বড় ধরনের কোন দুর্যোগ ছাড়াই কেটে যাচ্ছে ঘূর্ণিঝড় ‘ফনী’র প্রভাব। তবে শুক্রবার রাত থেকে সর্বোচ্চ ৭৬ কিলোমিটার বেগে বয়ে যাওয়া দমকা ও ঝড়ো হাওয়া এবং ভারী বৃষ্টিতে বরিশাল জেলার ১০ উপজেলায় নয় হাজার হেক্টর জমির ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এক হাজার ঘরবাড়ি এবং বহু গালপালা উপড়ে পরেছে। এ ছাড়া ৬৫ কিলোমিটার কাঁচা সড়ক এবং ২০ মিটার পরিমান বেড়িবাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক এসএম অজিয়র রহমান।
শনিবার বেলা সাড়ে ১২টায় বরিশালের জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের নিয়ন্ত্রণ কক্ষে ঘূর্ণিঝড় ফণীর প্রভাবে ক্ষয়ক্ষতি সম্পর্কে অবহিতকরণ সভায় এসব তথ্য জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক। ক্ষতিগ্রস্থ মানুষকে সর্বাত্মক সহায়তা করতে প্রশাসন আন্তরিকতার সাথে কাজ করে যাচ্ছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন। গৌরনদী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা খালেদা নাছরিন জনকণ্ঠকে জানান, ফণীর প্রভাবে গৌরনদীর প্রত্যন্ত মিয়ারচর এলাকার আড়িয়াল খা নদীতে ভাঙন দেখা দিয়েছে। ইতোমধ্যে নদীর তীরবর্তী বাসিন্দাদের নিরাপদ আশ্রয় কেন্দ্রে নিয়ে আসা হয়েছে।
বরিশাল আবহাওয়া অফিসের সিনিয়র পর্যবেক্ষক প্রণব কুমার রায় জানান, বরিশালে আরও বৃষ্টিপাত হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে। বিকেল নাগাদ আবহাওয়া কিছুটা উন্নতি হলেও অমাবস্যার কারণে বৃষ্টি অব্যাহত রয়েছে।
এদিকে শুধু বরিশালেই নয় বিভাগের মধ্যে অন্য পাঁচ জেলাতে দমকা হাওয়া বইছে। কোথাও কোথাও বৃষ্টিপাতও হচ্ছে। পাশাপাশি বরিশাল বিভাগের ছয় জেলার নদ-নদীতে পানির উচ্চতা কিছুটা বৃদ্ধি পেয়েছে। নদীর পাশাপাশি সাগরও কিছুটা উত্তাল রয়েছে। নদীর পানি বাড়ায় বিভাগের ভোলা, পটুয়াখালী ও বরগুনা জেলার উপকূলীয় নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এ ছাড়া কিছুকিছু এলাকায় বাতাসে গাছপালা ভেঙে পরেছে। সর্বশেষ তথ্যানুযায়ী বরিশাল, ভোলা, বরগুনা, পটুয়াখালী জেলার আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে শুক্রবার রাত থেকে কয়েকলাখ মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন। মানুষের পাশাপাশি জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে গবাদি পশু-পাখি নিরাপদ স্থানে রাখার জন্য আলাদা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। প্রতিটি আশ্রয়কেন্দ্রে প্রশাসনের পক্ষ থেকে খাদ্য সরবরাহ করা হচ্ছে। সম্ভাব্য দুর্যোগ পরবর্তী পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য দুই হাজার ৩০০ মেট্রিক টন চাল এবং নগদ ৩৭ লাখ টাকা বরাদ্দ রয়েছে বলেও জানিয়েছেন বিভাগীয় কমিশনার।