গত ১৪ এপ্রিল এবং১লা বৈশাখ বাংলা নব বর্ষের রাতে নৃশংস হত্যাকান্ডের শিকার বগুড়া সদর থানা বিএনপির সাধারন সম্পাদক ও আইনজীবী মাহবুব আলম শাহীন হত্যা মামলার প্রধান আসামি ও জেলা মোটর মালিক গ্রুপের সাধারন সম্পাদক এবং বগুড়া পৌর সভার ২নং প্যানেল মেয়র আমিনূল ইসলামকে ৫দিনের পুলিশী হেফাজতে দিয়েছেন বিজ্ঞ আদালত।
গত মঙ্গলবার ওই হত্যা মামলার এজাহার ভুক্ত ১নং আসামি আমিনুল ইসলামকে রাজধানী ঢাকার মতিঝিল এলাকা থেকে গ্রেফতার করে বগুড়া জেলা পুলিশের একটি বিশেষ টিম। পরে বুধবার সকালে তাকে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থায় বগুড়ার সিনিয়র জ্যুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালত-৩ এর বিচাররক মুহা বেলাল হোসেনের আদালতে হাজির করে ৭ দিনের রিমান্ড চায় মামলার তদন্তকারী পুলিশ কর্মকর্তা ইন্সপেক্টর আম্বার হোসেন।পরে পুলিশের আবেদনের শুনানি অন্তে বিজ্ঞ আদালত আমিনুলের ৫দিনের পুলিশী রিমান্ড মন্জুর করেন।
এদিনে গতকাল গ্রেপ্তারকৃত বগুড়া মোটর মালিক গ্রুপের সেক্রেটারি ও বগুড়া পৌরসভার ওয়ার্ড কাউন্সিলর আমিনুল ইসলামকে আদালতের এজলাশে হাজীর করার পর তার পক্ষে কোন আইনজীবী দাঁড়াননি কিংবা তার পক্ষে জামিনের প্রার্থনাও করা হয়নি। আইনজীবী হত্যার প্রতিবাদে সর্বসম্মতি ক্রমে বগুড়া বারের কোন আইনজীবী সহায়তা দেয়া হবে না মর্মে কোন আইনজীবী আসামীর পক্ষে দেখা যায়নি।
এদিকে নিজের পক্ষে কোন আইনজীবী না থাকায় আদালতের কাঠগড়ায় দাঁড়ানো হত্যা মামলার ১নং আসামি আমিনুল ইসলামকে নিজের পক্ষে আত্ব পক্ষ সমর্থন করতে হয়। এ সময় বিজ্ঞ বিচারকের প্রশ্নের জবাবে আসামি নিজেকে নির্দোশ দাবী করে বলেন, তাকে পরিকল্পিত ভাবে ষড়যন্ত্র মূলক এ মামলায় ফাঁসানো হয়েছে।এসময় আসামীর কঠোর বিরোধীতা করে মামলার তদন্তকারী পুলিশ কর্মকর্তা ও উপশহর ফাঁড়ীর ইনচার্জ ইন্সপেক্টর আম্বার হোসেন বিএনপি নেতা অ্যাডভোকেট শাহীন হত্যার পক্ষে তার সংশ্লিষ্টতা তুলে ধরেন বক্তব্য উপস্থাপন করেন। তদন্তকারী পুলিশের এই কর্মকর্তা ইন্সপেক্টর আম্বর হোসেন এ সময় আদালকে আরো জানান ,এনিয়ে এই মামলায় মোট ৩জন গ্রেফতার হয়েছে। গ্রেফতারকৃত অপর দুই আসামি পায়েল ও রাসেল ইতোমধ্যেই আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দী দিয়েছে।তারা এ হত্যাঘটনায় বগুড়া সদর থানা বিএনপির সাধারন সম্পাদক ও আইনজীবী মাহবুব আলম শাহীন হত্যা মামলার প্রধান আসামি ও জেলা মোটর মালিক গ্রুপের সাধারন সম্পাদক এবং বগুড়া পৌর সভার ২নং প্যানেল মেয়র আমিনূল ইসলামকে হত্যাকান্ডের মাষ্টার মাইড হিসাবে উল্লেখ করেছে। দীর্ঘ শুনানি অন্তে বিজ্ঞ আদালত পুলিশের ৭দিনের রিমান্ড আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ৫দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেণ।
উল্লেখ্য, গত ১৪ এপ্রিল বাংলা নব বর্ষের রাতে শহরের উপশহর এলাকায় আমিনূল ইসলামের নির্দেশে বগুড়া সদর থানা বিএনপির সাধারন সম্পাদক ও আইনজীবী মাহবুব আলম শাহীনকে নৃশংস ভাবে কুপিয়ে এবং ছুরিকাঘাতে হত্যা করে একটি খুনি ক্যাডার বাহিনী। ওই ঘটনায় নিহতের স্ত্রী বাদী হয়ে সদর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেণ। ওই এজাহারে আমিনূল ইসলামকে ১নং আসামি করা হয়।
এদিকে ওই ঘটনার পর পরই আসামি সনাক্তে অভিযানে নামে জেলা পুলিশের একাধিক টিম। পুলিশী অভিযানে গ্রেপ্তার করা হয় হত্যাকন্ডে সরাসরি অংশ নেয়া ২খুনি পায়েল ও রাশেলকে গ্রেপ্তারে সক্ষম হয় পুলিশ। পরে তাদের স্বীকারোক্তি মূলক জবান বন্দির পর পুলিশ হত্যাকান্ডের পরিকল্পনা সমর্কে একটা ধারনা পায়। বগুড়া জেলা মোটর মালিক গ্রুপের আধিপত্য ও দীর্ঘ দিনের বিবাদকে কেন্দ্র করে পরিবহন ব্যবসায়ী ,বিএনপি নেতা ও অ্যাডভোকেট শাহীনকে হত্যার পরিকল্পনা করা হয়। এই হত্যাকান্ডে কমপক্ষে ১০জন কিলার অংশগ্রহণ করে। পুলিশের অব্যাহত অভিযানে অবশেষে গ্রেপ্তার করা হল বিএনপি নেতা শাহীন হত্যা মামলার মাষ্টার মাইন্ড আমিনূল ইসলামকে।