কয়েক বছর আগে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ প্রধান মন্ত্রীর কার্যালয় কর্তৃক দেশের প্রতিটি জেলায় বেকার যুবকদের মাঝে কর্ম সৃজন ও কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে একটি করে অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলার ঘোষনা দেয়। ওই ঘোষনা দেয়ার পরপরই তড়িৎ গতিতে তৎকালিন নওগাঁর ১ আসনের জাতীয় সংসদ সদস্য (বর্তমান খাদ্য মন্ত্রী) সাধন চন্দ্র মজুমদার তৎকালীন উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আলহাজ¦ শামসুল আলম শাহ চৌধুরী ও তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ ফাহাদ পারভেজ বসুনীয়া সম্মিলিত ভাবে নওগাঁ জেলার সীমান্তবর্তী সাপাহার উপজেলাকে অর্থনৈতিক অঞ্চল হিসেবে স্বীকৃতি দানের জন্য সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগে জোর সুপারিশ পাঠিয়ে দেন। অবশেষে এখন সেই ঘোষনা পূরন হতে চলেছে। সেই উপলক্ষ্যে নওগাঁ জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে সাপাহার উপজেলার জিরো পয়েন্টে মাননীয় প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশের জন্য এক জনসমাবেশের আয়োজন করা হয় শনিবার বিকেল সাড়ে ৩টায়।
অনুষ্ঠিত জনসভায় সরকারের খাদ্য মন্ত্রী ও নওগাঁ-১আসনের জাতীয় সংসদ সদস্য সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেন, বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলাগড়ার স্বপ্নগুলি পূরন হতে দেখে দেশে এক শ্রেণীর রাজনৈতিক দলের গাত্রদাহ শুরু হয়েছে। বঙ্গবন্ধুর কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা যখন তার বাবার স্বপ্ন পূরনে ভিশন ঘোষনা দিয়ে তা একের পর এক এক করে পূরন করে চলেছেন ঠিক তখনই বিরোধী দল নামীয় কিছু কিছু রাজনৈতিক দলের নেতকর্মীগন সহ্য করতে না পেরে দেশের জনগনকে সাথে না পেয়ে তারা বিদেশী চক্রের সাথে হাত মিলিয়ে দেশের বদনাম করতে মাঠে নেমেছে। বাংলদেশের উন্নয়নকে বাধা গ্রস্থ করার স্বপ্ন তাদের কোন দিনই পূরন হবে না। শনিবার বিকেল সাড়ে ৩টাই নওগাঁ জেলা প্রশাসনের আয়োজনে সাপাহার উপজেলার জিরো পয়েন্টে মাননীয় প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ উপলক্ষে আয়োজিত এক জনসমাবেশ ও আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য দিতে গিয়ে কথাগুলো বলেন। প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনা কর্তৃক নওগাঁর সাপাহার উপজেলায় অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার ঘোষনার প্রতি অভিনন্দন ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ উপলক্ষে এবং নওগাঁ জেলা প্রশাসক মোঃ হারু অর রশিদ এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত জনসভায় তিনি আরোও বলেন, সাপাহার উপজেলায় ইকোনিমিক জোন প্রতিষ্ঠিত হলে সাপাহারসহ আশে পাশের উপজেলা গুলোতেও উন্নয়নের ছোঁয়া লাগবে। হাজার হাজার বেকার যুবকের কর্মস্থানের পথ সুগম হবে। এ অঞ্চলের মানুষের সুখে দিন কাটাবে। সাপাহার অর্থনৈতিক জোনসহ তিনি দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের উন্নয়নের কথা তুলে ধরে তার বক্তব্য প্রদান করেন। এ সময় অন্যান্যের মধ্যে প্রধান মন্ত্রীকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করে বিশেষ অথিতি হিসেবে উপস্থিত থেকে সরকারের নির্বাহী সদস্য (অতিরিক্ত সচিব) বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের মোঃ হারুন অর রশিদ, উপ-মহাপুলিশ পরিদর্শক একেএম হাফিজ আক্তার বিপিএম (বার), নওগাঁ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুল মালেক,নওগাঁ জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট ফজলে রাব্বী, নওগাঁর পুলিশ সুপার প্রকৌশলী আঃ মান্নান মিয়া বিপিএম, ১৪বিজিবি ব্যাটালিয়ান অধিনায়ক লেঃ কর্নেল মোঃ জাহিদ হাসান, ১৬বিজিবি ব্যাটালিয়ান অধিনায়ক লেঃ কর্নেল তুহিন মোহাম্মাদ মাসুদ, সাপাহার উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আলহাজ¦ শাহজাহান হোসেন প্রমুখ এবং স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কল্যাণ চৌধুরী। জনসভায় হাজার হাজার শ্রোতা দর্শক উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ, নওগাঁ জেলায় অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠায় এলাকার সীমান্তবর্তী সাপাহার-খঞ্জনপুর বিজিবি ক্যাম্পের অদুরে ভারতের নিকটবর্তী দক্ষিন দিনাজপুর জেলার তপন থানার দক্ষিনে উপজেলা সদরের অদুরে খেড়ুন্দা মৌজায় সাপাহার-খঞ্জনপুর বিওপি ক্যাম্প রাস্তার উত্তর পার্শ্বে জাতীয় সড়ক, নদী, আকাশ পথ, বিদ্যুত ব্যবস্থাসহ যাবতীয় অবকাঠামোগত সুবিধাদির প্রতি লক্ষ্য রেখে ২৫৫.১৫একর সম্পত্তির অধিগ্রহনের প্রস্তাব জেলা প্রশাসকসহ সংশ্লিষ্ট বিভাগে পাঠানো হয়। বর্তমানে তারই ফলশ্রুতিতে খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার, বর্তমান উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আলহাজ শাহজাহান হোসেন ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কল্যাণ চৌধুরীর ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় ১২সেপ্টেম্বর প্রধান মন্ত্রী তার কার্যালয়ে সাপাহারে অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার অনুমোদন ঘোষনা দেন। মন্ত্রী ও তৎকালীন উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এবং নির্বাহী অফিসারের নির্বাচন করা জায়গায় অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠিত হলে ব্যাবসা কেন্দ্রের সকল প্রকারের সুবিধাদিসহ জমজমাট অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে উঠবে। এলাকার হাজার হাজার শিক্ষিত বেকার যুবক এবং বেকার শ্রমিকগনের আত্মকর্মসংস্থানের পথ সুগম হবে বলে এলাকার অভিজ্ঞমহল মনে করছেন।