সংযম ও সিয়াম সাধনার মাস পবিত্র মাহে রমজানকে ঘিরে কদর বেড়েছে কালীগঞ্জে সুগন্ধী দোকান গুলোতে। সাধনার মাস রমজান মাত্র শুরু হয়েছে। ধর্মপ্রান মুসলমানরা তাদের সংযমের মাসকে ভালোভাবে ইবাদতের মাধ্যমে কাটাতে প্রয়োজনীয় জিনিস ক্রয়ে ভিড় করছেন দোকান গুলোতে। সুরমা, আতর, টুপি, তসবিহ, মেসওয়াক আর জায়নামাজের দোকান গুলোতে উপচেপড়া ভিড় দেখা যাচ্ছে।
এই কেনাকাটা চলবে ঈদের দিন নামাজের আগ মুহূর্ত পর্যন্ত। শিশু থেকে বৃদ্ধ পর্যন্ত সবাই মাথায় টুপি দিয়ে গায়ে খুশবু মেখে নামাজ পড়তে পছন্দ করেন। সে কারণে রোজার শুরুতে ক্রেতারা ভিড় জমাচ্ছেন আতর, সুরমার দোকানে। শুধু আতর-সুরমাই নয়, সেই সঙ্গে বিক্রি হচ্ছে জায়নামাজ, টুপি, তসবিহ ও মেসওয়াক। আতর সুরমা কিনতে বেশি দেখা যায় কিশোর ও বয়োজ্যেষ্ঠদের। পবিত্র রমজান মাসের শুরতেই এবারও আতরের চাহিদা আকাশছোঁয়া। শুধু আতর নয়, টুপি, তসবিহ ও জায়নামাজের দামও বেড়েছে।কালীগঞ্জ উপজেলায় বিভিন্ন ভ্রাম্যমাণ দোকান গুলোতে টেবিলে ও র্যাকে সাজানো আতর, সুরমা, টুপি পাশাপাশি জায়নামাজ, তসবি ক্রেতাদের ক্রয় করতে দেখা গেছে।
ভ্রাম্যমান দোকানদার আলামিন বলেন, পবিত্র রমজান ও ঈদকে উপলক্ষেই বিভিন্ন আইটেমের আতর, টুপি, তসবিহ, মেসওয়াক ও জায়নামাজের ব্যবসা করি। আশাকরি অন্যান্য বছরের তুলনায় এবারের বিকিকিনি আরো ভালো হবে।তার মতে, এবার বিভিন্ন ফুলের সুগন্ধের আতর গুলো বেশি বিক্রি হচ্ছে। এসব আতরের তোলা হিসেবে কিনলে অনেক টাকা দাম পড়ে তাই মিলি লিটারের ছোট শিশিতে আতর কেনেন। প্রতি আতর ২০ টাকা থেকে ৫০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। এই আতর গুলো আসে পাকিস্তান, ভারত ও দুবাই থেকে। এদিকে তুলনামূলক হারে বেড়েছে টুপির দামও প্রতিটি টুপি ১০টাকা থেকে ১হাজার টাকা, তসবি ২০ টাকা থেকে ১ হাজার টাকা, জায়নামাজ ১০০ টাকা থেকে ১৫শত টাকা। পাকিস্তান থেকে আসা প্রতিটি মেসওয়াকের মূল্য ১০ টাকা থেকে ৫০ টাকা। মেসওয়াকের মধ্যে রয়েছে জয়তুন যা শুকনো আর তিলো শুকনো ও কাঁচা হয়।এছাড়া দেশি আল মীম, সুলতান, কেপিপি, স্কয়ার, আলিফ নামের বিভিন্ন ব্র্যান্ডের দেশি আতরও বিক্রি হচ্ছে। আতর ছাড়াও বাহারি ডিজাইনের আতরের দানি (বোতল) পাওয়া যায়। কাচ ছাড়াও বিভিন্ন ধাতু মিশ্রনে তৈরি এসব আতরদানি বিক্রি হয় ৫০ টাকা থেকে দুই হাজার টাকা পর্যন্ত। বিক্রেতারা জানান, বিভিন্নভাবে প্রস্তুত হয় আতর। এর মধ্যে রাসায়নিক ভাবে তৈরি আতরের দাম তুলনা মূলক ভাবে কম।
১০০ মিলি লিটারের বোতলে ম্যাডার রোজ আতর ১ হাজার ৬০০ টাকা, লর্ড ১ হাজার টাকা, সিলভার ১ হাজার ৭০০ টাকা, ইগুবস দেড় হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কম্বোডিয়ান আগর আতর তোলা প্রতি (এক তোলায় ১১.৬৬ গ্রাম) ৬৪ হাজার টাকা, ভারতের চন্দনকাঠের তৈরি আতর তোলা প্রতি ৪ হাজার টাকা, গোলাপের আতর তোলা প্রতি ৬ হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। দেশীয় আতর পাওয়া যাচ্ছে ৫০ থেকে ১ হাজার টাকার মধ্যে। সিলেটের আগর গাছ থেকে তৈরি আতর বিক্রি হয় তোলা প্রতি ৩ থেকে ৭ হাজার টাকায়। ক্রেতা বলেন, সিয়াম সাধনার মাস মাহে রমযান। আল্লাহ ও রাসূল (সা.) সুগন্ধি পছন্দ করেন, তাই কোরআন নাজিলের মাস রমযানে এ সুগন্ধি কিনলাম। এ ছাড়া সন্তানদের জন্য কয়েকটি টুপিও কিনেছি। যাতে এ মাসে আল্লাহর ইবাদত করতে পারি, সেই দোয়া চাই। আতর, টুপি আর জায়নামাজের পাশাপাশি সুরমা আর তসবিহও কিনছেন অনেকে।