যশোরের কেশবপুর উপজেলার বগা জিসি শিকারপুর ভায়া বুড়িহাটি পর্যন্ত ৬.৪০ কিলোমিটার মাটির রাস্তার কারণে ২০ গ্রামের প্রায় ৫০ হাজার লোকের চলাচলে দীর্ঘ ৪০ বছর ধরে চরম দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। প্রতি বর্ষা মওসুমে স্কুল, কলেজ পড়-য়া শিক্ষার্থীদের হাঁটু পর্যন্ত কাদা ভেঙে বিদ্যালয়ে যেতে হয়। রাস্তাটি পাকাকরণের দাবি এখন গণদাবিতে পরিণত হয়েছে। সরকারিভাবে ওই রাস্তা পাকাকরণে ২ বার বারাদ্দ দেয়া হলেও শেষ মুহূর্তে এলাকার আওয়ামী লীগ নেতারা প্রভাব খাটিয়ে কেটে অন্যত্র নিয়ে যাওয়ার কারণে জনগণের এ দাবি অপূর্ণই রয়ে গেছে।
এলাকাবাসি জানান, কেশবপুর উপজেলার বগা জিসি শিকারপুর ভায়া বুড়িহাটি পর্যন্ত ৬.৪০ কিলোমিটার একটি মাটির রাস্তা রয়েছে। এ রাস্তা দিয়ে মজিদপুর, সাগরদাঁড়ি, বিদ্যানন্দকাটি ও হাসানপুর ইউনিয়নের নেহালপুর, শেখপুরা, আওয়ালগাতি, বুড়িহাটি, কাবিলপুর, বারুইহাটি, শিকারপুর, পাত্রপাড়াসহ কমপক্ষে ২০ গ্রামের ৫০ হাজার লোক চলাচল করে থাকেন। জনগণের ব্যাপক চলাচলের কারণে প্রতি বর্ষা মৌসুমে রাস্তাটিতে হাঁটু পর্যন্ত কাদা হয়ে থাকে। আশপাশের গ্রামগুলির শতাধিক শিক্ষার্থীকে প্রতিদিন সাগরদাঁড়ি কারিগরি মগহাবিদ্যালয়, নেহালপুর মাদ্রাসাসহ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়াশুনায় আসা যাওয়ায় সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হয়। এ ছাড়া পথচারী ও হাটুরেরা বাজার সওদা সারতেও রাস্তাটি ব্যবহার করে থাকেন। ফলে এলাকার জনগণকে বাধ্য হয়ে সাগরদাঁড়ি, শুড়িঘাটা, হাসানপুর বাজারে ঢুকতে ৫ থেকে ৭ কিলোমিটার পথ ঘুরে গন্তব্যে পেঁৗঁছাতে হয়। বর্ষা মৌসুমে এলাকার কৃষকদের উৎপাদিত কৃষিপণ্য ওই বাজার দুটিতে বিকিকিনি করতেও চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়। ব্যবসায়ীদেরও ঝামেলা পোহাতে হয়। একটু বৃষ্টি হলেই রাস্তাটিতে হাঁটু পর্যন্ত কাদার সৃষ্টি হয়।
ওই রাস্তাটি ইটের সোলিংকরণে ২ বার স্থানীয় সংসদ সদস্য বরাদ্দ দিয়েছেন। কিন্তু সমস্ত রাস্তাটির ২ জায়গায় সামান্য একটু কাজ করে প্রকল্প শেষ করেছেন প্রভাবশালী মহল। রাস্তা দিয়ে ভারী যানবাহন চলার কারণে বর্তমান ওই ইটের সোলিং দেবে গিয়ে অসংখ্য খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে। ফলে রাস্তাটি দিয়ে বর্তমান পায়ে হেটে যাওয়াও কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে।
হাসানপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান প্রভাষক জুলমত আলী বলেন, এলাকাবাসী দীর্ঘদিন ধরে রাস্তাটি পাকাকরণের দাবি জানিয়ে আসলেও তা দীর্ঘ ৪০ বছর ধরেও বাস্তবায়ন হয়নি। রাস্তাটি পাকাকরণ খুবই প্রয়োজন। বর্তমান সরকারের সময়ে তার এলাকার রাস্তাঘাটের উন্নয়ন হয়েছে। তিনি দ্রুততম সময়ের মধ্যে ওই রাস্তাটিও পাকাকরণ দাবি জানান।
এ ব্যাপারে উপজেলা প্রোকৌশলী মো. মুনছুর রহমান বলেন, এ উপজেলায় যে সমস্ত রাস্তা এখনও কাঁচা রয়েছে তাঁর তালিকা করে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। ওই ৬.৪০ কিলোমিটার রাস্তার মধ্যে ৩ কিলোমিটার রাস্তা পাকাকরণে এলজিইডির উন্নয়ন প্রকল্পের প্রফরমা (ডিপিপি) অন্তর্ভূক্ত হয়েছে। বরাদ্দ মিললে পাকাকরণ করা হবে।