এ অনিয়ম বন্ধে যুগোপযোগী নির্দেশনা প্রদান করে থাকে।
সম্প্রতি দুই পর্বে প্রাইমারী স্কুলে শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে। যখন চাকরি প্রার্থীরা পরীক্ষা শেষে গণমাধ্যম ও মিডিয়ার মাধ্যমে জানতে পারে নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁস হয়েছে তখন চাকরি প্রার্থী, তাদের অভিভাবক, পিতা-মাতা ও আত্মীয়-স্বজনের অবর্ণনীয় দুঃখ বেদনা এই নিবন্ধের সংক্ষিপ্ত নিবন্ধে লেখে শেষ করার নয়। জানা যায় আমার বাড়ীর পাশের গ্রামের জনৈক শিক্ষক প্রার্থী কিশোরগঞ্জে প্রাইমারী স্কুল শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করে বাড়িতে ফিরে যখন জানতে পারে প্রশ্ন ফাঁস হয়ে গেছে তখন মনের দুঃখ, কষ্ট ও বেদনায় নাকি আত্মহত্যা করতে চেয়েছিল। এমন ঘটনা অহরহ ঘটলে এসব ঘটনার কতটাই প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ায় আসে এবং কজনাই বা খবর রাখে। তাই সিনেমার ডায়ালগটিকে টেনে এনে আবারও বলতে ইচ্ছে হচ্ছে “হায়রা কপাল মন্দ চোখ থাকিতে অন্ধ”। কবি নজরুলের কবিতার একটি পংক্তি উল্লেখ করে বলতে হচ্ছে, ‘একদা দেখিনু রেলে কুলি বলে এক সাব ফেলে দিল তারে, চোখ ফেটে এল জল, এমনি করিয়া জগৎ জুড়িয়া মার খাবে দুর্বল।’ এমনিভাবে হতভাগা চাকরি প্রার্থীদের জন্য আমার মতো অনেকেই দুকথা লেখেই প্রশান্তি। যারা এখনও মনে করে ধান গাছ দিয়ে তক্তা হয়, তাদের পক্ষে পত্রিকার এ লেখা পড়ার সময়ই বা কোথায় ? যদি এসবের মূল্যায়ন হতো তবে হয়তোবা দেশের সমস্যা, দুর্নীতি ও অভাজনদের কম করে হলেও সমস্যার সমাধান হতে পারত। যাক, অনেকের মতো দেশজাতি ও জন সমস্যার সমাধান কল্পে লেখছি এবং লিখে যাব। তবে কারও প্রতি রাগ, অনুরাগ ও বিরাগ নহে এসব কিছু একান্তই অভিমত।
এদেশের ভূক্তভোগী জনগণ কোনো অবস্থাতেই আর তেলবাজি, চামচা, চাটুকারীতা, বড় বড় কথার ফুলঝুড়ি, ভাঙ্গা ঢোলের অসহনীয় বেটকা আওয়াজ, কোনো নিয়োগ বদলী ও পদোন্নতিতে যেমনি সমন্বয়হীনতা, তদবীর সুপারিশ, ডিও লেটার ও অভার টেলিফোনে নির্দেশনা দেখতে চায়না তেমনি রাতারাতি কারও আলীশান নামীদামী গাড়ীবাড়ী, সম্পদের পাহাড়, মানি লন্ডারিং, শেয়ার বাজার কেলেংকারী, ভেজাল, নকল, প্রতারণা, ক্ষমতার অপব্যবহার এবং জিরো থেকে হিরো আর দেখতে চায় না। যেভাবে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, দুদক চেয়ারম্যান হাইকোর্ট ও সুপ্রীম কোর্টের বিচারপতিগণ বিভিন্ন দুর্নীতি ও পণ্যে ভেজাল ও অনিয়মের বিরুদ্ধে যেমনিভাবে সোচ্ছার হয়েছেন এমনিভাবে শাসন, প্রশাসন ও নির্বাহী বিভাগের দায়িত্বশীলদের কাছ থেকে দেশের মানুষ এমনই আশা করে থাকে।
এছাড়া প্রজাতন্ত্রের জনগণ যাতে সরকার ও রাষ্ট্রের কাছ থেকে যথাযথ সেবা পায় এবং ব্রিটিশ ও পাকিস্তানি আমলের মতো শোষন, নির্যাতন, আস্ফালন ও রক্তচক্ষুর হাত থেকে মুক্তি পেয়ে অফিস আদালতসহ সর্বত্র ন্যায় বিচারের সুযোগ লাভ করে, প্রজাতন্ত্রের মালিক হিসেবে সম্মান ও মর্যাদা পেয়ে থাকে ইহাই যেমন জনপ্রত্যাশা তেমনি গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার (এড়াবৎহসবহঃ ড়ভ ঃযব চবড়ঢ়ষবং জবঢ়ঁনষরপ ড়ভ ইধহমষধফবংয) পংক্তিটির মূল্যায়ন অমূলক কিছু নয়। কারণ সাংবিধানিকভাবে দেশের জনগণই সকল ক্ষমতার উৎস। পরিশেষে বলব, তেলবাজি, চাটুকারিতা, আমলাতান্ত্রিক জটিলতা, বড় বড় কথা ও ভাঙ্গা ঢোলের বেটকা আওয়াজ আর নয়। তদোপরি ব্রিটিশের শোষন ও পাকিস্তানের দীর্ঘদিনের শোষন, নির্যাতনের ইতিহাসের সাথে কোনোভাবেই স্বাধীন দেশের ইতিহাস যাতে সংযুক্ত না হয়ে শাসন, প্রশাসন, আইন, বিচারসহ সর্বক্ষেত্রে ন্যায়, নিষ্ঠা ও আদর্শের পথযাত্রাই যেমন দেখার বিষয় তেমনি জনগণের শান্তি, স্বস্থি, নিরাপত্তা এবং দুর্নীতিমুক্ত দেশ গঠনে সরকারের বাস্তবমুখী নির্দেশনা ও পদক্ষেপই বাঞ্চনীয়।
এ.কে.এম শামছুল হক রেনু
লেখক কলামিষ্ট