জামালপুর শহর রক্ষা বাঁধ অবৈধভাবে দখল করে গড়ে তুলেছেন সাংবাদিক নির্যাতনকারী ২নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও স্ট্যাম্প ভেন্ডার হাসানুজ্জামান খান ওরফে রুনু খান। ব্রহ্মপুত্র নদে সরকারের কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত বাঁধটির উপর বিভিন্ন স্থাপনা নির্মাণ করে টুল আদায়ের নামে প্রতিনিয়ত অবৈধ অর্থ উপার্জন কোটিপতি বনে যাচ্ছেন কাউনন্সিলর রুনু খান। এতে সরকারের কোটি টাকা ব্যায়ে গুরুত্বপূর্ণ শহর রক্ষা বাধেটি দিন দিন ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে ব্রহ্মপুত্র নদে বিলীন হবার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
গত ২৯ মে বুধবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, শহর রক্ষা বাঁধ ঘেঁসেই একটি বাইপাস সড়ক নির্মাণ হচ্ছে। ফৌজদারি মোড়ের বাঁধের ঢালে মাটি কেটে অবৈধভাবে গড়ে তোলা হয়েছে বিশাল একটি বাজার।। বাজারের মধ্যে মাছ, মাংস কাঁচা মাল,মুদি, হোটেল, মুরগির, বিক্রির দোকানসহ নিত্যপণ্যের বাজার। বাজারে ১০টি মুদি দোকান, ৫টি মাংস বিক্রির, ১০টি কাঁচামালপণ্যের, ২টি হোটেল, ২টি পান দোকান, ২০টি মাছের ও ১টি মুরগির দোকান রয়েছে।
বাজারে উঠা-নামার করার জন্য কংক্রিট ব্লক উঠিয়ে সেখানে মাটি কেটে রাস্তা তৈরি করে দেওয়া হয়েছে।
স্থানীয় সুত্রে জানা গেছে, জামালপুর পৌরসভার ২ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ও স্ট্যাম্প ভেন্ডার হাসানুজ্জামান খান ওরফে রুনু প্রভাব ভাটিয়ে এই অবৈধ বাজার নির্মাণ করে দিনি মালিক হয়েছেন। তাঁর প্রভাবের কারণে সংশ্লিষ্ট স্থানীয় প্রশাসন অবৈধ বাজারটি উচ্ছেদ করতে সাহস পর্যন্ত পাচ্ছেন না। একের পর এক তিনি ব্রহ্মপুত্র নদের সরকারী খাস জমি জোর দখল করে স্থাপনা নির্মাণ করে যাচ্ছেন যেন দেখার কেই নেই। স্থানীয় লোকজনের দাবী দ্রুত সময়ের মধ্যে অবৈধ বাজারটি উচ্ছেদ করে শহর রক্ষা বাঁধটি উদ্ধারের দাবী জানিয়েছেন।
পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবোর) জামালপুর কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, জামালপুর-ময়মনসিংহ মহাসড়ক রক্ষা, জামালপুর পৌরসভা ভবন, শতবর্ষী জিলা স্কুল, পৌর কমিউিনিটি সেন্টার, এলজিইডি ভবন, সার্কিট হাউস, জেলা প্রশাসকের কার্যালয়, পুলিশ সুপারের (এসপি) কার্যালয় ও বাসভবন, সদর থানা, ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতাল, জজকোর্ট, জেলা পরিষদ ভবন, সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানসহ নানা স্থাপনা রক্ষায় ২০১৩ সালে শহর রক্ষা বাঁধটি নির্মাণ করা হয়। পুরাতন ফেরিঘাট এলাকার ব্রহ্মপুত্র সেতু থেকে শহরের পাথালিয়া পর্যন্ত এর দৈর্ঘ্য সাড়ে পাঁচ কিলোমিটার। এটি নির্মাণে সে সময়য়ে প্রায় ৫১ কোটি টাকা ব্যয় হয়েছিল।
নাম গোপন রাখার শর্তে কয়েকজন দোকানী জানান, পুরো বাজারটি রুনু কাউন্সিলরের দখলে। সেই এখানে দোকান বসানোর অনুমতি দিয়েছে। তার আশীর্বাদ ছাড়া এখানে কেউ দোকান করতে পারে না।
শুধুই কি বাজার কাউন্সিলর রুনু খান জাল দলিল তৈরী করে বিপুল পরিমানে খাস জমি দখলে নিয়েছেন। সেজেছেন নদীর মালিক।
এ বিষয়ে কাউন্সিলর হাসানুজ্জামান খান রুনুর সাথে মোবাইলে একাধিকবার যোগাযোগ করা চেষ্টা করেও কোন মন্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি। সাংবাদিক নির্যাতনের ঘটনা ও মামলার পর থেকে তিনি মোবাইল ফোন বন্ধ করে গাঁ ঢাকা দিয়েছেন। (তার মোবাইল নাম্বার-০১৭১৪-৫৪৩২১৮)
এ বিষয়ে জামালপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী নব কুমার চৌধুরী বলেন, বাজারটি সম্পুর্ণরূপে অবৈধ। এ বাজারের কারণে শহর রক্ষা বাঁধ চরম ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ্য হচ্ছে। একাধিক বার পৌরসভার মেয়র ও জেলা প্রশাসক বরাবর চিঠি দিয়েছি বাঁধের উপর হতে অবৈধ বাজার উচ্ছেদ করা সম্ভব হয়নি বলে জানান। এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক আহমেদ কবীর তিনি বলেন, জাল দলিলে যতই খাস জমি দখল করুক নদীর মালিক কেউ না। তাদের কোন লাভ হবেনা। দ্রুত সময়ের মধ্যে বাঁধের উপর বাজারটি ভেঙে দেওয়া হবে বলে তিনি সাংবাদিকদের আশ^াস দিয়েছেন।