রাজধানীর বাড্ডা এলাকায় গুজবের গণপিটুনিতে নিহত তাসলিমা বেগম রেনুর (৪০) দাফন সম্পন্ন হয়েছে।
রোববার রাতে রেনুর জানাজা শেষে তার বাবার বাড়ি লক্ষ্মীপুরের রায়পুরের উপজেলার সোনাপুর গ্রামের পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।
মাকে দাফনের পর থেকে তার শিশু কন্যা তুবার (৪) কান্না যেন থামছেই না। মায়ের কথা বলেই ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদছে সে।
মা ফিরে আসবে মিথ্যা সান্ত্বনায় কিছু সময়ের জন্য কান্না থামানো হলেও ফের কাঁদছে তুবা।
মা ড্রেস নিয়ে কখন ফিরবে তা জিজ্ঞাসা করছে বার বার। তার কান্নায় শোক ছড়িয়ে শোকের মাতম চলছে রেনুর স্বজনদের মধ্যেও।
তুবার ও তার ১১ বছরের ভাইয়ের লেখাপড়ার দায়িত্ব নিয়ে রেনু হত্যায় সুষ্ঠু বিচার পেতে পরিবারটিকে আইনি সহায়তা দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন লক্ষ্মীপুর-২ আসনের এমপি কাজী শহীদ ইসলাম পাপুল।
রেনুর শিশুকন্যা তুবা তিনি বলেন, আজ থেকে তুবা ও তার ভাই বড় হবে আমার পরিচয়ে। তারা দু’জনই আমার সন্তান। তাদের পড়ালেখা থেকে শুরু করে ভবিষ্যৎ নিয়ে যত ভাবনা আমার। এ হত্যার বিচার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হোক সে দাবি আমারও।
তিনি আরও বলেন, আপনারা গুজবে কান দেবেন না। ছেলেধরা সন্দেহে কাউকে গণপিটুনি দিয়ে অপরাধ হাতে তুলে নেবেন না।
প্রয়োজনে সন্দেহ হলে পুলিশকে জানানোর পরামর্শ দিয়েছেন এ জনপ্রতিনিধি।
রেনুর স্বজনেরা জানান, আগামী বছরের জানুয়ারিতে বড় ভাই আলী আজগরের কাছে আমেরিকায় যাওয়ার কথা ছিল রেনুর। কিন্তু মেয়েকে ভর্তির জন্য স্কুলের খোঁজ নিতে গিয়ে না ফেরার দেশে চলে গেলেন তিনি।
গত ২০ জুলাই সকালে ঢাকার উত্তর পূর্ব বাড্ডা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে গণপিটুনিতে নিহত হন রেনু।
রেনুর ভাগ্নে ও মামলার বাদী সৈয়দ নাসির উদ্দিন টিটু জানান, তিনি পুলিশের প্রাথমিক কার্যক্রম দেখেছেন। এখন দ্রুত বিচার ও তার বাস্তবায়ন চান।
নিহতের স্বজনরা জানান, দুই বছর আগে স্বামীর সঙ্গে বিচ্ছেদ হয় রেনুর। এরপর থেকে সন্তানদের নিয়ে মহাখলী ওয়ারলেস এলাকার একটি বাড়া বাড়িতে থাকতেন তিনি।
নিহত রেনু একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কম্পিউটার অপারেটর হিসেবে চাকরি করতেন। মাহিন হোসেন নামে তার ১১ বছরের এক ছেলেও রয়েছে।