ফরিদপুরের সালথা উপজেলার কানাইর গ্রামে তৃতীয় শ্রেণির এক স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে থানায় মামলা দায়ের করায় ওই মামলার বাদিকে হুমকি দেয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে। গত বুধবার বিকেলে এব্যাপারে সালথা থানায় মামলার বাদি পারভেজ একটি সাধারণ ডায়রী (জিডি) দাখিল করেছেন।
এ অবস্থায় চরম নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছেন শিশুটির পরিবার। তারা অভিযুক্তদের আটক করার জোর দাবি জানিয়েছেন। এছাড়া তারা তৃতীয় শ্রেণির ওই স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণচেষ্টায় আটক দুই আসামীকে রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদেরও দাবি জানান। তারা জানান, এখনো আসামীদের নিকট থেকে অনেক তথ্য উদ্ধারের জন্য তাদেরকে রিমান্ডে আনা জরুরী।
থানায় দাখিলকৃত ওই জিডিতে পারভেজ অভিযোগ করেন, মঙ্গলবার বিকেলে রসুলপুর বাজারে গেলে তেগাতিয়া গ্রামের মুরাদ শেখ (৪৫), হানিফ মুন্সি (৫০) ও লুৎফর মুন্সি (৪০) তাকে দেখে অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকে। এসময় ওই মামলা তুলে না নিলে যেকোন ক্ষতি করে দিবে বলে হুমকি দেয়।
সালথা থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ সাধারণ ডায়রী দায়েরের সত্যতা স্বীকার করে বলেন, বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে। এব্যাপারে থানার একজন পুলিশ কর্মকর্তাকে বিষয়টি খতিয়ে দেখার দ্বায়িত্ব দেয়া হয়েছে।
প্রসঙ্গত,গত ২০ অক্টোবর দুপুর সাড়ে ১২ টার দিকে ঐ শিশু শিক্ষার্থী মাঠে খেলা করছিল। এসময় কানাইড় গ্রামের কুদ্দুস শেখের পুত্র বিদ্যালয়ের দপ্তরী সুজন শেখ (২৪) ও তার বন্ধু তেগাতিয়া গ্রামের মতিন খলিফার ছেলে সোহাগ খলিফা (১৮) শিশুটিকে ফুসলিয়ে বিদ্যালয়ের পুরাতন পরিত্যক্ত ভবনে নিয়ে যায়। সেখানে দপ্তরী সুজনের সহযোগীতায় তার বন্ধু সোহাগ শিশুটিকে ধর্ষনের চেষ্টা করে। শিশুটি যন্ত্রনায় চিৎকার করলে শিশুটিকে ছেড়ে দিয়ে দুইজনই পালিয়ে যায়। পরে শিশুটি বাড়ীতে গিয়ে তার মাকে ঘটনাটি জানায়। এ সময় শিশুটির শারীরিক অবস্থা খারাপ হওয়ায় অভিভাবকেরা তাকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করায়। খবর পেয়ে সালথা থানা পুলিশ রাতেই দুইজনকে গ্রেফতার করে। পরদিন সকালে শিশুটির চাচা বাদী হয়ে দুই জনকে আসামী করে সালথা থানায় মামলা দায়ের করে। শিশু ধর্ষণচেষ্টা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা নিপূণ মজুমদার বলেন, শিশুটির জবানবন্দি রেকর্ড করেছেন আদালত। তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত এব্যাপারে বিস্তারিত বলতে পারবো না। তবে আদালতে দাখিলকৃত প্রতিবেদনে তিনি দাবি করেন যে, ঘটনার প্রাথমিকতদন্তে মামলার সাথে আসামীদের জড়িত থাকার সাক্ষি প্রমাণ পাওয়া গেছে।
তবে মামলায় অভিযুক্তদের পরিবারের দাবি, পূর্ব শত্রুতার জের ধরে এ মিথ্যা মামলায় আসামী করে সোহাগ ও সুজনকে আটক করা হয়েছে।