প্রাইভেট-কোচিং বাণিজ্যের সাথে জড়িত শিক্ষকদের দিয়েই জেএসসি পরীক্ষা কেন্দ্রে দায়িত্ব পালনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। মণিরামপুর রাজগঞ্জ কেন্দ্র সচিব বিআরডিবি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে এ অভিযোগ। কোচিং বাণিজ্যে জড়িত শিক্ষকদের কেন্দ্রে দায়িত্ব পালন থেকে অব্যহতি দিতে অভিভাবকদের আবেদনের প্রেক্ষিতে মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা দায়িত্ব না রাখতে লিখিত পত্র দিলেও তাতে কর্ণপাত করেননি কেন্দ্র সচিব। এ নিয়ে অভিভাবকসহ শিক্ষকদের মাঝে বিরুপ প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।
জানাযায়, রাজগঞ্জ কেন্দ্রে উপজেলার পশ্চিমাঞ্চলের ২৪টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রায় ৯’শ ১৩ জন (জেএসসি ও ভোকেশনাল) শিক্ষার্থী চলতি পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে। কেন্দ্র সচিবের দায়িত্ব পালন করছেন উপজেলা বিআরডিবি কর্মকর্তা আবদুস সবুর। ৩ লাখ ৮৭ হাজার ৮৫০ টাকা কেন্দ্র ফিসের সিংহভাগই খরচ হবে না। এ টাকা হজম করতেই কেন্দ্র সচিব আবদুস সবুরের পছন্দের শিক্ষকরা কেন্দ্রের দায়িত্ব পেয়েছেন। বিনিময়ে এসব শিক্ষকদের কোচিং-এ আসা শিক্ষার্থীদের সুযোগ দিতেই দায়িত্ব দেয়া হয়েছে বলে অভিযোগ। এসব শিক্ষকদের কাছে পড়তে আসাদের সুযোগ দিতেই গত ৪ নভেম্বর ইংরেজি পরীক্ষার দিন রাজগঞ্জ স্কুলের ইংরেজি শিক্ষক আফসানা শারমিনকে কক্ষ পরিদর্শকের দায়িত্বে দেয়া হয়েছে।
এমনটি হবে বুঝতে পেরেই পরীক্ষা শুরুর আগে গত ২৯ অক্টোবর মোঃ ওবাইদুর রহমান, কার্ত্তিক চন্দ্র হালদার, মিজানুর রহমানসহ ওই এলাকার একাধিক অভিভাবক কোচিং বাণিজ্যে জড়িত থাকার অভিযোগে শিক্ষক রবিউল ইসলাম, উত্তম কুমার পাল, মোঃ আবদুল মাজিদ. মোঃ কামরুজ্জামান, মোঃ নূরুল ইসলাম, মোঃ রেজাউল করিম, হাবিবুর রহমান, মোঃ মাহাবুর রশিদ, রবীন্দ্রনাথ সরকার, মোঃ শাহীন আলম, উপান্দ, বিকোনন্দ ও মনিরুজ্জামানকে দায়িত্ব পালন থেকে অব্যহতি দিতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর লিখিত আবেদন করেন। ইউএনও আহসান উল্লাহ শরিফী বিধি মোতাবেক শিক্ষা কর্মকর্তা সুষ্ঠভাবে পরীক্ষা গ্রহণের স্বার্থে অভিযুক্ত শিক্ষকদের দায়িত্ব পালনে সমীচন নয় মর্মে লিখিত পত্র দিলেও কোন কিছুর তোয়াক্কা না করে কেন্দ্র সচিব আবদুর সবুর সহকারি শিক্ষক উত্তম কুমার পালকে হল সুপার এবং রবিউল ইসলাম, আবদুল মাজিদ, হাবিবুর রহমানকে কেন্দ্রের অন্যান্য দায়িত্ব দেন।
অভিবাবকদের অভিযোগ, শিক্ষক উত্তম কুমার পাল, আবদুল মাজিদ ও কামরুজ্জামান রাজগঞ্জ বাজারের জনতা হোটেলের মালিক জনৈক নান্নুর বাসা ভাড়া নিয়ে কোচিং সেন্টার চালাতেন। কিন্তু প্রশাসনের নরজরদারির কারণে মাস দুয়েক আগে বন্ধ করলেও শিক্ষক উত্তম কুমার পাল সকালে জনৈক বাশারের বাড়িতে এবং বিকেলে রাজগঞ্জ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৪তলা ভবনের নিচ তলায়, শিক্ষক আবদুল মজিদ দন্ত চিকিৎসক আবদুর রউফ সাহেবের বাড়িতে এবং রবিউল ইসলাম নিজের বাড়িতে চন্দ্রা স’মিলের সামনে টেবিল-বোর্ড বানিয়ে ব্যাচ করে পড়ান।
কেন্দ্র সচিব আবদুর সবুর তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, কয়েকজন শিক্ষককে দায়িত্ব থেকে অব্যহতি দেয়া হয়েছে। তবে, উত্তম কুমার পালকে বাদ দেয়া হলে তিনিও দায়িত্ব পালন করবেন না বলে সাপ জানিয়ে দেন। মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বিকাশ চন্দ্র সরকার বলেন, অভিভাবকদের আবেদনের প্রেক্ষিতে অভিযুক্ত শিক্ষকদের অব্যহতি দিতে পত্র দেয়া হয়েছে। যশোর শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মাধব চন্দ্র রুদ্র বলেন, বিষয়টির তদন্ত করে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।