ফরিদপুর জেলার চলতি রবি মৌসুমে আগাম জাতের মুড়িকাটা পেঁয়াজের বাম্পার ফলন হয়েছে। বাজারে পেঁয়াজের ভাল মূল্য পাওয়া কৃষকের মুখে হাঁসি ফুটেছে। নতুন পেঁয়াজ উঠায় কমতে শুরু করেছে পেঁয়াজের দাম। আর কৃষি বিভাগ বলছেন, একই জমিতে দুই বার পেঁয়াজ আবাদ করে কৃষকেরা লাভবান হচ্ছে। আর বাজারে নতুন পেঁয়াজ আসায় অল্প দিনের মধ্যে পেঁয়াজের মূল্য কমে আসবে এবং ভোক্তারা উপকৃত হবে।
ভাল ও উন্নত জাতের পেঁয়াজ উৎপাদনের জন্য খ্যাত রয়েছে ফরিদপুর জেলার। এ জেলায় তিন ধরনের পেঁয়াজ উৎপাদন হয়ে থাকে। মুড়িকাটা, হালি ও দানা পেঁয়াজ। ফরিদপুরের কৃষকের ঘরে এখন উঠছে আগাম জাতের মুড়িকাটা পেয়াজ। পেঁয়াজেল ফলন ও ভাল দাম পাওয়া খুশি কৃষক-কৃষাণীরা। চলতি বছরে সদর উপজেলা, সালথা, ভাঙ্গা ও সদরপুর উপজেলায় কৃষকেরা অপেক্ষাকৃত উঁচু জমিতে আশ্বনি মাসের মাঝামাঝি সময় থেকে মুড়িকাটা পেঁয়াজের আবাদ করে। পেঁয়াজ আবাদের ৬০ থেকে ৬৫ দিনের মাথায় কৃষকেরা এখন ক্ষেত থেকে পেঁয়াজ তুলতে শুরু করেছে। বসেনেই কৃষানীরাও। কৃষাণীরাও কৃসকের পাশাপাশি ক্ষেত থেকে উঠানো পেঁয়াজ পাতা কেটে বাজারে পাঠানোর কাজে ব্যস্ত আছেন।
বাজারে নতুন পেঁয়াজ উঠায় খুচরা বাজারে কমেছে পেঁয়াজের দাম। দুদিন আগেও ফরিদপুরের বাজারে ১ কেজি দেশী পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ২২০ টাকা থেকে ২০০টাকা। এখন বিক্রি হচ্ছে ১৭০টাকা। বাজারে এখন মুড়িকাটা পেঁয়াজ উঠায় কমেছে দাম। পুরান পেঁয়াজ কেজিতে কমেছে ৩০ থেকে ২০ টাকা। আর কেজি নতুন খুচরা বাজারে বিক্রয় হচ্ছে ১৫০টাকা। ২/৩দিন পর পেঁয়াজের দাম আরও কমে আসবে বলে জানিয়েছেন খুচরা ব্যবসায়ীরা।
নর্থচ্যানেল ইউনিয়নের গোলডাঙ্গীর কৃষক জুয়ের মল্লিক বলেন, গতবছর পেঁয়াজ চাষ করে লাভ হয়নি। ফলন ভাল হলেও পেঁয়াজের দাম ছিলনা। ফলে ক্ষতির মধ্যে পড়েচিলাম। কিন্তু চলতি মৌসুমে পেঁয়াজের ফলন ভাল হয়েছে। বাজারে ভাল দামও ভাল আছে। বর্তমানে ১মন নতুন পেঁয়াজ ৫হাজার ৮শ টাকা থেকে ৬হাজার টাকা বিক্রি হচ্ছে। তরে মাঠের সব পেঁয়াজ উঠলে পেঁয়াজের দাম কমে যাবে। চরতি মৌসুমে পেঁয়াজ চাষ করে আমরা লাভবান হয়েছি।
ফরিদপুর সদর উপজেলার নর্থচ্যানেল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোস্তাকুজ্জামান মোস্তাক বলেন, মুড়িকাটা পেঁয়াজ উৎপাদনে জেলার মধ্যে প্রথম স্থানে আছে নর্থ চ্যানেল ইউনিয়ন। প্রতিবারের ন্যায় এবছরও ব্যপক ভাবে মুড়িকাটা পেয়াজের আবাদ হয়েছে। চাষিরা এখন ক্ষেত থেকে পেঁয়াজ তুলছে আর বিক্রি করছে। পেঁয়াজ চাষ করে চাষিরা লাভবান হয়েছে।
ফরিদপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্র জানায় চলতি বছর ফরিদপুর জেলায় ৬ হাজার হেক্টোর জমিতে মুড়িকাটা পেঁয়াজ আবাদ হয়েছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর এর উপপরিচালক কৃষিবিদ কার্তিক চন্দ্র চক্রবর্তী বলেন, মুড়িকাটা একটি আগাম পেঁয়াজ বাজারে উঠতে শুরু করেছে। এবছর উৎপাদন খুবই সুন্দর হয়েছে। বাজারে দাম কৃষক পেশী পাচ্ছে। আসা করছি ৬০ থেকে ৭০ হাজার মে. টন মুড়িকাটা পেঁয়াজ উঠবে। নতুন পেঁয়াজ উঠায় বাজারে এর প্রভাব পড়েছে। মুড়িকাটা পেঁয়াজ তুলে কৃষকেরা একই জমিতে আবার হালি পেঁয়াজ চাষ করবে। ফলে একই জমিতে ফরিদপুরের কৃষকেরা দুই বার পেয়াজ উৎপাদন করে কৃষকেরা লাভবান হবে।