এগারো মাসের শিশু ফারিয়া কদিন থেকে অসুস্থ। জ¦র ঠান্ড সে কাহিল হয়ে পড়েছিল। গ্রামের কবিরাজ বললো মেয়েকে জি¦নে ধরেছে। তাকে সুস্থ করতে হলে পুকুরের পানিতে সুদ্ধ করতে হবে। পুকুরের পানিতে ডুবানোর কিছুক্ষণ পর মেয়ে শিশুটি মারা যায়। শিশুটির লাশ ওই অবস্থায় রেখে পালিয়ে যায় মা ও ভন্ড কবিরাজ। পুলিশ লাশ উদ্ধারের পর জানতে পারে শিশুটিকে পানিতে ডুবিয়ে হত্যা করা হয়েছে। পুলিশ সোমবার সন্ধ্যায় মা ও ভন্ড কবিরাজকে গ্রেপ্তার করেছে। গ্রেপ্তারকৃত দুজনই আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। এই মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটেছে রংপুর সদর উপজেলার সদ্যপুস্করণি ইউনিয়নে।
পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, রংপুর সদর উপজেলার সদ্যপুস্করনি ইউনিয়নের ফাজিল খা গ্রামের কৃষক ফারুক মিয়ার ১১ মাসে শিশু কন্যা ফারিয়া বেশ কদিন থেকে অসুস্থ ছিল। একই গ্রামের ছামছুল ইসলাম নামে এক ভন্ড কবিরাজ ছিল। ভন্ড কবিরাজ ফারিয়ার মাকে বলেন তোমার মেয়েকে জি¦নে ধরেছে। তাকে পুকুরের পানিতে সুদ্ধ করলে সে সুস্থ হয়ে উঠবে। কবিরাজের কথা মত গত ২৭ এপ্রিল রাতে বাড়ির পাশ্ববর্তি একটি পুকুরের কাছে মেয়েটিকে নিয়ে যায় ভন্ড কবিরাজ ও মা। সে সময় ঝড় বৃষ্টি হচ্ছিল। ওই অবস্থায় শিশুটিকে পুকুরের পানিতে চুবানো হলে কিছুক্ষণ পর শিশুটি মারা যায়। শিশুটির লাশ ওই অবস্থায় রেখে মা ও কবিরাজ পালিয়ে যায়। পরে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠায়। লাশ উদ্ধারের পর পুলিশ জানতে পারে ভন্ড কবিরাজ ও মায়ের কারণে শিশুটির মৃত্যু হয়েছে। পুলিশ এ ঘটনার ৪৮ ঘন্টা পর সোমবার বিকেলে মা মোরশেদা বেগম (২৮) ও কবিরাজ ছামছুলকে অটক করে। আটককৃতের আদালতে প্রেরণ করা হলে তারা দুজনেই শিশুটিকে পানিতে ফেলে হত্যার কথা স্বীকার করেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।
রংপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এ সার্কেল)মোঃ সাইফুর রহমান জানান, অসামীরা আদলতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। শিশুটিকে জ¦ীনে ধরার কথা বলে পানিতে ডুবিয়ে হত্যা করা হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে আমরা জানতে পেরেছি।
কোতোয়ালি থানার ওসি এ বি এম সাজেদুল ইসলাম জানান, এ ঘটনায় শিশুটির পিতা ফারুক মিয়া বাদি হয়ে একটি মামলা করেছে। মামলার দুই আসামীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তারা আদালতে হত্যার দায় স্বীকার করেছে। এই মামলায় আরো আসামি রয়েছে তাদের গ্রেপ্তার ও তদন্তের পর হত্যার প্রকৃত কারণ জানা যাবে।