ভোলার বোরহানউদ্দিনে গত রোববার ঘটে যাওয়া পুলিশ-জনতা সংঘর্ষের ঘটনায় নিহত-৪ জনের মধ্যে মিজানুর রহমান(১৭) নামের এক মাদ্রাসা ছাত্রের লাশ মনপুরায় জানাযা শেষে দাফন করা হয়েছে। এদিকে ছেলের মৃত্যুতে ওই ছাত্রের মা বারবার মুর্ছা যেতে দেখা গেছে। এছাড়াও মনপুরার আরো এক ছাত্র লোকমান (১৮) গুলিবিদ্ধ হয়ে চরফ্যাশন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন বলে জানান ওই ছাত্রের পিতা মোজাম্মেল কারী।
ভোলায় ময়নাতদন্ত শেষে সোমবার দুপুর সাড়ে ১২ টায় নিহত মিজানের মরদেহ মনপুরায় নিজ বাড়িতে নিয়ে আসা হয়। পরে দুপুর সোয়া ১ টায় উপজেলার হাজিরহাট ইউনিয়নের ভূইয়ারহাট বাজারে হাজারো মানুষের উপস্থিতিতে জানাযা শেষে মাদ্রাসা সংলগ্ন কবরস্থানে দাফন করা হয়।
পুলিশের গুলিতে নিহত মাদ্রাসার ছাত্র মোঃ মিজানুর রহমান (১৭) মনপুরা উপজেলার হাজিরহাট ইউনিয়নের চরফৈজুদ্দিন গ্রামের ৯ নং ওয়ার্ডে বাসিন্দা হারুন মিস্ত্রির বড় ছেলে। দুই ভাই, দুই বোনের মধ্যে নিহত মিজানুর রহমান বড়। পুলিশের গুলিতে গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুত্বর আহত অপর মাদ্রাসার ছাত্র লোকমান (১৭) বাড়ি একই ইউনিয়নের একই গ্রামে।
জানা যায়, নিহত মাদ্রাসা ছাত্র মিজানুর রহমান ও গুলিবিদ্ধ লোকমান বোরহানউদ্দিন উপজেলার দেউলা মহিউস সুন্নাহ দারুল উলুম মাদ্রাসা ও এতিমখানার কিতাব বিভাগের শরহে জামি (দশম শ্রেণীর) ছাত্র।
নিহত ছাত্রের জানাযায় বক্তব্য রাখেন, হাজিরহাট ইউপি চেয়ারম্যান শাহরিয়ার চৌধুরী দীপক, ইমাম সমিতির সভাপতি মাও. মফিজুল ইসলাম, ইসলামি আন্দোলন বাংলাদেশ মনপুরা শাখার আহ্বায়ক মাও. মুফতি এনায়েত উল্লা, হাজিরহাট বাজার মার্কাস জামে মসজিদের ইমাম মুফতি ইউসুফ, দেউলা মহিউস সুন্নাহ দারুল উলুম মাদ্রাসার মুহতামিম মাও. আশ্রাফ আলী, যুবলীগ সম্পাদক মনিরুজ্জামান মনির, হাফেজ আবদুল মতিন, হাজি মাহবুব, মুফতি মাকছুদ এবং হাফেজ মাকছুদ।
এই সময় বক্তরা মরহুমের রুহের মাগফিরাত কামনা সহ প্রশাসনের অনুমতি নিয়ে বিক্ষোভ মিছিল করা হবে বলে জানান।
মনপুরা থানার কর্মকর্তা ইনচার্জ (ওসি) মোঃ সাখাওয়াত হোসেন জানান, বোরহানউদ্দিনে সংঘর্ষের ঘটনায় নিহত মিজানুর রহমানের লাশ স্থানীয় পুলিশ প্রশাসন, রাজনৈতিক নের্তৃবৃন্দ ও স্থানীয় বাসিন্দাদের উপস্থিতিতে জানাযা শেষে দাফন করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, ভোলার বোরহানউদ্দিনে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম (ফেসবুকে) আল্লাহ ও হযরত মুহাম্মদ (সঃ) কে নিয়ে কটূক্তির প্রতিবাদ সমাবেশে জনতা ও পুলিশের মাঝে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। পুলিশ ও মুসল্লি সংঘর্ষে ৪ জন নিহত হয়। পুলিশসহ শতাধিক আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। নিহত মুসল্লিদের মধ্যে একজন ছাত্র ও আহত এক ছাত্রের বাড়ি মনপুরা উপজেলার হাজিরহাট ইউনিয়নের চরফৈজুদ্দিন গ্রামের ৯ নং ওয়ার্ডে।
ক্যাপসন ঃ পিক-১,২
ভোলার বোরহানউদ্দিনের জনতা-পুলিশ সংঘর্ষের ঘটনায় নিহত মাদ্রাসা ছাত্র মিজানুর রহমানের মনপুরার বাড়িতে আহাজারি।
ভোলার বোরহানউদ্দিনের জনতা-পুলিশ সংঘর্ষের ঘটনায় নিহত মাদ্রাসা ছাত্র মিজানুর রহমান ও আহত লোকমানের ছবি।