খুলনার পাইকগাছায় নাজমা বেগম (২৮) স্বামীর সংসারে ফিরতে সাংবাদিকদের দ্বারস্ত হন। গত বছর ৫ নভেম্বর উপজেলার কপিলমুনি প্রেসক্লাবে নাজমা স্বামী সংসার ফিরে পেতে এক সাংবাদিক সম্মেলন করেন। এক পর্যায় নাজমাকে স্বামীর সংসারে ঠাঁই দেওয়া হয়। তবে থেমে থাকেনি তার উপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন। অবশেষে স্বামীর সংসারে ফিরে গত ১৯মে রাতে লাশ হলো দুই সন্তানের জননী নাজম বেগম।
থানা পুলিশ ও মামলা সূত্রে জানাগেছে, ঢাকার আশুলিয়া থানার তৈয়বপুর গ্রামের কালু মিয়ার মেয়ে নাজমা বেগম (২৮) কে ১০ বছর পূর্বে উপজেলার হরিঢালী গ্রামের মীর আবদুর রাজ্জাক আলীর ছেলে মীর লিয়াকত আলীর সাথে বিয়ে দেন। বিয়ের পর থেকে স্বামী লিয়াকত আলী যৌতুকের দাবীতে স্ত্রী নাজমা বেগমকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করে আসছিল। বর্তমানে তাদের একটি ছেলে ও একটি কন্যাসন্তান রয়েছে। মামলার বিবরণী অনুযায়ী রোববার (১৯মে) রাত ১টার দিকে মীর লিয়াকত আলী স্ত্রী নাজমা বিষপানে মারা গিয়েছে মর্মে মুঠোফোনে শ্বশুর কালু মিয়াকে বিষয়টি জানায়। পরে নাজমার পিতা ও তার পরিবারের লোকজন ঘটনাস্থলে এসে স্থানীয় লোকজনের মাধ্যমে জানতে পারেন মীর লিয়াকত আলী ও তার পরিবারের লোকজন ঘটনার দিন নাজমার কাছে যৌতুকের টাকা দাবী করে। টাকা দিতে অপরগতা প্রকাশ করলে স্বামী ও তার পরিবারের লোকজন নাজমাকে এলোপাতাড়িভাবে মারপিট করে গুরুতর জখম করে এবং গলায় ওড়না পেচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যার চেষ্টা করে। মৃত্যুর বিষয়টি ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার জন্য তাহার মুখে বিষ ঢেলে দেয়। পরে স্থানীয় লোকজন গোংরানোর শব্দ শুনে গুরুতর অবস্থায় নাজমাকে প্রথমে কপিলমুনি সরকারি হাসপাতাল ও পরে তালা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। চিকিৎসাধীন অবস্থায় হাসপাতালে রোববার রাত ১ টার দিকে নাজমার মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় নাজমার পিতা কালু মিয়া বাদী হয়ে সোমবার পাইকগাছা থানায় ৭ জনকে বিবাদী করে মামলা করে। যার নং ১৯, তাং ২০/০৫/২০১৯ ইং। থানা পুলিশ মামলার মূল আসামি নাজমার স্বামী মীর লিয়াকত আলী, শ্বশুর আবদুর রাজ্জাক আলী ও শ্বাশুড়ী হালিমা বেগমকে আটক করা হয়েছে বলে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই আবু সাঈদ জানান।
এ প্রসঙ্গে ওসি এমদাদুল হক শেখ জানান, রোববার তালা থেকে মৃতের ময়না তদন্তের কাজ সম্পন্ন করা হয়। সোমবার মৃতের পিতা বাদী হয়ে মামলা করে এবং এ মামলায় আটক ৩জনকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে।