জমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে সবার বড় বৃদ্ধ ভাইকে মানুষের সামনেই বুকে পিঠে কিল ঘুষি মেরে, সঙ্গে থাকা দলিল ছিড়ে, সবার সামনে অপমান করলেন সৎ ভাই আঃ কুদ্দুছ (৪৫)। হতভাগা বড় ভাই মোঃ ওমর আলী (৭০) বাড়ী শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার পোড়াগাঁও ইউনিয়নের সমশ্চুড়া গ্রামে। ঘটনাটি ঘটেছে গত ১৬ এপ্রিল মঙ্গলবার বিকালে সমশ্চুড়া বাজারে। এ ঘটনায় থানায় অভিযোগ দায়ের করেছে বৃদ্ধ ওমর আল্।ী
অভিযোগ পত্র, এলাকাবাসী ও পুলিশ সূত্রে, গত ১৬ এপ্রিল বৃদ্ধ ওমর আলী উপজেলার নয়াবিল বাজার থেকে কাজ সেরে সমশ্চুড়া বাজারে আসা মাত্রই পূর্বপরিকল্পিত ভাবে সৎ ভাই আঃ কুদ্দছ পিছন থেকে ওমর আলীর হাতে থাকা ব্যাগ কেড়ে নেয়। ব্যাগে থাকা ধান বিক্রির নগদ ৩৫ হাজার টাকা নিয়ে নেয় ও জমির দলিল সবার সামনে কামড়ে ছিড়ে ফেলে। দলিল ছেড়ার পর বৃদ্ধ বড় ভাইকে অনেক মানুষের সামনেই বুকে পিঠে কিল ঘুষি মারতে থাকে ও অপমান করে। এ সময় কেউ এগিয়ে না আসলেও দূর হতে তাদের এই মর্মাহত ঘটনা দেখে সমশ্চুড়া স্কুলের মাষ্টার মোঃ সেলিম মিয়া এগিয়ে আসেন। পরে বৃদ্ধ ওমর আলীর কে সেখান তুলে বাড়ীতে পাঠিয়ে দেন। পরে ১৮ এপ্রিল সকাল বেলা পূর্বের ঘটনায় পূনরায় সৎ ভাই আঃ কুদ্দুছ ও তার ভাই আঃ সহিদ বৃদ্ধ ওমর আলীর বাড়ীতে এসে হামলা চালায়। দায়ের কোপে ওমর আলীর ডান পায়ের সামনে ক্ষত হয়ে যায় এবং বুকে পিঠেও আঘাত করায় রক্তাক্ত বৃদ্ধ ওমর আলী মাটিতে পড়ে যায়। একই সাথে এমএ পড়ায়া ভাতিজা আনোয়ার হোসেনের (২৭) কে মাথায় আঘাত করলে সেও রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে পড়ে যায় এবং একই সময় ভাই জহুর আলীও মারাত্বক আহত হয়। পরে গুরুত্বর আহত বৃদ্ধ ওমর আলী ও ভাতিজা আনোয়ার হোসেনের অবস্থা বেগতিক হলে ও সাথে থাকা ভাইসহ ৩ জনকে নালিতাবাড়ী হাসপাতালে ভর্তি করা হয় বলে জানা গেছে। উল্লেখ্য অভিযোগ পত্রে, গত ১৪ এপ্রিল মোঃ ওমর আলী বাদী হয়ে এই জমির বিষয়ে বিবাদী আঃ কুদ্দ্ছ ও ভাই সহিদ আলীর বিরোদ্ধে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্টেট আদালত, কর্তৃক শেরপুর এ ফৌঃ কাঃ বিঃ ১৪৪ ধারা জারি করা রয়েছে। অথচ এই আইনও লংঘন করে সৎ ভাই আঃ কুদ্দুছ গং জমির আইল বাতুর কেটে ফেলেছে বলে জানানো হয়।
এব্যাপারে বৃদ্ধ ওমর আলী বলেন, আমি বৃদ্ধ মানুষ। শেষ সময়ে আমি এখন চলে যাওয়ার যাত্রী। জমি সংক্রান্ত কাগজপত্র যা আছে এবং তাদের কাছে কি আছে এগুলি নিয়ে যদি তারা আমাকে নিয়ে সামাজিক ভাবে বসার চিন্তা করতো তাহলে তো এ সমস্যার সমাধান হয়ে যেত। অথচ তা না করে আমাকে তারা আমার বাড়ীতে এসে যে ভাবে মারল, অপমান করল এবং টাকা পয়সা নিয়ে নিল এই শেষ বয়সে এই অপমান আমি কি দিয়ে শেষ করবো। এদিকে তাদের বাধার কারণে আমার স্কীমের ৩ একর জমি আবাদ করতে দেয়নি। এবার এগুলি পতিত হয়ে গেল কোন ফসল হল না। আমি একজন কৃষক মানুষ এই দিয়ে আমার সংসার। এখন আবাদ করতে পারলাম না কি দিয়ে যে চলবো ভেবে উঠতে পারছি না। এখন আবার ধান আবাদের সৃজন এসে গেল অথচ তারা আমাকে আমার জমিতে যেতে দিচ্ছে না। বার বার তারা আমাকে বাধা দিতেছে-মারতেছে। আমি সবার কাছে এই বিচার প্রার্থনা করছি।
নালিতাবাড়ী থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ আবুল খায়ের বলেন, আমি ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম। তাদের জমি সংক্রান্ত পারিবারিক ঘটনা। এ বিষয়ে তাদের ডেকে ঘটনা শুনানী করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।