দ্রুত দখল হয়ে যাচ্ছে সুন্দরবন উপকূলীয় খুলনা জেলার পাইকগাছা, দাকোপ এবং কয়রা উপজেলার মাঝে অবস্থিত শিবসা নদী। নব্যতা হ্রাসে শিবসার জেগে ওঠা চর দখলে উপজেলার সোলাদানা এলাকায় রীতিমত শুরু হয়েছে প্রতিযোগীতা। স্থানীয় প্রভাবশালী ভূমি দস্যুরা যে যার মত গিলে খাচ্ছে শিবসার অংশ বিশেষ। সারা দেশের নদীর দখল ও দূষণ ঠেকাতে সরকার যে মূহুর্তে অভিযান শুরু করেছে, ঠিক সেই মূহুর্তে শিবসা নদী দখল প্রক্রিয়াকে ভাল চোখে দেখছেন না শান্তিপ্রিয় শান্ত জনপদের সাধারণ মানুষের পাশাপাশি পরিবেশবিদরা। তারা দখল ঠেকাতে সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
জানা যায়, শিবসা নদী বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের খুলনা জেলার একটি নদী। নদীটির দৈর্ঘ্য ৮৫ কিলোমিটার, গড় প্রস্থ ১৫১০ মিটার এবং নদীটির প্রকৃতি সর্পিলাকার। বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড বা কর্তৃক শিবসা নদীর প্রদত্ত পরিচিতি নম্বর দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের নদী নং ৮৮। নদীটি উপজেলার লস্কর ইউনিয়ন এলাকায় প্রবহমান কপোতাক্ষ নদ হতে উৎপত্তি লাভ করেছে। অতঃপর এই নদীর জলধারা একই জেলার দাকোপ উপজেলার খুলনা রেঞ্জ ইউনিয়ন এলাকায় প্রবহমান পশুর নদীতে নিপতিত হয়েছে। গত কয়েক বছর আগেও নদীতে সারাবছর পানি প্রবাহ পরিদৃষ্ট হয় এবং ছোটবড় নৌযান চলাচল করতো। জোয়ার ভাটার প্রভাবে প্রভাবিত হতো। এই নদীর অধিকাংশ অংশ উপকূলীয় বনভূমি সুন্দরবনের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত। এ নদীর কিছু অংশ বাংলাদেশ-ভারত প্রটোকল রুটের অন্তর্গত। বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ কর্তৃক দ্বিতীয় শ্রেণির নৌপথ হিসেবে স্বীকৃত। সুন্দরবন উপকূলীয় শিবসা নদীর মৃত্যু হলে কপোতাক্ষ নদসহ সংযুক্ত কয়েকটি নদীর পানির প্রবাহ বন্ধ হয়ে যাবে। এতে করে বর্ষা মৌসুমে বৃষ্টির পানিতে আটকে উপকূলীয় যশোর, সাতক্ষীর ও খুলনা জেলার কয়েক লক্ষ মানুষ কৃত্রিম বন্যায় প্লাবিত হতে পারে।
স্থানীয়দের অভিমত, আগামীতে বৃষ্টির পানি নিষ্কাশিত হতে না পেরে পানিবন্দী হতে পারেন তারা। ইতোমধ্যে সরকার উন্নয়নের ধারাবাহিকতায় ২৬২ কোটি টাকা ব্যয়ে কপোতাক্ষ নদ খনন বাস্তবায়ন করছে। শুরু হয়েছে সালতা নদী খনন। এর পরি প্রেক্ষিতে বিভিন্ন নদীর দখল ও দূষণ ঠেকাতে অভিযানও চলছে সমান গতিতে। এমন পরিস্থিতিতে প্রকাশ্য দিবালোকে চরে বাঁধ দিয়ে যে যার মত দখল নিচ্ছে।
স্থানীয় সোলাদানা ইউপি চেয়ারম্যান এস এম এনামুল হক জানান, কারা এবং কি উদ্দেশ্যে শিবসা নদীর চর দখল করছে তা তার জানা নেই।
সোলদানা ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা মনিরুজ্জামান হাওলাদারের প্রতিক্রিয়া জানতে তার ব্যবহৃত মোবাইলে একাধিকবার ফোন দিলেও ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।