দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। নারীরা দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছেন। সমাজের সব ক্ষেত্রে তাদের অবস্থান পাকাপোক্ত হচ্ছে। এর মধ্যে বেশিরভাগ নারীই স্বর্নিভরতার জন্য চাকুরিতে যাচ্ছেন। আর কিছু নারী এগিয়ে আসছেন ঝুঁকিপূর্ণ পেশার দিকে। নানা প্রতিকূলতাকে পেছনে ফেলে সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছেন নারীরা। নিজেদের পাশাপাশি অন্য নারীদেরও উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তুলতে সহযোগিতা করছেন। এমনি একজন নারী উদ্যোক্তা হলেন কুড়িগ্রাম জেলার রৌমারী উপজেলার মোছা. জীবন নাহার(বি,এ অর্নাস, এম,এ)। তিনি একজন নারী ,যিনি একজন সফল উদ্যোক্তা। তিনি নিজের পরিশ্রম এবং এগিয়ে যাওয়ার প্রত্যয়। এজন্য পথে পথে নানা প্রতিবন্ধকতা মোকাবেলা করতে হয়েছে জীবন নাহার কে, তবে কখনোই দমে যাননি তিনি। নিজের মেধা, মননশীলতা, কর্মনিষ্ঠা এবং একাগত্রা প্রচেষ্টার মাধ্যমে প্রতিনিয়ত এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছেন তিনি। ফলে সফলকাম হয়েছেন তিনি।
মোছা. জীবন নাহার বলেন, কুড়িগ্রাম জেলার সাথে ব্রহ্মপুত্র নদ দ্বারা যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন পূর্ব পাড় রৌমারী উপজেলা অতিদরিদ্র মানুষের স্বল্পমূল্যে স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করার লক্ষে ২০১৩ইং সালের জানুয়ারি মাসে রৌমারী ক্লিনিকের কার্যক্রম শুরু করি। বর্তমানে খুব বেশি না হলেও অল্প সময়ের মধ্যে অনেক ভালো পর্যায়ে আসতে পেরেছি। দিন দিন সেবার পরিসর বাড়ছে। বর্তমানে আমি অর্থনৈতিকভাবে বেশ স্বাবলম্বী। তাছাড়া অনেকজনের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে পেরেছি। রৌমারী ক্লিনিকে কর্মরত আছেন, ২জন টেকনিশিয়ান, ২জন নার্স, ২জন রিসিফ মেনো লিস্ট, ২ জন আয়া, ৩ জন নাইট গার্ড। রৌমারী ক্লিনিকে যন্ত্রসূমহ ডিজিটাল আলট্রা মেশিন, ডিজিটাল ী-ৎধু মেশিন, হরমোন মেশিন, এ্যানাইজার মেশিন, ই, সি, জি মেশিন, সেলকাউন্ডার মেশিন, নোবোলাইজার মেশিন। সেবাসূমহ সকল প্রকার রক্তের পরিক্ষা, সার্বিক চিকিৎসা ব্যবস্থা, সুসজিত প্যাথোলজী, দক্ষ টেকনিশিয়ান। এছাড়ও রয়েছে সুসজ্জিত ঙঞ যা জেলা পর্যায়ে দেখা যায় না। রোগী সেবা দেবার জন্য সবসময় ডাক্তারের ব্যবস্থা, অভিজ্ঞ ডাক্তারের ব্যবস্থ্য যা রোগীর বিভিন্ন প্রকার সমস্যা সমাধান করেন, হাসপাতালের সকল ডাক্তার আমাদের চিকিৎসা ব্যাবস্থাপনার উপর সন্তুষ্ঠ। বর্তমানে ক্লিনিকে প্রায় ৫০ লাখ টাকা বিনিয়োগ আছে। অর্থ উপার্জন নয় ,সেবা দেওয়াই ক্লিনিকের মূল উদ্দেশ্য।
তিনি আরও বলেন, প্রতিটি কাজে আমার স্বামী আমাকে যথেষ্ট সহযোগিতা করেছেন। সব সময় তিনি আমার পাশে থেকে সাহস জুগিয়েছেন। তার সহযোগিতায় আজ আমি এই জায়গায় আসতে পেরেছি।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল কর্মকর্তা ডাঃ হিরো আলামিন বলেন, ব্রহ্মপুত্র নদদ্বারা যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন পূর্বপাড় চরাঞ্চলে মানুষের স্বাস্থ্য সেবার সু-ব্যবস্থা করার জন্য জীবন নাহার একজন নারী হয়ে রৌমারী ক্লিনিক প্রতিষ্ঠিত করেছেন। এই ঝুঁকিপূর্ণ পেশায় সে নারী হিসাবে সফল। বাংলাদেশ সরকার ঘোষিত চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করতে কাজ করছেন এই নারী।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল কর্মকর্তা ডাঃ অনুপ কুমার বিশ্বাস বলেন, আমি একজন ডাক্তার হিসাবে বলতে পারি যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন নদী ভাঙ্গন এলাকার অতিদরিদ্র মানুষের চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করতে রৌমারী ক্লিনিকে স্বল্পমূল্যে ডিজিটাল মেশিনে পরিক্ষা নিরিক্ষা ব্যবস্থা আছে।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল কর্মকর্তা ডাঃ মো. মোমেনুল ইসলাম বলেন, রোগীদের বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার জন্য নদী পথে জেলাশহর কুড়িগ্রামে যেতে হতো। রৌমারী ক্লিনিক প্রতিষ্ঠিত হওয়ায় পর থেকে এখানে অত্যাধনিক মেশিনে মাধ্যমে স্বল্পখরচে পরীক্ষা-নিরীক্ষা হয়। রৌমারী ক্লিনিকের পরিচালক জীবন নাহার স্বাস্থ্য খাতে চরাঞ্চলে অতুলনীয় ভূমিকা রেখে চলছে।
উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা পাবন কুমার সরকার বলেন, সে একজন নারী হিসাবে স্বাস্থ্য সেবার মত ঝুঁকিপূর্ণ পেশা বেছে নিয়ে স্বর্নিভরতার অর্জন করেছে। চরাঞ্চলে স্বাস্থ্য খাতে অগ্রণী ভূমিকা পালন করছেন তিনি। তার সফলতায় এলাকাবাসী সাধুবাদ জানিয়েছেন।