ফরিদপুরের চরভদ্রাসন উপজেলার বিভিন্ন খাল বিল জুড়ে ভেসাল বাঁধ পুতে গত দু’সপ্তাহ ধরে নীধন হচ্ছে মৌসুমের রুই কাতলা ও মৃগেল মাছের পোনা। প্রশাসনের নাকের ডগায় মৎস্য সম্পদের ধংসযজ্ঞ চালানো হলেও সংশ্লিষ্টদের মাথা ব্যাথা নেই বলে অভিযোগ রয়েছে। সম্প্রতী পদ্মা নদীতে আকস্মিক পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকার ফলে উপজেলার খাল বিল ও নদী নালায় ছয়লাব হয়ে রয়েছে ৩/৪ ইঞ্চি লম্বাকৃতি পোনা মাছ। আর এলাকার কিছু অসাধু জেলেরা খাল বিল ও নদী মোহনা বাঁধ দিয়ে আটকিয়ে ভেসাল বাঁধ পুতে প্রতিদিন মনে মন পোনা মাছ নীধন করে চলেছে। এসব অবৈধ ভেসাল বাঁধ অপসারনের জন্য সংশ্লিষ্ট প্রশাসনকে বার বার অবগত করানোর পরও তারা কর্ণপাত করছেন না বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর।
মঙ্গলবার উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান ও গাজীরটেক ইউনিয়নের চরসুলতানপুর গ্রামের অধিবাসী মো. ইলিয়াছ বেগ নান্নু জানান, “ অত্র গ্রামের একমাত্র খালের উপর ব্রীজ পয়েন্টে পর পর তিনটি ভেসাল বাঁধ পুতা হয়েছে। এসব ভেসাল বাঁধের মাধ্যমে প্রতিরাতে মনে মন পোনামাছ আটক হচ্ছে এবং বিভিন্ন বাজারে মাছগুলো বিক্রি হচ্ছে। বিষয়টি স্থানীয়রা মৎস্য বিভাগকে জানানোর পর মৎস্য কর্মকর্তা এসে পরিদর্শন করে চলে গেছে কিন্তু ভেসালগুলো অপসারন করার নির্দেশও দেন নাই”।
এ ব্যাপারে উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মালিক তানভির হোসেনকে জিজ্ঞেস করলে তিনি জানান, “ ভেসালগুলো অপসারনের জন্য আমি পুলিশ চাইলে থানা থেকে পুলিশ দিচ্ছে না। তাই ভেসালগুলো অপসারন করতে পারি নাই”। আর উপজেলা ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী কর্মকর্তা ফারজানা নাসরীন বলেন, “ আসলে মোবাইল কোর্ট ছাড়া পুলিশ দেওয়া হয় না। আমি অভিযান পরিচালনার জন্য সময় করে উঠতে পারি নাই। তবে শীগ্রই ভেসালগুলো অপসারনের ব্যবস্থা নেওয়া হবে”।
জানা যায়, উপজেলা সদর ইউনিয়নের কামার ডাঙ্গী গ্রামের কোলে রয়েছে একটি ভেসাল বাঁধ, মাথাভাঙ্গা গ্রামের খালে একটি, জাকেরের সুরা গ্রামের স্লুইস গেইট পয়েন্টে ভুবেনশ্বর ও পদ্মা নদীর সংযোগ স্থলে তিনটি ভেসাল, গাজীরটেক ইউনিয়নের চরসুলতানপুর গ্রামের খালে তিনটি ভেসাল, জয়দেব সরকার ডাঙ্গী ও হোসেনপুর গ্রামে একটি ভেসাল বাঁধ সহ পদ্মা নদী ঘেষে চরহরিরামপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন জলমহল জুড়ে রয়েছে পোনামাছ নীধনকারী বেশক’টি ভেসাল বাঁধ। স্থানীয় সূত্রগুলো জানান, প্রতিটি ভেসাল বাঁধের মালিক স্থানীয় কোনো না কোনো প্রভাবশালীর ছত্রছায়ায় থেকে পোনামাছ নীধন বাণিজ্য চারিয়ে যাচ্ছে।