নৃত্য শিল্পীদের চোখ ধাঁধিয়ে দেয়া তাল লয় আর নূপুরের ছন্দে সত্যিই মঞ্চ যে কাব্যময় হয়ে ওঠে তা প্রমাণ হল সোমবার সন্ধ্যায়। গ্রীষ্মের প্রচন্ড গরমে যখন জীবন ওষ্ঠাগত তখন যশোর টাউন হল মাঠে আসা প্রতিটি নৃত্যপ্রেমীর হৃদয় যেন অদৃশ্য কুয়াশার হীম শীতল পরশের সাথে মোহনীয় বৃষ্টির ধারা সবই উপভোগ করেছে নৃত্যের ছন্দে। এ সুযোগ করে দিয়েছে যশোর জেলা শিল্পকলা একাডেমি এবং নৃত্য শিল্পী সংস্থা। আন্তর্জাতিক নৃত্য দিবস উপলক্ষে যৌথ আয়োজনে সংস্থা দুটি এ আয়োজন করে।
‘আমার নূপুরের ধ্বণি ছঁড়াক মানবতার বাণী’ এ প্রতিপাদ্যে আনন্দ শোভাযাত্রা, সংক্ষিপ্ত আলোচনা এবং বর্ণাঢ্য নৃত্যানুষ্ঠানের মাধ্যমে দিবসটি উদযাপিত হয়। বিকেলে টাউন হল ময়দানে শোভাযাত্রা ও সংক্ষিপ্ত আলোচনা শেষে হয় নৃত্যানুষ্ঠান। জেলা শিল্পকলা একাডেমির সাধারন সম্পাদক অ্যাডভোকেট মাহমুদ হসান বুলু, সহ সভাপতি অধ্যাপক জাহাঙ্গীর আলম, নৃত্য বিতানের পরিচালক জন সঞ্জিব চক্রবর্তী, জেলা নৃত্য শিল্পী সংস্থার সাধারণ সম্পাদক আরিফুল হক এবং শিল্পকলার যুগ্ম সম্পাদক রওশন আরা রাসু আলোচনায় অংশ নেন।
আয়োজন নিয়ে বক্তা এবং দর্শকরা বলেন, নৃত্য একটি আদি শিল্প। এক কথায় মনের অভিব্যক্তিগুলোকে অঙ্গভঙ্গির মাধ্যমে তুলে ধরাই নৃত্য। যা প্রেমের, প্রতিরোধের, প্রতিবাদেরও মাধ্যম। অভিনয় ও শারীরিক কসরতে অঙ্গভঙ্গি প্রদর্শনের মাধ্যমে নৃত্যের বিশেষ ঐতিহ্য ও ধারাবাহিকতা রয়েছে। দিনে দিনে নৃত্যের ধারা ও ঐতিহ্য বিচ্যুতি ঘটছে। সুষ্ঠু ও সুন্দর ধারার নৃত্যের মান বজায় রাখতে সকলকে সচেষ্ট হতে হবে। তবেই নৃত্য দিবসের স্বার্থকতা আসবে।
প্রচন্ড গরমে বিকেল থেকেই রওশন আলী মঞ্চের সামনে জড়ো হতে থাকেন শিল্পপ্রেমীরা। সন্ধ্যা যতই গড়াতে থাকে শিল্পীদের তাল, লয়, সুর আর নূপুরের ঝংকারের সংমিশ্রণে আরো নতুন কিছু দেখার আকাক্সক্ষা বাড়তে থাকে নৃত্যপিয়াসী হৃদয়ে। মঞ্চে শিল্পীদের নিমগ্নতা গভীর থেকে গভীরতর হয়। সেই সাথে মঞ্চের সামনে উপস্থিত সকলের অপলক দৃষ্টি মন্ত্রমুগ্ধতার সাথে বয়ে যায় পীন পতন নীরবতা। শিল্পকলা, মা নৃত্যালয়, নৃত্য বিতান, উদীচী, শেকড়, সুরধুনী, পুনশ্চ, চাঁদের হাট, অগ্নিবীণা, সুর নিকেতন, শিশু একাডেমি, কিংশুক, মাইকেল, উৎকর্ষ, সুরবিতানের শিল্পীরা মোট ৩২ টি নৃত্য পরিবেশন করে।