দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের ন্যায় গোটা দাকোপে এক শ্রেনীর মানুষ গুজব ছড়িয়ে মানুষের মাঝে ভীতি ও আতঙ্ক সৃষ্টির অপচেষ্টা করছে। যে কোন আগন্তুক অথবা ভারসাম্যহীন মানুষের জীবন নিরাপত্তাহীন হয়ে পড়েছে। পরিস্থিতি উত্তোরনে স্থানীয় প্রশাসন জনসচেতনতামূলক প্রচারনা শুরু করেছে।
গত কয়েকদিন যাবৎ গোটা দাকোপে দিনরাত নানা ধরনের গুজব যেন বাতাসে ভেসে বেড়াচ্ছে। কখন বোরকা পার্টি আবার কখন বা রোহিঙ্গা কর্তৃক ছেলে ধরা আতঙ্ক সাধারন মানুষের মাঝে। ক্ষনে ক্ষনে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে খবর আসছে ওমুক স্থানে রোহিঙ্গা বা বোরকা পার্টি ধরা পড়েছে। বিশেষ করে গত শুক্রবার দিবাগত রাতে উপজেলা সদর চালনা পৌরসভার আছাভ’য়া এলাকার একটি ভাড়া বাড়ীতে গুজব ছড়িয়ে রোহিঙ্গা সন্দেহে ১৬ জন নারী পুরুষকে সহ¯্রাধীক মানুষ অবরুদ্ধ করে রাখে। এরপর থেকে এমন অপপ্রচার আরো জোরালোভাবে ছড়াতে থাকে। যদিও পুলিশ তদন্ত করে জানতে পারে অবরুদ্ধ ১৬ নারী পুরুষ কুমিল্লা অঞ্চলের বাসিন্দা। তারা সেখানে বাসা ভাড়া নিয়ে ফেরী করে ক্রোকারিজের ব্যবসা করছিলো। ওই ঘটনায় নিরাপত্তাহীনতার আশংকায় তারা দাকোপ ছেড়ে চলে যায়। এরপর এক শ্রেনীর মানুষ বিশেষ করে সোশ্যাল মিডিয়ায় (ফেইজবুকে) বেশী বেশী রোহিঙ্গা আতংকের অপপ্রচার ছড়াতে থাকে। এ ঘটনার পরেরদিন তিলডাঙ্গা ইউনিয়নে এক পাগলকে গনপিটুনি দিয়ে মারাতœক আহত করা হয়। প্রশাসন তাকে উর্দ্ধার করে দাকোপ হাসপাতালে ভর্তি করে। পানখালী ইউনিয়নে জনৈক নারী তার অসুস্থ আতœীয়কে দেখতে এসে এমন অনাকাংখিত পরিস্থিতির মুখে পড়ে লাঞ্চিত হয়। এভাবে সর্বত্র শোনা যাচ্ছে অনাকাংখিত ঘটনা এবং মানুষিক ভারসাম্যহীনদের গনপিটুনির খবর। কিন্তু সৃষ্ট অপপ্রচারের যেমন কোন সত্যতা মেলেনি, তেমনি এটার সৃষ্টি ঠিক কার মাধ্যমে তার ও হদিস মিলছেনা। ওমুকের কাছে জেনেছি তমুকের মুখে শুনেছি এমন প্রচারনার মাঝে উত্তর সীমাবদ্ধ আছে। এমন পরিস্থিতিতে সাধারন মানুষের আতঙ্ক দূর করতে জনসচেতনতার অংশ হিসেবে দাকোপ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবদুল ওয়াদুদ এবং থানার কর্মকর্তা ইনচার্জ মোকাররম হোসেনের নেতৃত্বে স্থানীয় প্রশাসন বিভিন্ন ইউনিয়নে সভা সমাবেশ করে বেড়াচ্ছে। তাদের ভাষ্য কোন অপরিচিত ব্যক্তিকে সন্দেহভাজন মনে হলে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি অথব প্রশাসনের হাতে তুলে দিন, কিন্তু কেউ আইন হাতে তুলে নিবেন না। যে বা যারা এরপর এমন অপপ্রচার ছড়াবে অথবা আইন হাতে তুলে নিবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। সুতরাং শতভাগ নিশ্চিত না হয়ে কেউ কোন ব্যক্তি গোষ্টি বা বোরকার মত ধর্মীয় পোষাকের নামে অপপ্রচার করা থেকে বিরত থাকা উচিত এমন মন্তব্য সচেতন মহলের। একই সাথে তারা সোশ্যাল মিডিয়ায় অপপ্রচার ছড়ানোর সাথে জড়িতদের আইনের আওতায় আনার দাবী জানান।