ফরিদপুরের চরভদ্রাসনে ইলিশ মাছ শিকারী জেলেদের কাছ থেকে উপজেলা মৎস্য কার্যালয়ের এক সদস্য, চারজন পুলিশ ও কয়েকজন সাংবাদিক মাছ ছিনিয়ে নিয়ে নিজেরা ভাগাভাগি করে নিয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এ দলটি গত রবিবার দিবাগত রাতে ওই ব্যাক্তিরা জেলেদের নৌকায় হানা দিয়ে আনুমানিক দেড়মন ইলিশ লুট করে নেন। পরে উপজেলার গোপালপুর ঘাটে এসে মাছগুলি নিজেদের মধ্যে ভাগাভাগি করে নিয়ে যান। ওইসময় এ দলটি আনুমানিক দুই হাজার মিটার জাল জেলেদের কাছ থেকে ছিনিয়ে নিয়ে এসে গোপালপুর ফেরি ঘাটের এক ব্যবসায়ীর কাছে বিক্রি করেও যান।
এ দলের সদস্যদের মধ্যে ছিলেন উপজেলা মৎস্য কার্যালয়ের ক্ষেত্র সহকারি শামীম আরেফিন, চরভদ্রাসন থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মিজানুর রহমান ও তিন কনস্টেবল এবং চরভদ্রাসন উপজেলার সাংবাদিক লিয়াকত আলী লাবলু, ও উজ্জ্বল হোসেন এবং উজ্জলের সহযোগি মো. কামাল প্রমুখ।
গোপালপুর ঘাট মালিকের প্রতিনিধি মো. আলী মৃধা জানান, ভোর সাড়ে ৫টার দিকে ঘাটে এসে মৎস্য অফিসের লোক, পুলিশ ও সাংবাদিকরা মাছ নিজেদের মধ্যে ভাগাভাগি করে নিয়ে যান।
চরভদ্রাসন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জেসমিন সুলতানা জানান, সকালের মৎস্য কার্যালয়ের লোক, পুলিশ ও সাংবাদিকের একটি দলের মাছ চুরির খবর তিনি জানতে পেরেছেন। তিনি বলেন, নির্বাহী হাকিম ছাড়া ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালিত হতে পারে না। অসৎ উদ্দেশ্যেই ওই ব্যাক্তিগণ যে গিয়েছিলেন তা বলা যায়।
চরভদ্রাসন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হারুণ অর রশীদ জানান, আসামি ধরার করা বলে স্প্রীডবোট ভাড়া করে পদ্মায় গিয়েছিলেন এক এস আই ও তিন কনস্টবেল। কিন্ত মৎস্য অফিসের লোকের পাল্লায় পড়ে তারা নিজেদের দায়িত্ব ভুলে গিয়ে মাছ চুরিতে সহায়তা করেছে। তিনি বলেন, এস আই মিজানুর রহমান ও তিন কনস্টেবল কুতুবউদ্দিন, ফরহাদ হোসেন ও সেলিম মিয়াকে চরভদ্রাসন থানা থেকে প্রত্যাহার করে ফরিদপুর পুলিশ লাইনসএ সংযুক্ত করা হয়েছে।
উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মালিক তানভীর হোসেন বলেন উপজেলা মৎস্য কার্যালয়ের ক্ষেত্র সহকারি শামীম আরেফিনের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
চরভদ্রসন প্রেসক্লাবের সভাপতি মো. মেজবাউদ্দিন বলেন, যে সব সাংবাদিক মাছ চুরি করতে গিয়েছিলেন। এর মধ্যে লিয়াকত আলী লাবলু ও উজ্জ্বল হোসেন তার ক্লাবের সদস্য। তিনি বলেন, ওই দুই সাংবাদিকের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।