ময়মনসিংহের গৌরীপুর রামগোপালপুর বাসষ্ট্যান্ড এলাকায় স্থানীয় খোকন মিয়া (৩০) নামে এক ব্যবসায়ীকে ইয়াবা দিয়ে ফাঁসানোর চেষ্টা ও মারধরের অভিযোগে গৌরীপুর থানার চার এএসআই ও এক পুলিশ কনস্টেবলকে ক্লোজড করা হয়েছে। তারা হলেন গৌরীপুর থানার এএসআই আবদুল আউয়াল, রুহুল আমিন, আনোয়ার হোসেন, কামরুল ও কনস্টেবল আল আমিন। সোমবার (২৯ এপ্রিল) বিকেলে সাংবাদিকদের এ বিষয়ে নিশ্চিত করেন ময়মনসিংহের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) জয়িতা শিল্পী।
স্থানীয় লোকজন জানান, বলুহা গ্রামের আবদুল কদ্দুছের ছেলে বর্ষা টেলিকমের মালিক খোকন মিয়া (৩০) ইয়াবা বিক্রি করেন, এমন তথ্যের অভিযোগে রবিবার রাত ১০ টার দিকে রামগোপালপুর বাসস্ট্যান্ড এলাকায় তার দোকানে গৌরীপুর থানার এএসআই আবদুল আউয়াল, রুহুল আমিন, আনোয়ার হোসেন, কামরুল ও কনস্টেবল আল আমিন সিভিল ড্রেসে তল্লাশি শুরু করে ইয়াবার একটি পুটলি খুঁজে পান। এ ইয়াবার পুঁটলি তার নয় দাবি করে তাৎক্ষণিক খোকন এ ঘটনার প্রতিবাদ করলে উপস্থিত লোকজনের সামনে তাকে মারধর করেন পুলিশ সদস্যরা। একজন ভাল মানুষকে মাদকদ্রব্য দিয়ে ফাঁসানোর চেষ্টা ও মারধরের ঘটনায় ক্ষুব্দ জনগন তখন পুলিশদের ঘেরাও করে বিক্ষোভ শুরু করেন। এ সময় এসআই রহুল আমিন ও কামরুল পালিয়ে গেলেও বাকি ৩ পুলিশ সদস্যকে স্থানীয় অটো টেম্পু মালিক সমিতির ঘরে অবরুদ্ধ করেন রাখেন জনতা। এ ঘটনার প্রতিবাদে ওইদিন রাত সাড়ে ১০ টা থেকে ২টা পর্যন্ত ময়মনসিংহ-কিশোরগঞ্জ সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন জনগন। পরে রাত আড়াইটার দিকে এ ঘটনার সুষ্ঠ বিচারের আশ্বাস দিয়ে ঘটনাস্থল থেকে জনতার হাতে অবরুদ্ধ হওয়া ৩ পুলিশ সদস্যকে উদ্ধার করেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (গৌরীপুর সার্কেল) সাখের হোসেন সিদ্দিকীসহ অন্যান্য পুলিশ কর্মকর্তারা।
বর্ষা টেলিকমের মালিক খোকন মিয়া বলেন, ঘটনারদিন রাত ১০ টার দিকে উল্লিখিত ৫ জন পুলিশ আসেন তার দোকানে মোবাইলে টাকা লোড করতে। এ সময় একজন তাকে বলেন সাইড দাও আমরা তোমার দোকান তল্লাশি করব। একপর্যায়ে তারা তল্লাশির নামে দোকানের সিসি ক্যামেরার চার্জার খুলে ফেলেন। তিনি তখন সিসি ক্যামেরা ওপেন করে তল্লাশির জন্য পুলিশদের অনুরোধ করেন। তার অনুরোধ না রেখেই পুলিশ দোকানে তল্লাশি শুরু করেন। তল্লাশিকালে এক পুলিশ দোকানের সামনে কাউন্টারে রাখা ইলেকট্রনিক তারের কয়েলের ভেতর থেকে প্লাস্টিকে মুড়ানো ইয়াবা বের করে এনে খোকনের হাতে হাতকড়া পড়ান। এ সাজানো নাটকের প্রতিবাদ করায় পুলিশ তাকে মারধর করেন।
খোকন নিজেকে নির্দোষ দাবি করে সাংবাদিকদের জানান, উল্লিখিত পুলিশ সদস্যরা নিজেরাই তার দোকানে ইয়াবা রেখে তাকে ফাঁসানোর চেষ্টা করেছিল। তিনি এ ঘটনার সুষ্ঠ বিচার দাবি করেন।
এএসআই আনোয়ার হোসেন সাংবাদিকদের জানান, ফ্লেক্সিলোড ব্যবসার পাশাপাশি ইয়াবা বিক্রি করার খবরে তারা খোকনের দোকানে তল¬াশি করেন। তল্লাশিকালে তার দোকানে একটি পুটলির মধ্যে ইয়াবা পাওয়া যায়। কিন্তু স্থানীয়রা খোকনকে ভালো লোক দাবি করে তাদের অবরুদ্ধ করে বিক্ষোভ শুরু করেন।
এ ঘটনায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (গৌরীপুর সার্কেল) সাখের হোসেন সিদ্দিকী জানান, ঘটনার তদন্ত চলছে। তদন্ত শেষে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন হবে।