ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ে চাঞ্চল্যকর প্রবাসী সবুজ হত্যা মামলার প্রধান আসামি আদম ব্যবসায়ী আলী নেওয়াজের উপর হামলা চালিয়ে দুই পা কেটে ফেলেছে বাদীপক্ষের লোকজন। পূর্ব শক্রতার জের ধরে এ ঘটনা ঘটেছে বলে জানায় পাগলা থানা পুলিশ। মঙ্গলবার ভোরসকালে উপজেলার পাগলা থানাধীন পাঁচবাগ ইউনিয়নের চৌকা গ্রামে সবুজ হত্যা মামলার বাদী সবুজের পিতা শহীদ মিয়ার বাড়ির সামনে এ ঘটনা ঘটে।
জানা গেছে, প্রবাসী সবুজ হত্যা মামলার আসামি উপজেলার পাঁচবাগ ইউনিয়নের ঝাওয়াইল গ্রামের আদম ব্যবসায়ী আলী নেওয়াজ দীর্ঘদিন ধরে পলাতক ছিল। গত ২/৩ দিন পূর্বে সে গোপনে বাড়িতে আসে। মঙ্গলবার ভোর সকালে সে বাড়ি থেকে বের হয়ে রিক্সায় করে পার্শ্ববর্তী হোসেনপুর বাজারে যাওয়ার সময় ভোর ৫টার দিকে চৌকা গ্রামে শহীদের বাড়ির সামনে আসলে শহীদ ও তার ছেলেরা আলী নেওয়াজের উপর হামলা চালিয়ে রামদা দিয়ে কুপিয়ে তার দুই পা কেটে ফেলে। স্বজনরা আলী নেওয়াজকে উদ্ধার করে প্রথমে হোসেনপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পরে ঢাকায় পঙ্গু হাসপাতালে পাঠায়।
পাগলা থানার ওসি মোঃ শাহিনুজ্জামান খান বলেন, এখনও অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উল্লেখ্য, উপজেলার পাগলা থানাধীন পাঁচবাগ চৌকা গ্রামের শহিদ মিয়ার দুই ছেলে পারভেজ, রাসেল ও শ্যালক সাইদুলকে বিদেশ পাঠানোর জন্য প্রায় ৩ বৎসর পূর্বে পাশ^বর্তী ঝাওয়াইল গ্রামের হবি মুন্সির ছেলে আদম ব্যবসায়ী আলী নেওয়াজকে সাড়ে ১০লাখ টাকা দেয়। কথামত তাদেরকে বিদেশ না পাঠানোয় শহিদ মিয়া আলী নেওয়াজের কাছে টাকা ফেরত চায়। টাকা ফেরত চাওয়ায় গত ২০১৭ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর দুপুরে আলী নেওয়াজ ও তার ভাড়াটিয়া লোকজন গফরগাঁও থানার তেঁতুলিয়া গ্রামের মোড়ল বাড়ি এলাকায় শহীদ মিয়ার পরিবারের লোকজনের উপর দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়। হামলাকারীরা শহীদ মিয়ার ছেলে প্রবাসী সবুজকে রামদা দিয়ে এলোপাথারী কুপিয়ে ব্রহ্মপুত্র নদে ফেলে দেয়। এ সময় শহীদের ছেলে রাসেল, মেয়ে সেবিনা, রাসেলের স্ত্রী সাবিনাকে কুপিয়ে আহত করে সন্ত্রাসীরা। এরপর থেকেই সবুজের লাশ খোঁেজ পাওয়া যাচ্ছিল না। ঘটনার ৫ মাস পর ২০১৮ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারী ময়মনসিংহ জেলা পুলিশের পিবিআই শাখা (পুলিশ ব্যুরো অফ ইনভেষ্টিগেশন) পাঁচপাই বাজার এলাকায় ব্রহ্মপুত্র নদ থেকে সবুজের ক্ষত বিক্ষত লাশ উদ্ধার করে।
সবুজ মিয়ার পিতা শহিদ মিয়া ২০১৭ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর রাতেই পাঁচবাগ ইউপির সদস্য জিতু মেম্বার, পাঁচবাগ ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগ যুগ্ম-আহবায়ক জহিরুল ইসলাম, আদম বেপারী আলী নেওয়াজসহ ৬ জনকে এজাহার নামীয় ও অজ্ঞাতনামা আরো ১২/১৩ জনকে আসামি করে গফরগাঁও থানায় মামলা দায়ের করেন। ঘটনার পরপরই আলী নেওয়াজসহ ৪ জন আসামি গ্রেফতার হলেও পরে আসামিরা জামিন পায়। এদিকে সবুজের লাশ উদ্ধার হওয়ার পর আসামিরা আদালতে হাজিরা না দেওয়ায় আলী নেওয়াজসহ এই মামলার অন্য আসামীদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা ছিল।