নাগেশ্বরীতে টাকা ছাড়া তালিকায় নাম উঠে না ইনকাম সাপোর্ট প্রোগ্রাম ফর দ্যা পুওরেষ্ট (আইএসপিপি) -যতœ প্রকল্পের সুবিধাভোগীদের। একজন সুবিধা ভোগীর নাম তুলতে গুনতে হয়েছে ৪ থেকে ৫ হাজার টাকা। অভিযোগ রয়েছে এসব টাকা নিয়েছেন ইউপি সদস্যরা আর বন্টন হয়েছে দ্বায়িত্বে থাকা কর্মকর্তা পর্যন্ত। সরেজমিনে উপজেলার বল্লভের ইউনিয়নে গিয়ে জানা যায়, ২নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য সৈফুর রহমান টাকার বিনিময়ে সুবিধাভোগীর আবেদন গ্রহণ করেছেন তিনি। ১শ ২০টি আবেদনের মধ্যে ৯৮জনের আবেদনে সবুজ মার্কার দিয়ে বৃত্ত চিহ্ন এঁকেছেন তিনি। এসব আবেদনের বিপরীতে ৪ থেকে ৫ হাজার টাকা নিয়েছেন তিনি। যাচাই বাছাই কর্মকর্তার সাথে যোগসাজসে এমন চিহ্ন দিয়েছেন বলে চেয়াম্যান আকমল হোসেনর দাবী। এছাড়া সুবিধা ভোগী যাচাই বাছাইয়ে স্ব-শরীরে উপস্থিত থাকার কথা থাকলেও অনেক ওয়ার্ডের কেউ উপস্থিত হয়নি। এসব ওয়ার্ডের ইউপি সদস্যরা নিজেদের মনগড়া আবেদন এনে জমা দিয়েছেন কর্মকর্তার হাতে। ৪নং ওয়ার্ডের সদস্য আবু হোসেন এরকম ১শ ৫০টি আবেদন জমা দেন। কোন প্রকার যাচাই বাছাই ছাড়া এসব আবেদন কর্মকর্তা কর্তৃক গ্রহণকালে আটকিয়ে দেন চেয়ারম্যান। ইউনিয়নটির ২নং ওয়ার্ডের ফান্দের চর এলাকার সইফুরের স্ত্রী পারভীন বেগম, সাফির স্ত্রী আলেয়া বেগম, মফিজুলের স্ত্রী আনোয়ারা বেগম, ইব্রাহিমের ছেলে ইসমাইল তালিকায় নাম তুলতে ইউপি সদস্য সৈফুরের সাথে টাকা লেনদেনের ঘটনা স্বীকার করেছেন।
একই এলাকার কাশেম মোল্লার মেয়ে সাদিয়া আফরিন জানান, তার ভাইয়ের দুই সন্তান মরিয়ম আকতার এবং হযরত আলীর নাম দিতে ওই ইউপি সদস্য ১০হাজার টাকা চান। টাকা না দেয়ায় তাদের আবেদন তিনি গ্রহণ করেননি। ইউপি সদস্য সৈফুর টাকা লেনদেনের বিষয়ে কোন প্রকার মন্তব্য করতে রাজি হয়নি। ৪নং ওয়ার্ডের সদস্য আবু হোসেন টাকা নেয়ার বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, চেয়ারম্যানের কাছে যেগুলো আটক আছে সেগুলোর বাদে অন্য সুবিধাভোগীদের আবেদন নিয়েছেন যাচাই বাছাই কর্মকর্তারা। আমরা এখন তালিকা হাতে পাওয়ার অপেক্ষা করছি। আটককৃত আবেদনের বিষয়ে চেয়াম্যান আকমল হোসেন জানান, এসব আবেদন সঠিক যাচাই বাছাই করে গ্রহন করা হয়নি এবং অর্থের বিনিময় ঘটেছে তাই আটকিয়ে রাখা হয়েছে এবং পুনরায় যাচাই বাছাইয়ের জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে অবগত করা হয়েছে। এলজিডির নিয়োগ প্রাপ্ত ইউনিয়ন এস,পি,এ, আবু সায়েম বলেন, আমার নাম ভাঙ্গিয়ে ইউপি সদস্যরা টাকা নিলে আমার করার কিছু নাই। তাছাড়া ওই ইউনিয়নে সমন্বয়হীনতার অভাবে প্রকল্প বাস্তবায়নে সমস্যা হচ্ছে। যাচাই বাছাইয়ে দ্বায়িত্বে থাকা উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা সালেকুল ইসলাম জানান, নিয়ম মেনেই যাচাই বাছাই হয়েছে। যে আবেদনগুলো চেয়ারম্যানের কাছে আছে সেগুলোতো জমাই হয় নাই টাকা লেনদেন কীভাবে হয়?
জানা যায়, বিশ্ব ব্যাংকের অর্থায়নে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রাণালয়ের অধিনস্থ স্থানীয় সরকার বিভাগ এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। এ প্রকল্পে অতিদরিদ্র মা ও ৫ বছরের কম বয়সের শিশু আর্থিক সুবিধা পাবেন।