মণিরামপুরে এতিহ্যবাহী একটি বিদ্যাপিঠের নাম চাঁদপুর মাঝিয়ালী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়। উপজেলার সকল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে এটিই বর্তমানে ক্ষুদে শিশু শিক্ষার্থীদের নজর কাড়তে শুরু করেছে। সদ্য নির্বাচিত সভাপতি দায়িত্বভার নেওয়ার পর বিদ্যালয়টির দৃশ্যপট এমন ভাবে পাল্টে গেছে, যা এলাকাবাসীর মুখে মুখে সুনামের গুনঞ্জন ছড়িয়ে পড়েছে।
সরেজমিনে জানাযায়, মণিরামপুর উপজেলার খেদাপড়া ইউনিয়নের চাঁদপুর মাঝিয়ালী দুই গ্রামের মধ্যভাগে মনোরম পরিবেশে ১৯৫৮ সালে চাঁদপুর মাঝিয়ালী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়টি অবস্থিত। বিদ্যালয়টিতে শিক্ষক কর্মচারী কর্মরত রয়েছেন ১০ জন। এর মধ্যে একজন প্রধান শিক্ষক, ৮ জন সহকারী শিক্ষক এবং ১ জন কর্মচারী রয়েছেন। যারা সকলেই সুনামের সহিত দায়িত্ব ও কর্তব্য পালন করেন। বর্তমানে প্রাক-প্রাথমকি থেকে ৫ম শ্রেণি পর্যন্ত মোট শিক্ষার্থীর সংখ্যা রয়েছে দু’শতাধিক। দীর্ঘদিন ধরে বিদ্যালয়টি বহুবিধ সমস্যায় জর্জরিত ছিলো।
কিন্তু চলতি বছরের ২৪ জুলাই প্রভাষক অজয় কুমার রায় সদ্য সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর বিদ্যালয়টির দৃশ্যপট একেবারই পাল্টে ফেলেছেন। গত ৩ মাসে শিক্ষক ও কোমলমতি শিশু শিক্ষার্থীদের পাঠে মনোযোগী করে গড়ে তুলতে শ্রেণি কক্ষে ১২টি সিলিং ফ্যান, ১টি দেয়ালী, ১টি নোটিশ বোর্ড, ৪টি টেবিল ডেস্ক, ইলেকট্রনিক সামগ্রী ক্রয়, পিএসসি কেন্দ্র পরীক্ষার্থীদের ইন্ডিকেটর বোর্ড, অফিসের অনার বোর্ড, পিএসপি পরীক্ষার্থী বিদায়ী শিক্ষার্থীদের সামগ্রী বিতরণ, চিকিৎসার জন্য নগদ আর্থিক সহয়তা প্রদান, প্রধান শিক্ষকের কলিং বেল, শিক্ষার্থীদের দৃষ্টি নন্দন ১টি ফুলের বাগান স্থাপনসহ তিনি নিজ ফান্ড এবং বিভিন্ন ব্যক্তির অনুদানকৃত অর্থ দিয়ে ১ লক্ষাধিক টাকার উন্নয়নমূলক কাজ করেছেন। এমনকি নিজস্ব অর্থায়নে জাঁকজমক এবং অড়াম্বরপূর্ণ পরিবেশে জাতীয় শোক দিবস (১৫ আগস্ট) পালিত হয়েছে। এ ছাড়া সরকারী স্লীপের টাকায় সরকারী নির্দেশনা অনুযায়ী বঙ্গবন্ধু কর্ণার স্থাপনসহ বিভিন্ন দ্রব্যাদি ক্রয় পূর্বক কাজ সম্পন্ন করেছেন।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রেহেনা পারভীন জানান, গত ২০১৮ সালে এ বিদ্যালয় থেকে ৩২ জন শিক্ষার্থী প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষায় (পিএসসি) অংশগ্রহণ করে শতভাগ পাশ করে ঈর্ষণীয় ফলাফল অর্জন করেন। যার মধ্যে ৩ জন ট্যালেন্টপুলে এবং ২ জন সাধারন মেধা তালিকায় বৃত্তি পেয়েছে। তিনি আরো বলেন, চলছি মাসের ১৭ নভেম্বর পিএসসি পরীক্ষায় ৩০ জন শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করবে। আশা করছি এবারও আমাদের বিদ্যালয়টি উপজেলার সেরা মেধা তালিকায় থাকবে।
বিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদের সভাপতি (ম্যানেজিং কমিটি) প্রভাষক অজয় কুমার রায় বলেন, স্কুলটিকে আমার মনের মতো করে গড়ে তোলার জন্য অক্লান্ত পরিশ্রম করে চলেছি। ক্ষুদে শিশু শিক্ষার্থীদের এই শিক্ষা বিদ্যাটিকে মণিরামপুর উপজেলার একটি মডেল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তুলতে চায়। যে কারণে এলাকাবাসীর সহযোগীতায় একটি উন্নয়নমূলক ফান্ড গঠন করেছি।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আহসান উল্লাহ শরিফী’র সাথে যোগাযোগ করলে তিনি সভাপতি এবং প্রধান শিক্ষকের এমন মহতি উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, দেশের সকল প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিকশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ম্যানেজিং কমিটির গঠন করা হয়েছে মূলত এমননি উন্নয়নের জন্য। প্রত্যেকটি ম্যানেজিং কমিটি এমন উদ্যোগ গ্রহন করলে অবশ্যই শিক্ষার মান অগ্রযাত্রা হবে এবং দেশের আত্ম-সামাজিক উন্নয় ঘটবে।