উৎসবমূখর পরিবেশের মধ্যদিয়ে ময়মনসিংহ সিটি কর্পোরেশনের প্রথম নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। প্রথম বারের মতো ইভিএস পদ্ধতিতে ভোট গ্রহন হওয়ায় পুরুষ ভোটারের চেয়ে নারী ভোটারদের আগ্রহ একটু বেশী লক্ষ্য করা গেছে। ভোট প্রদানে একটু সময় বেশী লাগলেও স্বচ্ছন্দে লাইনে দাঁড়িয়ে ভোট দিতে দেখা গেছে ভোটারদের।
এ পর্যন্ত ৩৩টি ওয়ার্ডের কোথাও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি।
রোববার সকাল আটটার আগে থেকেই নারী ভোটারা ভোট দিতে কেন্দ্রের বাইরে অপেক্ষা করতে দেখা গেছে। সকাল পৌনে আটটায় নগরীর মহাখালী স্কুল এ কলেজ কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায় নারী ভোটারদের লম্বা লাইন।
এই কেন্দ্রে ভোট দিতে আসা একজন নারী ভোটার জানান, শুধু ইভিএম এ ভোট দিতে লাইনে দাঁড়িয়ে আছি। আগের পদ্ধতিতে ভোট হলে কেন্দ্রে আসতাম না। এই কেন্দ্রে ভোট দিয়ে ফিরে কবিতা পাল বলেন, ইভিএম পদ্ধতি অনেক সহজ সময়ও কম লাগে আর একজনের ভোট অন্যজনে দিতে পারবে না। জাল ভোটের সম্ভাবনা কম।
নগরীর ময়মনসিংহ মহাবিদ্যালয় ভোট কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায় পুরুষ ভোটারদের লম্বা লাইন। ভোটাররা দীর্ঘ সময় লাইনে দাঁড়িয়ে ভোট দিচ্ছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়েও সন্তুষ প্রকাশ করেছেন সাধারণ ভোটারা।
এই কেন্দ্রে ভোট দিতে আসা হীরা মিয়া বলেন, আগে আমরা ভোট দিয়েছি ব্যালট পেপারে। এখন ডিজিটাল যুগ। ইভিএম পদ্ধতিতে ভোট দিয়ে। খুব ভাল লাগছে। এখানে ভোট কারচুপি হওয়ার কোনো সুযোগ নেই।
নগরীরর ৮নং ওয়ার্ডের ভোটার জামাল উদ্দিন ভোট দিয়ে ফিরে জানান, আগে নিজের ভোট নিজে দিতে পারব এর কোনো গ্যারান্টি ছিল না। এখন ইভিএম পদ্ধতি আসায় আমরা নিশ্চিত হয়েছি আমর ভোট আমি দিতে পারব।
সকাল আটটার দিকে নগরীর কৃষ্টপুর আলীয়া মাদ্রাসা কেন্দ্রে ইভিএম মেশিন কাজ না করায় ভোট শুরু করতে কিছুটা বিলম্ব হয়। পরে নতুন মেশিন এনে ভোট গ্রহন শুরু করা হয়।
অনেক কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়, ইভিএমে আঙ্গুলের ছাপ সাপোর্ট না করায় বার বার চেষ্টা করেও অনেকে ভোট দিতে না পেরে ফিরে গেছে। অনেককেই আবার বিরুপ মন্তব্য করে বলেন এই পদ্ধতি হলো শিক্ষিত সমাজের জন্য। আগে জাতিকে শিক্ষিত করে পরে এই পদ্ধতি চালু করা উচিৎ। তাহলে ভোট প্রদানে সময় অনেক কম লাগবে।
রিটার্নিং কর্মকর্তা ও আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মো. আলীমুজ্জামান জানান, প্রথমবারের মত অনুষ্ঠিত এই নির্বাচনে সব ধরণের নিরাপত্তা বিধানে নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকেও নেওয়া হয়েছে প্রস্তুতি। এখন পর্যন্ত কোনো কেন্দ্রে অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি। প্রতিটি ভোট কেন্দ্রে ১০জন আনসার সদস্য ও তিনজন করে পুলিশ সদস্য মোতায়েন রয়েছে।
পাশাপাশি ২২ প্লাটুন বিজিবি, র্যাবের ৩৩টি মোবাইল টিম (প্রতি ওয়ার্ডে একটি করে), পুলিশের ৩৩টি মোবাইল টিম (প্রতি ওয়ার্ডে একটি করে) ও ১১টি স্টাইকিং দল মাঠে রয়েছে। এছাড়াও প্রতিটি ওয়ার্ডে একজন করে নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট ও তিনজন অতিরিক্ত নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট দায়িত্ব পালন করছেন। ৩৩টি ওয়ার্ডে ১২৭টি ভোট কেন্দ্রে ৮৩০টি বুথে ইভিএম প্রদ্ধতিতে ২ লাখ ৯৬ হাজার ৯৩৮ জন ভোটার ভোট প্রদান করছেন।
নির্বাচনে ৩৩টি ওয়ার্ডে সাধারণ কাউন্সিলর পদে ২৪২জন ও সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদে ৭০জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। মেয়র পদে কোনো প্রার্থী না থাকায় আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ইকরামুল হক টিটু আগেই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতা মেয়র নির্বাচিত হন।