বড়াইগ্রামে অবৈধভাবে ব্যাংকিং কার্য্যক্রম চালাচ্ছে স্মল ট্রেডার্স কো-অপারেটিভ ব্যাংক লিমিটেড (এসটিসি)। বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন ছাড়া সমবায় অধিদপ্তরের উপ-আইনের ব্যত্যয় ঘটিয়ে অবাধে কার্য্যক্রম চালাচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি। এসব অভিযোগে জেলায় এসটিসি’র আরো তিনটি শাখা বন্ধ ঘোষণা করা হলেও বড়াইগ্রামে অবাধে চলছে কথিত ব্যাংকটির কার্যক্রম। ফলে অনুমোদনহীন ব্যাংকিং কার্য্যক্রম চালানো প্রতিষ্ঠানটি একসময় হায় হায় কোম্পানীতে রুপ নিতে পারে বলে স্থানীয়রা আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, উপজেলার বনপাড়া বাজারের এমএ মজিদ ম্যানশনের দোতলায় গত ১ অক্টোবর দুপুরে ব্যাংকটির নতুন শাখার উদ্বোধন করেন এসটিসি ব্যাংকের চেয়ারম্যান মির্জা আতিকুর রহমান। শাখা অফিস খুলে ইসলামি শরিয়া ভিত্তিক পরিচালনার কথা বলে সঞ্চয়, ডিপিএস, চলতি হিসাবসহ সব ধরণের ব্যাংকিং কার্যক্রম চালু করেন কর্মকর্তারা। তবে নাম ব্যাংক আর অনুমোদন সমবায় অধিদপ্তর হওয়ার খবরে শাখাটি চালু হওয়ার পর থেকেই স্থানীয়দের মাঝে মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে।
অনুসন্ধানে জানা যায়, স্মল ট্রেডার্স কো-অপারেটিভ ব্যাংক লিমিটেড (এসটিসি) সমবায় অধিদপ্তর থেকে সমবায় সমিতি হিসাবে শুধুমাত্র নারায়ণগঞ্জ জেলায় কাজ করার অনুমতি নিয়েছে। সংশোধিত উপ-আইন অনুযায়ী কর্ম এলাকার বাইরে কার্যক্রম পরিচালনা করা সমবায় সমিতি বিধিমালা ২০০৪ এর ১২(২) এর পরিপন্থি। এ ছাড়া সমবায় আইন ২০০১, সংশোধিত ২০০২ ও ২০১৩ এর ২৩(১) ধারা অনুযায়ী কোন সমবায় সমিতি তার কার্যক্রম পরিচালনার জন্য শাখা অফিস খুলতে পারবে না এবং সমবায় সমিতি আইনের ২৬ ধারা অনুযায়ী সদস্য ছাড়া অন্য কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে আমানত গ্রহণ বা ঋণ প্রদান করতে পারবে না। কিন্তু তারা এ আইনের তোয়াক্কা না করে বনপাড়ায় শাখা খুলে সমিতির পরিবর্তে ব্যাংক পরিচয়ে আর্থিক কার্য্যক্রম চালাচ্ছে। মঙ্গলবার সরেজমিনে ব্যাংকের কার্যালয়ে গেলে শাখা খোলার কোন বৈধ অনুমতি বা রেজিষ্ট্রেশন সংক্রান্ত দলিল, বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন সংক্রান্ত বৈধ কাগজপত্রাদি সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা দেখাতে পারেননি।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে শাখা ব্যবস্থাপক হুমায়ন কবীর জানান, দেশব্যাপী শাখা খোলার স্থায়ী অনুমতি চেয়ে গত ২২ সেপ্টেম্বর হাইকোর্টে রিট করা হয়েছে। রিটের রায় আমাদের পক্ষে আসবে আশা করি। তবে হাইকোর্টের আদেশের আগেই বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন ছাড়া ব্যাংক হিসাবে শাখা খোলা হল কিভাবে সে ব্যাপারে তিনি কোন উত্তর দিতে পারেননি।
উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা সুশান্ত নারায়ণ খাঁ জানান, আমাদের উপজেলায় এ প্রতিষ্ঠানের শাখা আছে জানতাম না। মূলত এটি একটি সমিতি। আইন অমান্য করে কার্য্যক্রম চালানোয় ইতোঃমধ্যে জেলা সদরসহ ৩টি শাখা বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছে জেলা সমবায় বিভাগ। এখানকার ব্যাপারে খোঁজ নিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাবো।
ইউএনও আনোয়ার পারভেজ জানান, বনপাড়ায় এই নামে কোন ব্যাংক আছে আমার জানা ছিলো না। আমি শিঘ্রই তাদের কাগজপত্র তলব করবো। সেগুলো দেখে এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।