ফরিদপুরের চরভদ্রাসন উপজেলা সদরে বালিয়া ডাঙ্গী (হিন্দু) গ্রামে জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের জে¦র ধরে শুক্রবার সকাল ৭ টায় সালিশ বৈঠকের মধ্যে হামলার শিকার হয়েছেন মৃত ছুরমান হাওলাদারের ছেলে শুকুর হাওলাদার (৫৫)। সালিশ বৈঠকে হামলার শিকার হওয়ার পর নির্যাতিত গৃহকর্তা আতœরক্ষার জন্য নিজ বাড়ীতে লুকালে প্রতিপক্ষরা দ্বিতীয় দফায় ওই বসতবাড়ী ভাংচুর ও মারধরের ঘটনা ঘটিয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। প্রতিপক্ষরা হলেন- একই গ্রামের জালাল মুন্সি (৫০), মনোয়ারা বেগম (৪০), দেলোয়ার মুন্সি (৩৫), রাকিব মুন্সি (২৫) ও নবাব আলী হাওলাদার (৪৫) সহ তাদের সাঙ্গপাঙ্গরা। প্রতিপক্ষরা ওই বসতবাড়ীতে ঢুকে শুধু হামলা ও ভাংচুর করেই ক্ষান্ত হয়নি বরং নগদ অর্থ ও স্বর্ণালঙ্কার লুটপাটের ঘটনা ঘটিয়েছে বলেও অভিযোগ ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারের। এ ঘটনায় গৃহকর্তা শুকুর হাওলাদার (৫৫) ও তার স্ত্রী ছুরাইয়া বেগম (৪৫) আহত অবস্থায় ফরিদপুর সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে বলে জানা যায়।
তবে শুক্রবার দুপুরে প্রতিপক্ষ মনোয়ারা বেগম ও তার স্বামী নবাব আলী হাওলাদারকে এ ব্যপারে জিজ্ঞেস করলে তারা জানায়, “ সালিশ বৈঠকে মারামারির ঘটনা হয়েছে সত্য, তবে বসতবাড়ী ভাংচুরের ঘটনা হয় নাই, আমাদের স্বজনরা শুধু শুকুর হাওলাদারের বাড়ীর সীমানায় গিয়েছিল কিন্তু কেউ ঘরের মধ্যে ঢুকে নাই”।
এ ব্যপারে চরভদ্রাসন থানার এসআই খাইরুল ইসলাম জানান, “ ঘটনার পর আমি সরেজমিনে পরিদর্শন করেছি। বসতবাড়ী ভাংচুরের কিছু নমুনা দেখেছি। ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারের সদস্যরা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে, বাদীপক্ষ থানায় এসে এজাহার দিলে মামলা নেওয়া হবে”।
জানা যায়, কিছুদিন ধরে দু’পক্ষের মধ্যে জমিজমা সংক্রান্ত ও আর্থিক লেনদেন নিয়ে বিরোধ চলছিল। ঘটনার দিন সকালে নির্যাতিত শুকুর হাওলাদারের বাড়ী পাশে শেখ সামসুদ্দিন শেখের বাড়ীর আঙিনায় দু’পক্ষের বিবাদ মিমাংষার জন্য স্থানীয়রা এক সালিশ বৈঠকে বসেন। চরভদ্রাসন ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আঃ রাজ্জাক মৃধার সভাপতিত্বে এ সালিশ বৈঠক চলাকালে প্রতিপক্ষরা হঠাৎ করে শুকুর হাওলাদারের ওপর চড়াও হয়। হামলাকারীরা সালিশ বৈঠকের মধ্যে তাকে কিলঘুষি লাথি মেরে মাটিতে ফেলে দিয়ে এলাপাথারী মারধর করতে থাকে। এ সময় জীবন বাঁচানোর জন্য গৃহকর্তা দৌড়ে পালিয়ে নিজবাড়ীতে আশ্রয় নেয়। কিন্তু হামলাকারীরা লোহার সাবল ও ছ্যান দ্যা নিয়ে তার বসত ঘরে ঢুকে পরিবারের সদস্যদের মারধর করা সহ আসবাবপত্র ভাংচুর করে বলে অভিযোগ। এ সময় সালিশ বৈঠকের উপস্থিত লোকেরা দু’পক্ষকে শান্ত করে চলে যায়। মাত্র আধা ঘন্টা পর দ্বিতীয় দফায় প্রতিপক্ষরা শুকুর হাওলাদারের বাড়ীতে উঠে এসে তারা পূনঃবার হামলা চালায় বলেও অভিযোগ ক্ষতিগ্রস্থদের। এতে ওই বাড়ীতে অবস্থানরত গৃহকর্তা ও গৃহকর্ত্রী গুুরুতর আহত হয়। হামলাকারীরা বসতবাড়ী ভাঙচুর করে ঘরে রক্ষিত নগদ ৬০ হাজার টাকা ও দেড়ভরি ওজনের স্বর্ণালঙ্কার লুটে নেয় বলেও অভিযোগ রয়েছে।