তিনটি জিনিস কারো জন্য অপেক্ষা করে না তা হলো : সময়, সুযোগ, সমুদ্র ও স্রোত। মানুষের জীবনের সোনালী অধ্যায় হলো তারুন্যের সময় সীমা। শৈশব, কৈশোর, যৌবন ও বার্ধক্য সাধারনত এই চারটি পর্ব নিয়ে মানুষের জীবন র্নিমিত হয়। একজন মানুষকে সুশিক্ষায় শিক্ষিত ও মানুষের মতো মানুষ গড়তে সব চেয়ে সহজ ও মধুময় সময় শিশুকাল বা শৈশবকাল। আর বাবা-মা আকাশ ছোঁয়া সপ্ন দেখে শিশুটিকে নিয়ে শিশুকালেই। বাবা-মার বুকের ধন কলিজার এক টুকরো মাংস আজকের শিশু বড় হয়ে দেশ ও জাতির কল্যাণেকাজ করবে। তাই প্রতিটি পরিবারের প্রত্যেক বাবা মার কাছে শিশুরা সব চাইতে মূল্যবান। আবার অনেকে বলেন, আদর, স্নেহ ভালোবাসার নামই শিশু। অনেক গুনিজন লেখেছেন, শিশু বলতে চোখের সামনে ভেসে উঠবে ম্ায়াবী চাহনী, শিশুতোষ হাসি, আর আদর সোহাগ প্ওায়ার জন্য ব্যাকুল এমন কেউ যাকে নিয়ে সপ্ন দেখা যায়। সন্তানের হাসির কাছে সব কিছু ম্লান হয়ে যায়। উচ্চবিত্ত, মধ্যবিত্ত, নিন্মবিত্ত সমাজের যে কোন পরিবার নিজের সাধ্য মতো চেষ্টা করে সন্তানকে রাগলে রাখতে। এ্টাই বাবা-মার ভালোবাসা এমনটাই প্রত্যেক শিশুর মৌলিক অধিকার। কিন্তু এসব শিশুর একটি বিশাল অংশ যদি হয় দিগম্বর, অপুষ্টিতে কাতর, ফটপাতে যার ঠিকানা এবং কচি দুটি হাত কাজে মগ্ন তাকে নিয়ে কি সপ্ন দেখা যায় ? কারণ এরা পিতৃমাতৃহীন শিশু শ্রমিক বা পথশিশু। এসব শিশুশ্রমিক বা পথশিশু এতোটাই হতভাগা যে তাদের আদর-¯েœহ, ভালোবাসা দিয়ে মুরিয়ে রাখার মতো কেউ নেই তাদের পাশে। বাংলাদেশে প্রায় কত জন শিশু শ্রমিক আছে তার সঠিক হিসাব আমাদের জানা নেই। অথচ অনেক আগেই মহা মানবরা বলে গেছেন, সমাজ ও বৈশি^ক পরির্বতনে নতুনের ভুমিকা অনিস্বীকার্য পরির্বতনই শুধু নয় ক্রমাগত উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির পথ ও এগিয়ে নিয়ে যায় নতুনরাই বা তরুনরা। নতুনের আগমন হঠাৎ করে আসেনা,আজকের শিশুরা একটু একটু করে এগিয়ে যায় তরুণ্যেরে দিকে। আজকের শিশু মানেই আগামীর সম্ভাবনাময় তরুন। শৈশবের উজ্জ্বল স্মৃতি প্রত্যেক মানুষের র্নিমল আনন্দের উৎস। অনেক বলেন বা আমরা জানি যে কোন স্থাপনার ভিত্তি যত মজবুত হয় সেটি তত দূঢ় হয়। তাই বলা যায়, সমৃদ্ধ ভবিষ্যৎ বিনিমানের ভিত্তি দেশের শিশুরাই। শিশুরা জাতির ভবিষ্যৎ যতই স্লোগান দ্ওেয়া হক না কেন এই বিপুল সংখ্যক শিশু শ্রমিকের কাছে জাঁতি ভালো কিছু আশা করতে পারে না। বেঁচে থাকার প্রয়োজনে তারা কি কাজই না করছে, কেউ ঘরের ভিতরে, কেউ রাতের আধারে, কেউ রোদ বৃষ্টি মাথার নিয়ে, কেউ অহরহ নির্যাতন সহ্য করে জীবন পাত করছে। সবচেয়ে দু:খের বিষয় একদিকে যেমন এদের সংখ্যা বাড়ছে অন্যদিকে যতই পরিশ্রম করুক না কেন তাদের জীবন মান উন্নয়ন হচ্ছে না। এটা দেশ ও জাতির জন্য সত্যি লজ্জা জনক ও কষ্ট দায়ক। দেশে সরকার আসে, সরকার যায়, শিশুশ্রমিক ও পথশিশু তথা তাদের দু:খ কষ্ট রইয়েই যায়। তবে হ্যা,ঁ আমরা নতুন নতুন উক্তি শিখতে পারি রাজনৈতিক নেতা ও নেত্রীদের কাছ থেকে এই ভাবে কি চলতে থাকবে আমাদের দেশ ও শিশু শ্রমিকদের এইা সমস্যা গুলো ? বাংলাদেশে কতজন শিশু শ্রমিক আছে তার সঠিক হিসাব আমরা জানিনা। কৃষি ক্ষেত্রে এই সকল শিশুরা বেশি সময় দেয়। এদের সময়ের মূল্য কেউ বিবেচনা করেনা। মাঠে কিংবা উঠোনে এরা নিরন্তর কাজ করে চলছে। তবে গ্রামের চেয়ে শহরের শিশুশ্রমিকদের অবস্থা আরো ভয়াবহ। কেননা যে সকল শিশু শ্রমিক শহরে কাজ করে তারা অনেক বিপদজ্জনক ও ঝুকিপূর্ন কাজের সাথে যুক্ত। যে সকল কাজকে শিশুদের জন্য বিপদজ্জনক ঝুকিপূন মনে করা হয় তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য: খনি বা মাটির নিচের কাজ, দ্র্রুত ঘৃর্নায়নমান, যন্ত্র পাতি নির্মান, শিল্প ক্ষেত্রে গ্যাস ও বিদ্যুৎ ব্যবহার, প্রচন্ড আলোয় কাজ করা, ঢ্যানারী, ইটভাটা ,বেডিং ও গার্মেন্টস শিল্প,স্ইুপার,সমিল,ফোরমের কারখানা, প্লাষ্টিকস ও রাবার কারখানা,ষ্টেইনলেস স্টীল মিল,লবন কারখানা, বিড়ি কারখানা, প্রচন্ড শব্দের মধ্যে কাজ করা, বা আলোই কাজ করা, গ্লাস ফ্যাক্টরী, প্রিন্টিং প্রেস, অটে মোবাইল ওয়ার্কসপ, পরিবহন, বিনোদন,দুর সমূদ্রে মাছ ধরা, এলকোহল কারখানায় কাজ করা, প্রযপ্ত বিশুদ্ধ বাতাশ হীন বন্ধ ঘরে কাজ করা ইত্যাদি। এইসব কাজ করতে গিয়ে শিশুশ্রমিকরা পড়া-লেখার বা বিনোদনের সুযোগ পাচ্ছে না ,বরং রোগক্লীষ্ট, দূর্বল এক নাগরিক দেশের জন্য ভবিষ্যতের বোঝা হয়ে দাড়াচ্ছে। এ সকল কাজের মাধ্যমে শিশু শ্রমিকদের মধ্যে নানান ধরনের রোগের জম্ম দিচ্ছে। মারত্মক পীড়ার মধ্যে দেখা যায়, জন্ডিস, রক্ত শূন্য তা, চোখের রোগ, পেপটিক আলর্সার, চর্ম রোগ, সর্দি-কাশি, কফ- শাসকষ্ট,জ¦র, মাথাব্যথা পেটের পিড়া উল্লেখযোগ্য। এ ছাড়া রইছে দূঘটনা অংগহানী বা স্থায়ী পঙ্গুত্ব। ফলে সামাজিক, মানসিক বিকাশ, বাধা গ্রস্ত হচ্ছে, শিশু তার যে অধিকার তা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। এরা অভাবের তাড়নায় জড়িয়ে পড়ছে অপরাধ জগতে, মাদকের জগতে, এমনকী রাজনৈতিক সহিংসতায় এরাই প্রধান সেনা। গাড়ীতে আগুন দেওয়া,বোমা মারা ,যানবহন ভঙ্গচুর করা ইত্যাদি কাজ গুলো রাজনৈতির নেতারা পথ শিশু দের দ¦ারাই সংঘটিত করে থাকে। কোনে শিশু পৃথিবীতে অপরাধী হয়ে আসে না। সমাজ তাদের অপরাধী বানায় বা তৈরী করে। তাছাড়া আমরা জানি শিশুরা ঠিক মাঠির মতো তাদের যে পাত্রে রাখা যাবে তাড়া তেমন রুপই ধারন করবে। এও জানি যে জাঁতি শিশুদের প্রতি মনোযোগী নয় সে জাঁতি কোনো দিন উন্নতি হতে পারেনা। আবার এটাও ঠিক ,যে দেশে পরিত্যক্ত ডাষ্টবিন থেকে শিশুরা খাবার তুলে নেয় বা সেখান থেকে উর্পাজনের উৎস খুজে, সেখানে শিশুশ্রম রোধ করা খুব সহজ নয়। তাই শিশুর পরির্পূন বিকাশে জাতীয় সমৃদ্ধি নির্ভশীল শিক্ষার ব্যপারে শুধু সরকারী কার্যক্রম নয় আমাদের প্রত্যেককেই নিজ নিজ অবস্থান থেকে সচেতনতা অবলম্বন করতে হবে। পথশিশু বা শিশু শ্রমিকদের অধিকার সর্ম্পকে সচেতন করে তুলতে হবে। উপযুক্ত শিক্ষা প্রদানের মাধ্যমে তারা যেন আত্ম নির্ভশীল মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে পারে সে ব্যপারে শিক্ষা আমাদের সচেতনতা অবলম্বন করতে হবে। শিক্ষার যথার্থ অনুৃশীলন করার সুযোগ সৃষ্টি করতে হবে। সমাজে ধনী গরিবের মধ্যে সু-সর্ম্পক তৈরী করতে হবে। সমাজে অনেক বিত্তবান মানুষ শিশু শ্রমিক বা পথশিশুদের ঘৃর্ণার চোখে দেখে, এ ব্যাপারে সচেতন হতে হবে। সচেতন থাকতে হবে সাবাইকে, সামাজিক,রাজনৈতিক,অর্থনৈতিক কারণে এরা যেন অল্প বয়সে হাড়িয়ে না যায়। অবশেষে বলতে চাই, সমৃদ্ধি দেশ গড়ার স্বার্থে শিশুশ্রম বন্ধ করতে হবে, মানবতার বিকাশ ও জাতির বৃহত্তম স্বার্থে শিশুশ্রমিক ও পথশিশুদের পূর্নবাসন ও শিক্ষা আবশ্যক।