মৌসুমের নতুন ধানে সরগরম হয়ে উঠেছে দেশের বৃহত্তম ধানের মোকাম ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ। প্রতিদিন অন্তত ১ লক্ষ হাজার মণ ধান কেনাবেচা হচ্ছে এ মোকামে। প্রতিদিনই প্রচন্ড তাপদাহে শ্রমিক সংকটে মোকামে আসা নৌকা থেকে ধান আনলোড করে ট্রাকে করে চাতাল পর্যন্ত ধান পৌছে দিতে সমস্যা হচ্চে। তাছাড়া প্রতিদিনই গরমে ৭-৮ জন শ্রমিক অসুস্থ হচ্ছে। ব্যবসায়ীরা বলেন যদি এভাবে তাপদাহ চলতে থাকে শ্রমিক সংকটে ধান সরবরাহ ব্যহত হতে থাকলে তাহলে চালের দাম বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে ব্র্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জের মেঘনা নদীর তীরবর্তী বিওসি ঘাটের বৃহত্তর এই মোকামে সিলেট, ময়মনসিংহ, হবিগঞ্জ, কিশোরগঞ্জ, সুনামগঞ্জসহ অন্তত ৭জেলা থেকে হাজার হাজার মণ ধান আমদানি হচ্ছে। এবার ধানের বাম্পার ফলন হওয়ায় মৌসুমের শুরু থেকেই মোকামে বেড়েছে ধানের সরবরাহ। সেই সঙ্গে শুকনো ধানের আমদানি বাড়ায় দামের পাশাপাশি বেড়েছে কেনাবেচাও। বর্তমানে প্রতিদিন এই মোকামে প্রায় ১ লক্ষ মণ ধান কেনাবেচা হচ্ছে, যার মূল্য প্রায় ৮-৯ কোটি টাকা। মৌসুমে মোকামে প্রতিদিন ধান লোড-আনলোডের জন্য ৭০০-৮০০ শ্রমিক কাজ করত। কিন্তু অতিরিক্ত তাপদাহের কারণে মোকামে ২৫০-৩০০ শ্রমিক কাজ করছে। ফলে ধান নিয়ে বিপাকে রয়েছেন ব্যাপারী ও ব্যবসায়ীরা। এদিকে প্রতিদিনই ৮-১০ জন শ্রমিক তাপদাহের কারণে অসুস্থ হচ্ছে। মোকামের বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে থরে থরে রাখা আছে ধানের বস্তা। এছাড়াও নদীর তীরে বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আসা নৌকা নোঙর করে ধানের বস্তা তীরে বাঁধতে ব্যাস্ত সময় পার করছেন শ্রমিকরা। মিল মালিকরা এসব নৌকায় গিয়ে ধানের তাপমাত্রা ও গুণগত মান যাচাই বাছাই শেষে দরদাম করা নিয়ে ব্যাস্ত সময় পার করছেন। বেপারীরাও ক্রেতাদের নজর কাড়তে নিজেদের আনা ধানের গুনগত মান তুলে ধরে দাম হাঁকাচ্ছেন। দামে মিললে ঘাটেই কেনা-বেচা শেষ করে ট্রাক দিয়ে এসব ধান বিভিন্ন মিলে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। বর্তমানে মোকামে বিআর-২৮ জাতের শুকনা ধান ১০০০-১০৭০ টাকা, ভিজা ধান ৯২০-৯৭০ টাকা এবং মোটা জাতের ধান ৭৬০-৮০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এই বিষয়ে আশুগঞ্জ ধানের গাল্লা শ্রমজীবী সমবায় সমিতি লিঃ এর সভাপতি কাশেম চৌধুরী জানান, আমাদের মোকামে মৌসুমে প্রতিদিন ৭০০-৮০০ শ্রমিকের প্রয়োজন হয়। কিন্তু অব্যাহতভাবে প্রচন্ড গরমে শ্রমিকরা কাজে আসতে চাই না। যারাও কাজ করে তারাই অসুস্থ হচ্ছে। এই বিষয়ে আশুগঞ্জ আতব চাউল ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি হাজী মোঃ শাহজাহান সিরাজ জানান, তীব্র গরমে ধানের মোকামে শ্রমিকদের কাজ করতে সমস্যা হচ্ছে। যদি ক্রমাগত মোকামে শ্রমিক সংকট থাকে তাহলে ধান নষ্ট হবার সম্ভাবনা রয়েছে। আর এর প্রভাব চালের দামে গিয়েও পড়বে। তাছাড়া মোকামে জায়গার সংকুলান না থাকায় শ্রমিকদের আরো সমস্যা হচ্ছে।