রংপুরের পীরগঞ্জ, মিঠাপুকুর ও পীরগাছা উপজেলার জন্য ‘সার সংরক্ষণ ও বিতরন সুবিধার্থে’ মিঠাপুকুরে বাফার গুদাম নির্মানে রশি টানাটানি চলছে। বাংলাদেশ ফার্টিলাইজার অ্যাসোসিয়েশন এর রংপুর শাখা জেলা শহরে গুদামটি নির্মানের আবেদন করায় মিঠাপুকুরে ভুমি অধিগ্রহন হচ্ছে না। বিসিআইসি দেশের বিভিন্ন জায়গায় ৩৪ টি বাফার গুদাম নির্মান প্রকল্প গ্রহন করেছে। সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানা গেছে, কৃষকের দোরগোঁড়ায় সহজে ইউরিয়া সার পৌছাতে শিল্প মন্ত্রনালয়ের প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাষ্ট্রিজ করপোরেশন দেশের বিভিন্ন জায়গায় ‘সার সংরক্ষণ ও বিতরন সুবিধার্থে’ ৩৪ টি বাফার গুদাম নির্মান প্রকল্প গ্রহন করে। গুদামগুলো স্থানভেদে ১০ হাজার, ১৫ হাজার, ২০ হাজার এবং ২৫ হাজার মে. টন ধারন ক্ষমতাসম্পন্ন হবে। প্রকল্পটির আওতায় রংপুরের পীরগঞ্জের ১৫টি ইউনিয়ন, মিঠাপুকুরের ১৭টি ইউনিয়ন এবং পীরগাছার ৮ টি ইউনিয়নে সার সরবরাহে বিসিআইসি’র সাইট পরিদর্শন উপকমিটি মিঠাপুকুরের ইমাদপুর মৌজায় জমি নির্বাচন করে। চলতি বছরের ৪ মার্চ পরিচালক (পরি. ও বাস্ত.) জমি অধিগ্রহনের লক্ষ্যে তফশিল ও মৌজার ম্যাপ চিহ্নিত করতে জেলা প্রশাসককে পত্র দেয়। এরপর প্রকল্পটির পরিচালক আবুল কাশেমও সরেজমিনে ইমাদপুর পরিদর্শন করে চলতি বছরের ৩ সেপ্টেম্বর জেলা প্রশাসককে জমি অধিগ্রহনের চিঠি দেন। পাশাপাশি রংপুর-৫, আসনের সংসদ সদস্যও উল্লিখিত স্থানে গুদামটি নির্মানে ডিও লেটার দেন। ২০ হাজার মে. টন ধারন ক্ষমতাসম্পন্ন ৭৭৮ ফুট বাই ৩৩০ ফুট আয়তাকারের গুদামটি নির্মানে ৫ একর ৯৬ শতাংশ জমির দাগ-খতিয়ানও চিহ্নিত করা হয়েছে। কিন্তু প্রায় ২ মাস ধরে গুদামটির নির্মান সংক্রান্ত কার্যক্রম থমকে আছে বলে একাধিক বিশ^স্ত সুত্র জানিয়েছে। সুত্র আরও জানায়, গত বছরের ১৪ নভেম্বর বিএফএ’র রংপুর জেলা শাখার একাধিক সার ডিলার রংপুর সদর উপজেলার দর্শনা পাহাড়ী মৌজায় গুদামটি নির্মানে আবেদন করে। ওই আবেদনকে কেন্দ্র করেই মুলতঃ গুদামটি নির্মানে রশি টানাটানি চলছে। নাম না প্রকাশের শর্তে উল্লিখিত উপজেলার একাধিক বিসিআইসি’র সার ডিলার বলেন, মিঠাপুকুরে গুদাম নির্মিত হলে সার পরিবহন খরচ কম হবে। কৃষকরাও দ্রুত সার পাবে। ইমাদপুর ইউপি’র চেয়ারম্যান আফছার আলী ও মির্জাপুর ইউপি’র চেয়ারম্যান আবদুর রউফ মিয়া বলেন, মিঠাপুকুরের অধিকাংশ ইউনিয়নে ৩ ফসলী জমি রয়েছে। সারেরও চাহিদা প্রচুর। পাশাপাশি ইমাদপুরে গুদাম নির্মিত হলে প্রধানমন্ত্রীর ঘোষিত গ্রামকে শহরায়ন করাও স্বার্থক হবে। প্রকল্পটির পরিচালক আবুল কাশেম বলেন, মিঠাপুকুরে গুদাম নির্মানের বিষয়টি এখন উপর পর্যায়ে গেছে। এ ব্যাপারে বক্তব্য দিতে পারবো না। বিসিআইসি’র চেয়ারম্যান হাইয়ুল কাইয়ুম মুঠোফোনে বলেন, জেলা প্রশাসনের সাথে কথা বলে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত চুড়ান্ত করা হবে। গুদাম স্থানান্তরের বিষয়ে তিনি বলেন, ফাইল না দেখে কিছু বলতে পারবো না। রংপুর ৫ আসনের সংসদ সদস্য এইচএন আশিকুর রহমান বলেন, উল্লিখিত ৩ উপজেলায় বছরে প্রায় ৪০ হাজার মে. টন ইউরিয়া সারের চাহিদা রয়েছে। তাই কৃষকের সুবিধার্থে মিঠাপুকুরে ২০ হাজার মে. টন গুদাম নির্মানে ডিও লেটার দিয়েছি।