বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলার ২৯ নং কেশরতা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জরাজীর্ণ ভবনে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের ঝুঁকি নিয়ে পাঠদান চালিয়ে আসছেন শিক্ষকরা। যে কোনো সময় বিদ্যালয়ের ভবন ধসে প্রাণহানির মত ঘটনা ঘটতে পারে বলে ধারণা করছেন স্থানীয়রা। আতঙ্ক নিয়ে ক্লাস নিতে হচ্ছে শিক্ষকদের। তাছাড়া বিকল্প কোন কক্ষ বা ভবন না থাকায় ওই জরাজীর্ণ ভবনেই বাধ্য হয়ে ক্লাস চালিয়ে যেতে হচ্ছে বলে জানান স্কুল কর্তৃপক্ষ।
স্কুল সূত্রে জানা যায়, কেশরতা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এই ভবনটি স্থাপিত হয় ১৯২১ সালে। কেশরতা গ্রামের দানবীর ইব্রাহিম আলী আকন্দ ৪০ শতক জমি বিদ্যালয়ের নামে দান করেন। প্রতিষ্ঠিত ওই বিদ্যালয়টি ১৯৯০ সালে ভবনটি সাধারণ শিক্ষা প্রকল্পের আওতায় টিনসেড একতলা ভবন নির্মাণ করা হয়। দীর্ঘদিন সংস্কারের অভাবে বিদ্যালয়টি ঝুঁকিপূর্ণ হলেও সংশ্লিষ্ট দপ্তর কর্তৃক আজও ভবনটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়নি। বর্তমানে বিদ্যালয়টিতে ১৪৫ জন শিক্ষার্থী এবং ৬ জন শিক্ষক রয়েছেন।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বর্ষা মৌসুমে বিদ্যালয় ভবনটির টিনের ছাউনীতে মরিচা ধরে মাঝে মাঝে ফুটো হওয়ার কারণে বৃষ্টি হলে পানি পড়ে। জরাজীর্ণ ক্লাস রুমে নেই পর্যাপ্ত আলো ও ফ্যানের ব্যবস্থা। সেমিনার লাইব্রেরি থাকলেও তাতে নেই চেয়ার, টেবিল ফ্যান লাইট। এ ছাড়া বিদ্যালয় কক্ষের দেয়াল গুলো ফেটে যাওয়ার ফলে ও কাঠের দরজা গ্রীলের জানালা গুলো ভেঙ্গে যাওয়ার কারণে বৃষ্টির পানির সাট লেগে ক্লাসরুমে ঢুকে ভিজে যায় আসবাবপত্র ও শিক্ষার্থীরা। বারান্দার খুটি গুলোর সুরকি খসে গিয়ে রড বেড়িয়ে পড়েছে। যে কোন সময় এটি ধসে পড়ে শিশুদের প্রাণহানির ঘটনা ঘটতে পারে। তাই ঝড়ো হাওয়া ও ভারী বর্ষণ হলে আতঙ্কে থাকতে হয় অভিভাবদেরও। কেশরতা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অভিভাবক জিল্লুর রহমান, জাহাঙ্গীর আলম, জাহিদুল ইসলাম জানিয়েছেন, ক্লাস চলাকালীন সামান্য ঝড়ো হাওয়া ও বৃষ্টিপাত হলেই শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মনে বিদ্যালয়টি ভেঙ্গে পড়ার আশঙ্কা তৈরি হয়। তারপরও জীবনের ঝঁকি নিয়েই পড়ালেখা চালিয়ে যাচ্ছেন বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলার সদর ইউনিয়নের কেশরতা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
এ ব্যাপারে ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মাসুদা সুলতানা জানান, বিদ্যালয়টি বর্তমানে খুবই ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। ভয়ে ভয়ে ক্লাস নিতে হয় আমাদের। বর্তমানে বিদ্যালয়ে ১৪৫ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। দুই শিফটে ক্লাস করতে হয়।। বর্তমানে বিদ্যালয়টির শ্রেণী কক্ষের পাশাপাশি শিক্ষকদের রুমটিও বেশ ঝুঁকিপূর্ণ। তাই বিদ্যালয়ের ভবনটি নতুন ভাবে করা না হলে যে কোন সময় ভবনটি ধসে পড়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের জানমালের ক্ষতির কারণ হতে পারে। এ বিষয়ে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সামছুল ইসলাম দেওয়ান জানান, কেশরতা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ব্যাপারে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে। পর্যবেক্ষণ করে বরাদ্দ পেলেই ভবনটির নির্মাণ কাজ শুরু করা হবে বলে তিনি জানান।