ব্রহ্মণবাড়িয়ার কসবায় ধজনগর সীমান্তের ২০৩২ পিলারের কাছ দিয়ে প্রবেশকালে বিজিবি’র বাধার মুখে ভারতীয় সীমানায় শুন্য রেখায় অবস্থান করছে ১০ রোহিঙ্গা। তাদের মধ্যে ২জন পুরুষ, ২জন মহিলা ও ৬ শিশু রয়েছে। এ বিষয়ে দু দেশের বিজিবি ও বিএসএফ পর্যায়ে আলোচনা চলছে।
স্থানীয় বিজিবি সুত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার ভোর রাতে ভারতের সীমান্ত রক্ষী ( বিএসএফ ) তার কাটার ফটক খোলে দিয়ে ওই রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে পাঠানোর চেষ্টা করে। খবর পেয়ে বাংলাদেশের সীমান্ত রক্ষী বিজিবি ঘটনাস্থল গিয়ে তাদের প্রবেশে বাধা দিলে ভারতীয় সীমান্তের শুন্য রেখায় অবস্থান নেয় রোহিঙ্গারা। অবস্থান নেয়া পুরুষ দু’জনের নাম আবদুল গফুর ও সমির জালাল। এ খবর জানাজানি হলে রোহিঙ্গাদের সাহায্যকারী জামাল মিয়া ও তার স্ত্রীকে বিজিবি উত্তম-মাধ্যম দিয়ে ছেড়ে দেয়। গ্রামের অধিবাসীরা জানায়, জামালের গ্রামের বাড়ি প্রিপুরার অভ্যান্তরে খামার বাড়ি গ্রামে। রোহিঙ্গারা বিএসএফ ও বিজিবি এর নজরদারীতে রয়েছে। ভারতীয় শুন্যরেখার ভিতরে থাকায় ওখানে সাংবাদিকদের যেতে দিচ্ছেনা বিএসএফ।
খবর পেয়ে প্রায় ১০ কিলোমিটার দূরবর্তী ধজনগর সীমান্ত পিলার নং ২০৩২-১এস এলাকায় সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, এসকল রোহিঙ্গাদের টিলার গায়ে ঘাসের উপর শুয়ে ও বসে আছে। পাশেই বিজিবি ও বিএসএফ কোম্পানি কমান্ডারা কথা বলছে। তারা দুই দফা কথা বলে ও কোনো সুরাহা করতে পারেনি। সাংবাদিক নাম শুনেই বিএসএফরা ক্ষেপে গিয়ে বলেন, যেহেতু শুন্য রেখায় ভারতের নিয়ন্ত্রণে এরা রয়েছে সুতরাং কোনো প্রকার ছবি তোলা যাবে না।
রোহিঙ্গা দু’টো পরিবারের কর্তা আবদুল গফুর ও সমির জালাল সাংবাদিকদের জানান, ২০১২ সালে এরা মায়ানমার থেকে বিতাড়িত হয়ে ভারতের জম্মু কশ্মিরে অবস্থান নেয় সেখান থেকে বিতারিত হয়ে বাংলাদেশে প্রবেশের জন্য ত্রিপুরায় আসেন। ওইখানে তাদের রেশনকার্ড ছিল। অনিশ্চয়তা থেকে মুক্তি পেতেই এরা বাংলাদেশে প্রবেশের জন্য দালাল ধরে ত্রিপুরায় আসেন। দু’টো পরিবারের মহিলারা জানায় বিএসএফ রাতে তাদের সকল কগজপত্র রেখে গেট খোলে বাংলাদেশে ঠেলে দেয়। কিন্তু বাংলাদেশর জনগণ ও বিএসএফ আকাশের নীচে আটকে দেয়। পরিবারের সদস্যরা অনাহারে অর্ধাহারে আছে বলে জানায়।
স্থানীয় অধিবাসীরা জানায়, এই এলাকাটি রোহিঙ্গা পাড়াপাড়ের জন্য দীর্ঘদিন যাবত রুড হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। ইতোপূর্বে আরো দু’বার বড় বড় দু’টো রোহিঙ্গা দলকে পুনরায় পুশব্যাক করেছে বাংলাদেশে। একই কথা বলেছেন ৬০ বিজিবির অধিনায়ক ইকবাল হোসেন এ প্রতিবেদকের সাথে আলাপকালে তিনি জানান এই সীমান্ত এলাকায় হয়তো একটি চক্রের সহায়তায় রোহিঙ্গা পারাপার হচ্ছে। এরা কসবা রেলওয়ে স্টেশনে এসে ঢাকা ও চট্টগ্রামে পাড়ি জমায়। তিনি জানান যেহেতু এরা ভারতীয় অংশে অবস্থান করছে তাদেরকে অবশ্যাই ভারতেই ফিরে যেতে হবে। এ বিষয়ে তাদের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ চালাচ্ছে।