বৃষ্টি হলেই ফরিদপুরের মধুখালী উপজেলার মেগচামী ইউনিয়নের মৃধা বাজারের উত্তর দিকে প্রায় দুই কিলোমিটার বিস্তৃত কাঁচা সড়কটি কাদাপানিতে একাকার হয়ে যায়। এ অবস্থায় যানবাহন চলাচল তো দূরের কথা, হেঁটে চলাচলেরও অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। এতে স্কুলগামী কোমলমতি শিশুরা চরম বিপাকে পড়েছে। এ অবস্থায় অনেক অভিভাবক তাদের ছেলে-মেয়েদের স্কুলে যেতে দিচ্ছেন না।
সরেজমিনে দেখা গেছে, মৃধা বাজার থেকে চৈতা ভিমনগর পর্যন্ত প্রায় দুই কিলোমিটার পর্যন্ত এই কাঁচা সড়কটি কাদা পানিতে একাকার হয়ে গেছে। মেগচামী ইউনিয়নের এই সড়ক দিয়ে স্থানীয় দুই-তিনটা পাড়ার লোকেরা ছাড়াও পাশের বালিয়াকান্দি গ্রামের পুরাবুয়ো, খালকুলা, ভাটিপাড়া ও খাসকান্দি গ্রামের মানুষ চলাচল করেন। গ্রামগুলো মধুখালী ও বালিয়াকন্দির সীমান্তবর্তী হওয়ায় অনুন্নত চলাচল ব্যবস্থা বিরাজ করছে এখনো। এর মধ্য দিয়েই নিতান্ত দায়ে পড়ে মানুষ যাতায়াত করছেন।
তাছড়া স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের ভরসা এই সড়কটিই। কাঁদাপানিতে সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে গ্রামের কোমলমতি স্কুল শিক্ষার্থীদের। এছাড়াও স্থানীয় কৃষকেরাও তাদের উৎপাদিত ফসল ও পণ্য আনা-নেওয়া করতে বিপাকে পড়ছেন।
স্থানীয় একটি বেসরকারি শিশু বিদ্যালয়ের পরিচালক মো. সেলিম মোল্যা বলেন, তার স্কুলে প্রায় দুই শতাধিক শিক্ষার্থী পড়াশুনা করে। কিন্তু সড়কটি দিয়ে চলাচল করতে সমস্যা হওয়ায় এদের বেশিরভাগই স্কুলে আসতে পারে না। সড়কটির আশপাশে পাঁচজন মুক্তিযোদ্ধার বাড়ি রয়েছে। পরিবারের শিশু ও কৃষকদের দুরাবস্থার কথা উল্লেখ করে তারাও সড়কটি সংস্কারের জোর দাবি জানান।
স্থানীয় বাসিন্দা মো. ডাবলু মোল্যা বলেন, এই সড়কের আশপাশে অনেক ভ্যান ও অটোচালক বসবাস করেন। দৈনন্দিন জীবিকার তাগিদে তাদের বের হতে হয়। কিন্তু রাস্তার যে অবস্থা তাতে এসব ভ্যান ও গাড়ি কাঁদায় আটকে যায়। আমাদের দৈনন্দিন জীবনে এই সড়কটির কারণে খুবই সমস্যা হচ্ছে।
মেগচামী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. হাসান আলী খান বলেন, মেগচামী সরকারি মডেল প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ এখানকার গ্রামের বাসিন্দাদের যে কোনো স্কুল-কলেজ থেকে শুরু করে হাসপাতাল, থানা, কোর্ট-কাচারি এমনকি দেশ-বিদেশের যেখানেই যাতায়াত করুক তাদের এই সড়ক দিয়েই যেতে হবে। গ্রামের কৃষকদের ফসলাদি এই সড়ক দিয়েই আনা নেওয়া করতে হয়। এজন্য সড়কটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
তিনি বলেন, আমি নিজে জনপ্রতিনিধি হয়ে অনেকবার সড়কটি সংস্কারের জন্য দরখাস্ত করেছি। এর মধ্যে এলজিএসডি থেকে গত বছর মাত্র ৫০ ফুট এইবিবি কাজ করতে পেরেছিলাম। এখনো অনেকাংশই কাঁচা। সড়কটি সংস্কারের জন্য উপজেলা চেয়ারম্যান এবং পিআই অফিসে দরখাস্ত করেছি।
এ ব্যাপারে মধুখালী উপজেলা প্রকৌশলী মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, ফরিদপুরের জন্য ৩ হাজার কোটি টাকার ডিপিপি প্রকল্প আসছে। আমরা এই প্রকল্পে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য ওই সড়কটিসহ মেগচামী ইউনিয়নের আরও কিছু সড়ক অন্তর্ভুক্ত করে দিয়েছে।
মধুখালী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মনিরুজ্জামান বাচ্চু বলেন, স্থানীয়দের যেভাবে সমস্যা হচ্ছে তাতে সড়কটি দ্রুতই সংস্কার হওয়া জরুরি। আশা করছি ডিপিপি প্রকল্প পাশ হলে এ বছরের মধ্যেই তাদের এ সমস্যার সমাধান হবে।