ময়মনসিংহের গফরগাঁও-টোক সড়কের ৭২তম কিলোমিটারে ডাকবাংলো ঘাট নামক স্থানে বানার নদীর উপর ‘বানার সেতু’ টি বুধবার সকাল ১০টায় ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ফলে ময়মনসিংহ বিভাগের গফরগাঁও উপজেলা ও ঢাকা বিভাগের কাপাসিয়া উপজেলার মধ্যে সেতুবন্ধন রচনা করেছে এই সেতু। বানার সেতুর উদ্বোধন উপলক্ষে বানার নদীর দুই পাড়ের মানুষের মাঝে খুশির জোয়ার বইছে।
গফরগাঁওয়ে দীর্ঘ প্রতিক্ষীত বানার সেতুটি প্রধানমন্ত্রীর উদ্বোধনের পর জনসাধারণের চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করা হয়েছে। এর ফলে গফরগাঁও উপজেলার দক্ষিনাঞ্চলের পাগলা থানার মানুষ অল্প সময়েই সরাসরি কাপাসিয়া, গাজিপুর ও রাজধানী ঢাকায় যেতে পারবে।
গফরগাঁও উপজেলার দক্ষিনাঞ্চল পাগলা থানায় প্রায় সাড়ে তিন লাখ লোকের বাস। এই অঞ্চলে মূলত কৃষিজীবি মানুষেরই বসবাস। উৎপাদিত শস্য বা সবজি তাঁদের নদী পেরিয়ে গাজিপুর, রাজধানী ঢাকা কিংবা অন্যত্র পাইকারি বাজারে নিয়ে যেতে হয়। ময়মনসিংহ, গাজিপুর ও কিশোরগঞ্জ জেলার বেশ কয়েকটি উপজেলার সাধারণ জনগণের দীর্ঘদিনের দাবী ছিল বানার নদীর উপর সেতু নির্মানের।
২০১১ সালের ৩১মার্চ গফরগাঁও সরকারি কলেজ মাঠে আয়োজিত এক জনসভায় এলাকায় জনগণকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বানার সেতু নির্মানের প্রতিশ্রুতি দেন। ২০১৮ সালের ২ নভেম্বর ময়মনসিংহ সফরকালে এই সেতু নির্মাণ কাজের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সড়ক ও জনপথ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশ সরকারের নিজস্ব অর্থায়নে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর প্রায় ৩২ কোটি ৯০ লাখ টাকা ব্যয়ে বানার নদীর উপর ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স রেজভী কনষ্টাকশন ২৩ মাসে এই সেতুটি নির্মান করেছে। সেতুটির প্রাক্কলিত ব্যয় ছিল ৩৮ কেটি ৭৫ লাখ টাকা। ৫ কোটি ৮৫ লাখ টাকা কম ব্যয়ে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর সেতুটি নির্মান করতে পেরেছে। ২৮২.৫৮ মিটার দীর্ঘ এবং ১০.২৫ মিটার প্রস্থ পিসি গার্ডার এই সেতুটির মোট স্প্যান ৭টি, পিয়ার ৬টি, পাইল ১০৩টি। সেতুর গফরগাঁও অংশে ১১০ মিটার কাপাসিয়া অংশে ৪৩০মিটার সংযোগ সড়ক নির্মান করা হয়েছে। এ ছাড়া সড়কের পানি নিষ্কাশনের জন্য ৪০০ মিটার সসার ড্রেন, ২০০ মিটার ক্রস ড্রেন, ১০০ মিটার ইউ ড্রেনসহ কাপাসিয়া প্রান্তে একটি বক্স কালভার্ট নির্মান করা হয়েছে।
ময়মনসিংহ সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ ওয়াহিদুজ্জামান বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর উদ্বোধনের মাধ্যমে বানার সেতুতে যানবাহন চলাচল শুরু হয়েছে। যার ফলে এ অঞ্চলের মানুষের একটি স্বপ্নপূরন হয়।