চট্টগ্রাম নগরে দিন দুপুরে বাসায় ঢুকে এক ব্যবসায়ীর স্ত্রীকে হত্যার পর মালামাল লুট করে নিয়ে গেছে দুর্বৃত্তরা। এ সময় ওই ব্যবসায়ীর ছেলে ও এক পথচারীকেও ছুরিকাঘাত করা হয়েছে। মঙ্গলবার দুপুরে নগরের কোতোয়ালী থানার কোরবানীগঞ্জের আমিন সাহেবের ভবনের চতুর্থ তলায় এই ঘটনা ঘটে।
নিহত রোকসানা বেগম খাতুনগঞ্জের গম আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান এমএ কাশেম ট্রেডিংয়ের মালিক আবুল কাশেমের স্ত্রী। আহতবস্থায় তার ছেলে আবদুল আজিজকে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। তার অবস্থা গুরুতর বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
ঘটনার সময় আবুল কাশেম নিজের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ছিলেন। ঘটনার পর ঘটনাস্থল থেকে আলামত সংগ্রহ করেছে পিবিআই, সিআইডি ও নগর গোয়েন্দা পুলিশ।
কোতোয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ মহসীন বলেন, দুপুর ১২টা থেকে দুইটার মধ্যে একজন যুবক ওই ব্যবসায়ীর বাসায় ঢুকে গৃহবধূকে ছুরিকাঘাত করে খুন করেন। স্বর্ণালঙ্কার লুট করে নিয়ে যান। প্রাথমিকভাবে লুটের ঘটনা মনে হলেও এর সঙ্গে কারা জড়িত তা তদন্ত করে বের করা হবে।
ওই বাসার কাজের মেয়ে ইয়াসমিন আকতার জানান, সকালে একবার বাসায় কাজ করে চলে যান তিনি। দুপুরে আবার কাজ করতে এসে বাসার দরজায় নক করেন। এ সময় এক যুবক দরজা খুলে দিয়ে গলায় ছুরি ধরে বাসার একটি কক্ষে আটকে রাখেন। এর কিছুক্ষণ পর বাসায় আসেন আবদুল আজিজ। তাকেও দরজা খুলে দিয়ে আটকে রাখার চেষ্টা করেন ওই যুবক। এ সময় আজিজ কক্ষ থেকে বেরিয়ে অন্য কক্ষে মাকে খোঁজার চেষ্টা করলে ওই যুবক পেছন থেকে তাকে ছুরিকাঘাত করেন। একপর্যায়ে বাসার লেপ তোশক জড়ো করে আগুন ধরিয়ে দিয়ে পালিয়ে যান ওই যুবক।
যুবকটি লম্বা ও মুখে হালকা দাড়ি আছে বলেও জানান ইয়াসমিন। তবে তাকে চিনতে পারেননি তিনি।
আবুল কাশেমের ভাগ্নে হাসান মুরাদ বলেন, আমরা দোকানে নামাজ পড়ছিলাম। হঠাৎ শুনতে পাই কাশেম মামার বাসায় ডাকাত আক্রমণ করেছে। আমরা ১০ মিনিটের মধ্যে বাসায় আসি। এসে দেখি মামীর রক্তাক্ত লাশ বেডরুমের খাটের পাশে পড়ে আছে। ছুরিকাঘাতে গুরতর আহতাবস্থায় পড়ে আছে আজিজ। ঘরের সব মালামাল এলোমেলো। নগদ টাকা ও স্বর্ণালংকার নিয়ে গেছে দুর্বৃত্ত।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, আমিন সাহেবের ভবনের রান্নাঘরের জানালা দিয়ে ধোঁয়া বের হতে দেখে এলাকার লোকজন আগুন লেগেছে মনে করে এগিয়ে আসেন। এ সময় তারা এক যুবককে এক হাতে ছুরি অন্য হাতে পিস্তল সদৃশ বস্তু নিয়ে টেরিবাজারের দিকে ছুটতে দেখেন। পরে এক পথচারী ওই যুবককে ধরার চেষ্টা করলে তাকেও আঘাত করে পালিয়ে যান।
আবুল কাশেম জানান, বাসায় আগুন লাগার খবর পেয়ে তিনি ছুটে আসেন। এসে দেখেন তার স্ত্রী মৃত অবস্থায় পড়ে আছে। তার ছেলেকে স্থানীয় লোকজন হাসপাতালে নিয়ে গেছে। কারো সঙ্গে তার ব্যক্তিগত শত্রুতা নেই বলেও জানান তিনি।