কলেজে ভর্তি হওয়া হলো না সেনবাগের কাজিরখিল গ্রামের স্কুলছাত্র শেখ যোবায়ের হোসেন (১৭)। মঙ্গলবার রাতে তাকে তুচ্ছ ঘটনার জেরে একই এলাকার সহপাটি বন্ধুদের ছুরিকাঘাত করে হত্যা করে। ওই হত্যা কান্ডের ঘটনাটি ঘটেছে মঙ্গলবার রাত ১২টারদিকে নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার চৌমুহনী পৌরসভা আলীপুর দিঘীরপাড় আপন নিবাস এলাকায়।
যোবায়ের সেনবাগ উপজেলার ৮নং বীজবাগ ইউনিয়নের কাজিরখিল গ্রামের আবদুর রহমান মিয়ার বাড়ির সেনবাগ উপজেলা জাতীয় শ্রমিক লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি শেখ মোশাররফ হোসেন বেলালের ছেলে।
যোবায়ের পিতা- মাতার সঙ্গে চৌমুহনীর ওই এলাকায় ভাড়া বাসায় থেকে লেখা পড়া করতেন। ৪ ভাইয়ের মধ্যে সে দ্বিতীয়। যোবায়ের হোসেন এবছর নোয়াখালীর ক্যাব্রিয়াম স্কুল এ- কলেজ থেকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে। সদ্য প্রকাশিত এসএসসি পরীক্ষার ফলাফলে সে এ+ প্লাস পেয়ে কলেজে ভর্তির প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন।
হত্যাকান্ডের সঙ্গে জড়িত থাকা সন্দেহে পুলিশ আটজনকে আটক করেছে। আটকরা হলেন- মিরওয়ারিশপুর এলাকার আজিম হোসেনের ছেলে আবিদ হোসেন ও তার সহযোগী ফাহিমসহ মোট আট জন।
প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে বেগমগঞ্জ মডেল থাকার পুলিশ জানায়, তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে কয়েকদিন আগে আবিদের বন্ধু রাকিবকে মারধর করা হয়। এ ঘটনার জন্য স্কুলছাত্র যোবায়েরকে দায়ী করে মঙ্গলবার রাতে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চৌমুহনীর দিঘীর পাড়ে আসে আবিদ, আশ্রাফ, জনি, ফাহিম ও তার কয়েকজন বন্ধু। জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে যোবায়ের ও তাদের সহপাটি এবং তাদের বন্ধুদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। যার একপর্যায়ে যোবায়েরকে কয়েকজন বন্ধু তাকে বাড়ির দিকে নিয়ে যাচ্ছিল। এ সময় আবিদ তাকে ছুরিকাঘাত করে পালিয় যায়।
এসময় যোবায়ের চিৎকার শুনে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এসে তাকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে প্রথমে বেগমগঞ্জ ১০শর্য্য হাসপাতালে সেখান থেকে তাকে মুমুর্স অবস্থায় নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
বুধবার (১৫ মে) বেগমগঞ্জ সার্কেলের অতিরিক্ত সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি-বেগমগঞ্জ সার্কেল ) মোঃ শাহজাহান শেখ মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে দুই পক্ষের মধ্যে হাতাহাতির পর যোবায়েরকে বুকে ছুরিকাঘাত করে হত্যা করা হয়েছে। ছুরিবিদ্ধ অবস্থায় যোবায়েরকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
পরে ঘটনাস্থলের আশপাশে অভিযান চালিয়ে দুই জনকে ও নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা আরও ছয় জনকে আটক করে বলে নিশ্চিত করেন। আটকদের জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। এ ঘটনায় থানায় হত্যা মামলার প্রস্তুতি চলছে বলেও জানান তিনি।