জামালপুরের মেলান্দহের নিখোঁজ রোকেয়া খাতুনে (১৯)’র বাড়িতে চলছে শোকের মাতম। শোকাহত পিতা-মাতা পাগল প্রায়। মেয়ের সন্ধানে ছুটাছুটি করছেন তারা। অপরিচিত লোক দেখলেই ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে থাকেন অপলক দৃষ্টিতে। সন্তানহারা মাত-বাবার করুণ আর্তি ও ক্রমাগত কান্নাকাটিতে বাতাস ভারি করে চলেছে।
উপজেলার শ্যামপুর ইউনিয়নের কাজাইকাটা গ্রামের আ: কাদেরের মেয়ে রোকেয়া। ২০১৭ সালের ১৫ ডিসেম্বর বিয়ে হয়; নাংলা ইউনিয়নের গোবিন্দপুর নাংলা গ্রামের রবিউল ইসলামের ছেলে বাবু (২৩)’র সাথে।
বিয়ের আগে থেকেই শ^শুর রবিউল ইসলাম স্বপরিবারে ঢাকা বসুন্ধরা তালতলী বস্তিতে থাকতো। বস্তিতে শ^শুর রবিউল ইসলাম শ্রমিক সর্দার ওরফে জুলুম সর্দার হিসেবে পরিচিতি আছে। বিয়ের পর রোকেয়া গোবিন্দপুর নাংলা গ্রামে কিছুদিন ঘরসংসার করেছে।
স্বামী-শ^শুর যৌতুকের ৭০ হাজার টাকা নেয়ার পর রোকেয়াকে নিয়ে পাড়ি জমান ঢাকার তালতলী বস্তিতে। এরপর থেকে রোকেয়ার সাথে স্বজনদের যোগাযোগ নেই। রোকেয়ার মা ময়না খাতুন (৪৫) কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন-একদিন মেয়ে ফোনে কান্না কাটি করে বলেছে মা-আমাকে আর পাবে না। এ কথা বলার পরই রোকেয়ার স্বামী-শ^শুর ফোন কেড়ে নিয়ে আমাকে শান্তনা দিয়েছেন। তারপর থেকেই রোকেয়ার শ^শুর-স্বামীকে ফোন করেও পাওয়া যায় নাই।
পিতা আ: কাদের (৫০) জানান-মেয়ে রোকেয়ার খোঁজে আমরা ঢাকার বসুন্ধরা তালতলী বস্তিতে যাই। সেখানে রোকেয়ার স্বামী-শ^শুরকে পেলেও আমার মেয়েকে পাই নি। মেয়ে রোকেয়ার কথা জানতে চাইলে উল্টাপাল্টা কথা বলছেন। বস্তির লোকেরা বলেছেন-রোকেয়ার স্বামী এখন বাবা খায়। বাবা কী ধরণের খাদ্য তাও জানি না। পরে জানতে পারি এটি খেলে নেশা হয়। আমার বিশ^াস নেশার কারণে কিংবা অন্য উদ্দেশ্যে আমার মেয়ে রোকয়োকে হত্যা অথবা গুম করেছে।
রোকেয়া নিখোঁজের ঘটনায় ১৩ মার্চ পিতা আ: কাদের বাদি হয়ে জামালপুর কোর্টে মামলা দায়ের কোর্টে মামলা (নং-৫৭(১)/২০১৯) দায়ের করে করেছেন। মামলার প্রেক্ষিতে মেলান্দহ থানার ওসিকে তদন্তের নির্দেশ প্রদান করেছে। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই হাসান আলী জানান-ঘটনার তদন্ত করেছি। নিখোঁজ রোকেয়ার স্বামী বাবু এবং তার পিতা-মাতা এলাকায় নেই। এ বিষয়ে দ্রুত প্রতিবেদন দেয়া হবে।