ঝালকাঠির রাজাপুরের বড়ইয়া ইউনিয়নের বিষখালি নদীর তীরের চরে অবস্থিত চর পালট গুচ্ছ গ্রামের নির্মানাধীন ১৭টি ঘর পুরো বিধ্বস্তসহ ২৭টি ঘর প্রলংয়কারী ঘুর্ণিঝড় বুলবুলের আঘাতে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে এবং পানি বৃদ্ধ ও বৃষ্টির পানিতে বালু ও মাটি ধূয়ে সব মিলিয়ে প্রায় ২৫ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে চর পালট গচ্ছগ্রাম বাস্তবায়ন কমিটির দাবি করেছেন। এতে যথা সময়ে এ ঘরগুলো ভুক্তভোগীদের মাঝে হস্তান্তর নিয়ে চরম শঙ্কা দেখা দিয়েছে। তাদের দাবি সরকার এ বিষয়ে দ্রুত নজর দিবে এবং ক্ষতি পুষিয়ে যাতে ঘরগুলো পুনরায় নির্মাণ কাজ দ্রুত সম্পন্ন করা যায়, সে বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করবে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বড়ইয়া ইউনিয়নের বিষখালি নদীর তীরের চর ভরাট করে চর পালট গুচ্ছগ্রামে ৭০টি ঘর, টিউভওয়েল ও লেট্রিন নির্মানের জন্য গুচ্ছগ্রাম সিবিআরপি-২ প্রকল্পের আওতায় ১ কোটি ৫ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয় সরকার। সে অনুয়ায়ী গত সেপ্টেম্বর মাসে চরে বালু ফেলে উঁচু করে ঘর নির্মান ও লেট্রিনসহ যাবতীয় কাজ শুরু করা হয় এবং নভেম্বরের শেষের দিকে কাজ সম্পন্ন করে হস্তান্তর করার কথা ছিল। চর পালট গুচ্ছ গ্রামের নির্মান কাজে নিয়োজিত মিস্ত্রী এবং শ্রমিক ফরহাদ হোসেন, জামাল হোসেন ও মোঃ রফিক জানান, ঘুর্ণিঝড় বুলবুলের আঘাতে নির্মান করা ঘরগুলো একের পর এক মাটিতে ভেঙে পড়ে লন্ডভন্ড হয়ে তছনছ হয়ে গেছে। এতে ঘরগুলোর টিন, পিলার ও লোহার পাত ভেঙে ও নষ্ট হয়ে গেছে। লেট্রিনের মালামাল, চিউভওয়েলের মালপত্রও ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে গেছে। পানিতে তলিয়ে ঝড়ো বাতাসে নিরুপায় হয়ে জীবন বাচাতে নৌকায় ওইখান থেকে চলে যায়। মাটি ও বালু পানিতে ধুয়ে নেমে গেছে। চর পালট গুচ্ছগ্রাম প্রকল্প বাস্তাবায়ন কমিটির সম্পাদক আবদুল মালেক জানান, ঘরনির্মান ও অণ্য মালামাল ঝড়ে ও পানিতে তলিয়ে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। ১৭টি ঘর বিধ্বস্ত হয়েছে এবং ১০টি ঘরের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে এবং পানিতে প্রায় ১ ফুট মাটি ও বালু ধূয়ে নেমে গেছে। চর পালট গুচ্ছগ্রাম প্রকল্প বাস্তাবায়ন কমিটির সভাপতি ইউপি সদস্য আহসান কবির জানান, চর পালট গুচ্ছগ্রামে ৭০টি ঘর, টিউভওয়েল ও লেট্রিন নির্মানের জন্য গুচ্ছগ্রাম সিবিআরপি-২ প্রকল্পের আওতায় ১ কোটি ৫ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয় সরকার। সে মর্মে কাজ শুরু করে ৩৫টি ঘরের কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে, এমতাবস্থায় ঝড়ে ১৭টি ঘর বিধ্বস্ত হয়েছে এবং ১০টি ঘরের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। সবমিলিয়ে প্রায় ২৫ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। সরকার যদি এ ক্ষতির বিষয়ে যদি সরকার নজর না দেয়, তাহলে কোনভাবেই এক্ষতি পুষিয়ে ওঠা সম্ভব নয় এবং সঠিকভাবে সময়ে এ ঘর তৈরি ও সঠিকভাবে কাজ শেষ করা সম্ভব নয় এবং যথা সময়ে উপকারভোগীদের মাঝে ঘর হস্তান্তর করা সম্ভব হবে না। রাজাপুরের ইউএনও মোঃ সোহাগ হাওলাদার জানান, চর পালট গুচ্ছ গ্রামটি বড়ইয়া ইউনিয়নের বিষখালি নদীর তীরে অবস্থিত হওয়ায় ঘুর্ণিঝড় বুলবুলের আঘাতে নির্মান কাজ ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। সংশ্লিষ্ট দফতরে ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে প্রতিবেদন পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে। সরকারের তরফ থেকে এ ক্ষতির বিষয়ে কোন সহায়তা বা বরাদ্দ পেলে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে। আগামী ২৬ নভেম্বর বড়ইয়া ইউনিয়ন পরিষদে যাচাই বাছাই শেষে ঘরের ত্রুত বা সমস্যা সেরেই প্রকৃত উপকারভোগীদের মাঝে হস্তান্তর করা হব। রাজাপুর উপজেলা চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ মনিরউজ্জামান জানান, বিষখালি নদীর চরে খোলা স্থানে হওয়ায় ঘুর্ণিঝড় বুলবুলের আঘাতে গুচ্ছগ্রামের নির্মাানধীন ঘরের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। বিষয়ে জরুরি ভিত্তিতে সরকারসহ সংশ্লিষ্টদের নজর দেয়া জরুরি এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করে দ্রুত কাজ নির্মান সম্পন্ন করা প্রয়োজন।