পদ্মার পানি বেড়ে যাওয়ায় রাজবাড়ীতে শুরু হয়ে তীব্র ভাঙ্গন। এরইমধ্যে নদী গর্ভে ধ্বসে গেছে অন্তত তিন’শ মিটার এলাকা। হুমকিতে রয়েছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, বসতবাড়ি, শহর রক্ষা বাধসহ বহু স্থাপনা। শনিবার মধ্যরাতে হঠাৎই রাজবাড়ী শহরের গোদার বাজার এলাকায় শুরু হয় তীব্র ভাঙ্গন।
রোববার দুপুরে সরেজমিনে গোদার বাজার এলাকায় গিয়ে দেখাযায়, সেখানে একের পর এক বড় বড় মাটির চাপ ভেঙ্গে পরছে। উৎসুক জনতা ভীর করেছে নদী ভাঙ্গন দেখতে। এ সময় দেখাযায়, গোদার এলাকার ব্যবসায়ী গোলাম মস্তফার ইট ভাটার অন্তত তিন শত মিটার এলাকা নদীগর্ভে চলেগেছে।
ভাটার সহকারী পরিচালক আল আমিন মোস্তফা বলেন, হঠাৎ করে নদী ভাঙ্গন শুরু হওয়ায় আমরা দিশে হারা হয়ে পরেছি। এরইমধ্যে আমাদের অন্তত ১৫ হাজার তৈরি করা ইট নদীতে চলে গেছে। যেস্থানে ভাঙ্গন শুরু হয়েছে আর মাত্র ৫০ থেকে ৬০ গজ এলাকা ভাঙ্গলেই শহর রক্ষা বাঁধ ভেঙ্গে যাবে। পানি প্রবেশ করবে রাজবাড়ী শহরে। এখনই ব্যবস্থা গ্রহন না করলে ভয়ঙ্কর অবস্থার রুপ নিবে।
গোদার বাজার এলাকার ৬০ বছর বয়সী বৃদ্ধা আলেয়া বেগম বলেন, নদীর শো শো শব্দে দুই দিন যাবৎ আমরা ঘুমাতে পারি না। কখন যেন আমাদের শেষ সম্বল বসত ভিটা নদী গর্ভে চলে যায়।
এ সময় একই এলাকার বাসিন্দা খোদেজা বলেন, গোদার বাজার ঘেষেই রয়েছে অন্তত পাচটি বিদ্যালয়, রয়েছে দুটি মসজিদ ও শত শত বসত বাড়ি। আমরা এখন কোথায় যাবো তারও কোন ঠিক ঠিকানা নেই। তিনি অভিযোগ করে বলেন এই এলাকায় ভাঙ্গনরোধে কাজ হয়েছিলো কিন্তুু সঠিক নিয়মে বালুর বস্তা না ফেলায় আবারও ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে।
রোববার দুপুরে ভাঙ্গনের খবর পেয়ে ভাঙ্গন এলাকা পরিদর্শনে আসেন পানি উন্নয়ন বোর্ড পাউবো’ রাজবাড়ীর নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ সফিকুল ইসলাম। এ সময় তিনি বলেন, রাজবাড়ী শহরের গোদার বাজার এলাকায় নদী ভাঙ্গন এলাকার স্থায়ীবাধের মেরামত করার জন্য ৮০ কোটি টাকার একটি প্রকল্প পাশ হয়েছে। যা শুকনো মৌসুমে শুরু হবে। এছারাও হঠাৎ করে যেহেতু ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে আমরা জরুরী ভিত্তিতে ব্যবস্থা গ্রহন করবো। সোমবার থেকে জিও ব্যাগ ফেলা শুরু হবে।
রাজবাড়ী-১ আসনের সংসদ সদস্য কাজী কেরামত আলী বলেন, প্রতি বছর বষা মৌসুমে রাজবাড়ীর বিভিন্ন এলাকায় নদী ভাঙ্গন দেখা দেয়। প্রতি বছরই শত শত বিঘা ফসলী জমি ও হাজার হাজার বসতবাড়ি নদী গর্ভে বিলিন হয়। এই ভাঙ্গনের হাত থেকে রক্ষা পেতে রাজবাড়ীর গোদার বাজার থেকে দৌলতদিয়া ঘাট পর্যন্ত ১৭ কিলোমিটার এলাকার জন্য স্থায়ী প্রকল্প গ্রহন করা হবে। প্রকল্পটি পাশ হলে রাজবাড়ীবাসির নদী ভাঙ্গন আতঙ্ক থাকবে না।