লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ উপজেলা ব্রক্ষপাড়া গ্রামে পরকিয়া অজুহাতে শালিসীদের দেওয়ায় রায়ের অপমান সহ্য করতে না পেরে বৃহস্পতিবার গভীর রাতে দিনমজুর মোঃ খোকন মিয়া বাড়ির পুকুর পাড়ে আম গাছে গলার ফাসঁ লাগিয়ে আত্মহত্যা করে। শুক্রবার দুপুরে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে জেলা মর্গে প্রেরন এবং শিউলী বেগম ও তাহেরা বেগম নামের দুই নারীকে আটক করেছে। নিহত মোঃ খোকা ফজল হকের ছেলে।
সুত্রে জানায়, উপজেলার ব্রক্ষপাড়া গ্রামের কামিলা বাড়ির ফজল হকের সাথে পার্শ্ববর্তি বসতঘরের সোহাগ হোসেনের পরিবারে দীর্ঘ কয়েক বছর যাবত সম্পত্তি সংক্রান্ত বিরোধ চলে আসছে। উক্ত বিরোধের জের ধরে বৃহস্পতিবার রাতে কাঞ্চনপুর ইউপি যুবলীগের আহবায়ক রবিন হাসান রব,যুগ্ন আহবায়ক মোরশেদ আলম,চিহিৃত চাঁদাবাজ সোহাগ ও মাছ রাজুর পরিকল্পিত ভাবে ফজল হকের ছেলে মোঃ খোকন মিয়াকে বাড়ির উঠান থেকে আটক করে শালিসী বৈঠকে বসে। এ সময় সোহাগের মা শিউলী বেগম,একই বাড়ির তাহেরী বেগম অভিযোগ তুলে খোকন মিয়া একই বাড়ির মনু মিয়ার স্ত্রী আকলিমা বেগমের পরকিয়ার করছে। যুবলীগের আহবায়ক রবিন হাসান রব,যুগ্ন আহবায়ক মোরশেদ আলম বৈঠকে বসেই খোকনের ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করে এবং তাৎক্ষনিক ১৫ হাজার টাকা দেওয়ার জন্য চাপ সৃষ্টি করে। বাড়ির লোকজনের মধ্যে ফারুক,রুবেল,আয়েশা বেগম ও নিহতের ভাই ইয়াসিনসহ কয়েকজন বলেন,শালিসদার ১৫ হাজার টাকার জন্যে অপেক্ষা করার মাঝেই খোকন বসতঘর থেকে বাহির হয়ে বাড়ির পুকুরের পুর্ব পাড়ে আম গাছে গলা ফাসঁ লাগিয়ে আত্মহত্যা করে। খোকনের মা লাশ দেখে চিৎকার দিলে বাড়ির লোকজন জড়ো হওয়ার সাথে সাথেই কথিত শালিসী বৈঠকের শালিসদাররা পালিয়ে যায়। এব্যাপারে মুঠোফোনে অভিযুক্ত যুবলীগের যুগ্ন আহবায়ক মোরশেদ আলম বলেন,রাত ২টার দিকে সোহাগ আমাকে ফোন করে বাড়িতে নিয়ে যায়। আমি শালিসী বৈঠকে ছিলাম না এমনকি কোন টাকা দাবী করি নাই। নিহতের পরিবারের সাথে আমার দীর্ঘদিন যাবত একটি মামলা চলে আসছে। উক্ত মামলার জের ধরে আমাকে ফাঁসানোর চেষ্টা চলছে। স্থানীয় ইউপি মেম্বার রহমত উল্যাহ বলেন,সোহাগ পুর্ব পরিকল্পিত ভাবে টাকা আদায় করতে খোকনের বিরুদ্ধে পরকিয়ার অভিযোগ তোলে এবং মোরশেদ আলম,মা রাজুকে প্রভাবিত করে নিজেরাই চেয়ারম্যান,মেম্বার কিংবা গ্রাম পুলিশকে না জানিয়ে শালিসী বৈঠকে করে। ঘটনাস্থলে রামগঞ্জ থানার এস আই কাওসারুজ্জামানকে পাঠানো হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য কামিলা বাড়ির শিউলী বেগম ও তাহেরী বেগমকে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। শালিস বৈঠকে পরকীয়ার অভিযোগে কোন জরিমানা করা হলে কাউকে ছাড় দেয়া হবে না। লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য জেলা হসপিটাল মর্গে প্রেরন করা হয়েছে।