কথায় বলে বাপের বেটা পেটুক, সুযোগ বুঝে লুটেপুটে দেদারছে আখেরি খাওয়া খাবিতো খা, কুছনেহি পরোয়া। প্রতিনিয়ত গণমাধ্যম, মিডিয়া, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম, দুদক ও অন্যান্য সূত্রে প্রদর্শিত বেসামাল ঘুষ, দুর্নীতি ও দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন কষাঘাতে দেশের মানুষ নিষ্পেষিত। এছাড়া ঘুষ, দুর্নীতি, নকল, ভেজাল, দ্রব্যমূল্যের পাগলা ঘোড়া, ভাওতাবাজি, শেয়ার বাজার কেলেংকারি, ব্যাংকের হাজার, হাজার কোটি টাকার অনাদায়ী ঋণ, ক্ষমতার অপব্যবহার (Misappropriation of power), চামচা, চাটুকারীতা, তোয়াজ, তোষন, ন্যায়কে অন্যায় ও অন্যায়কে ন্যায় হিসেবে চালানোর ভূষণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। দেশের একটা শ্রেণী আজ বড় অসহায়, কষাঘাতে জর্জরিত, নিরুপায় ও হতাশায় নিমজ্জিত। গণমাধ্যম ও মিডিয়ায় আজ অনেকেই এমন শিরোনামের সংবাদ, নিবন্ধ ও প্রতিবেদন দেখতে চায় না। দেশের মানুষ চায় এসবের সাথে সম্পৃক্তদের বিরুদ্ধে কার্যকরি ব্যবস্থা ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি। লাখে লাখে সৈন্য মরিল কাতারে কাতার, গুনিয়া বাছিয়া দেখি মাত্র তের হাজার। সোনাবানের এ পূঁথি কেহ আর শুনতে চায় না। ডিজিটাল যোগে সোনা বানের পুঁথির দিন অনেক আগেই সমাধি রচিত হয়েছে। এখন দরকার কথা কাজের সমন্বয় ও প্রতিফলন। যদিও প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশিত দুর্নীতির বিরুদ্ধে শুদ্ধি অভিযানকে খাটো করে দেখার সুযোগ নেই।
তারপরও অনেকেই মনে করে এর মধ্যে কোথায়ও না কোথায় শুভংকরের ফাঁক ফোকর রয়েছে। তা না হলে লাগামহীন ঘুষ, দুর্নীতি, নকল, ভেজাল, দ্রব্যমূল্যের বেসামাল কষাঘাত, অফিস আদালতে ব্রিটিশ ও পাকিস্তানী আমলের বরকন্দাজদের মতো এমন পর্যায়ে যাওয়ার কথা নয়। অবস্থা দেখে মনে হয় সব কিছু যেন প্রধানমন্ত্রী করে দিবে। আর যেন কারও কোনো দায় দায়িত্ব নেই। ৩০ টাকা কেজির পেঁয়াজ ২৮০ থেকে ৩০০ টাকায় উঠেছে। এর মধ্যে সামান্য কমলেও ২/৩ দিন বিরতি দিয়ে আবার বেড়েছে। ধানের দামে কৃষকের মাথায় হাত হলেও মধ্যস্বত্বভোগীদের কারণে চালের দাম বেড়েছে। এর মধ্যে দানবের সংক্রমন হলেও লবণের দাম বাড়তে পারেনি। নকল, ভেজাল ও ঔষধের দাম নিয়েও চলছে তুঘলকি কান্ড। যে কারণে এসব নিয়ে এখন অনেকেই যেমন লেখালেখি করতে উৎসাহ বোধ করে না, তেমনি অনেকেই তা পড়তেও খুব একটা প্রশান্তি বোধ করে না। তারপরও অনেকেই দেশের কথা, দশের কথা, জনদুর্ভোগ সমস্যা ও সমাধানের কথা না বলে নিশ্চুপ হয়ে থাকতে চায় না। ফলশ্রুতিতে গণমাধ্যম ও মিডিয়াতে দৃশ্যপটের আলোকে এসব নিয়ে কমবেশী আলোকপাত করা হয়ে থাকে।
যদি এসব সমস্যা ও সমাধানের ব্যাপারে আলোকপাত না হত বা আঙুল দিয়ে বেশরমা অপরিনামদর্শী, রাঘব বোয়ালদের লুটপাট, ঘুষ দুর্নীতি, নকল, ভেজাল, অপকর্ম ও দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন দানবিকতা দেখানো না হত তবে তা
কোথায় গিয়ে দাঁড়াত, তা হয়তো ভাবতে গিয়েও শিহড়িয়ে ওঠতে হয়। এ নিবন্ধে আরও কিছু উল্লেখের আগে ভাগে এ লেখার শিরোনামকে নিয়ে কিছু কথা না বললেই নয়।
জানা যায়, একবার পেটের ক্ষুধার জ্বালায় হতভম্ব ও অস্থির হয়ে পাশের বাড়ীর রান্নাঘর থেকে না জানিয়ে ভাত খাওয়ার অপরাধে গৃহকর্তা তাকে ধরে ফেলে। এ অপরাধে তাকে উত্তম মধ্যম দিয়ে রক্তাক্ত করা হয়। এখানেই এ ঘটনার শেষ না ঘটিয়ে মহল্লার চৌকিদার তাকে থানায় সোপর্দ করে থাকে। থানায় গিয়ে সে বলে, হুজুর আমি ক্ষুধার জ্বালা সহ্য করতে না পেরে জীবন বাঁচানোর জন্য চুরি করে ভাত খেয়েছি। এ অপরাধে উত্তম মধ্যম দিয়ে পরিশেষে চৌকিদার আমাকে থানায় দিয়েছে। আর যারা দেশের কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ, বেসামাল ঘুষ, দুর্নীতি, পুকুর চুরি করে আলীশান গাড়ী, বাড়ী, ফ্ল্যাট ও বিদেশে দেশের অর্থ পাচার করে দেদারছে প্রশান্তি নিয়ে জমিদারের মতো ঘুরে বেড়াচ্ছে ২০/২৫ টাকার পেঁয়াজ ৩০০ টাকা কেজিতে বিক্রী করছে, ক্যাসিনোর কোটি কোটি টাকা হজম করছে, টিআর, কাবিখা, জি.আর ও ১০ টাকা দরের সাশ্রয়ী চাল কালোবাজরে বিক্রী করছে, কাজ না করেও প্রজেক্টের কোটি কোটি টাকা মেরে খাচ্ছে, বালিশ বাণিজ্য করছে তাদের কী কোনো দোষ নেই ? এসব শোনার পরও থানার হুজুর চুরি করে ভাত খাওয়ার অপরাধে শাসিয়ে বললেন, বড় চোরদের অপরাধের কথা বলে লাভ নেই। তাদের হাত অনেক লম্বা। আমার দ্বারা তাদের শাস্তি দেয়াতো দূরের কথা, তাদের অপরাধের কথা বলাও অপরাধ। এ ব্যাপারে থানায় ডাইরী করলেও আমার চাকরি নিয়েও টান দিতে পারে। আর তুমি গৃহকর্তাকে না জানিয়ে পেটের ক্ষুধায় চুরি করে ভাত খেয়ে যে অপরাধ করেছ, এ অভিযোগে আইনের দ্বারস্ত হতেই হবে। তখন থানা থেকে কোর্টে চালানোর সময়ও সে বলল, হুজুর আমাকে চুরি করে ভাত খাওয়ার অভিযোগ কোর্টে চালান দিচ্ছেন, ভালো কথা। কিন্তু মনে রাখবেন, ঘুষ, দুর্নীতির ধারক বাহক ও সাধু নামধারী বড় চোর, দানব ও গড ফাদাররাও যেন প্রশান্তিতে না থাকে। আমার মতো পেট বাঁচানো ভাত খাওয়া চোরদের মতো তাদেরও যেন কোর্টে চালান হয়। এসব শুনে থানার বড় হুজুর নাকি বলেছিলেন, হায়রে বোকা- আমি আগেই বলেছি আমার হাত বাঁধা। তাদের হাত অনেক লম্বা। তারপর ভাত খাওয়া চোর একটি গানের কন্ঠে বলতে ছিল, এসব দেখি কানার তদারকি ও কানার হাট বাজার।
এ প্রসঙ্গে আরেকটি উদাহরণ। একবার শিয়ালকে মুরগী খাওয়ার অভিযোগে বেদম প্রহার করে মেরে ফেলা হয়। অপরদিকে বাঘ অহরহ এলাকার গরু, মহিষ, ছাগল, ভেড়া খেলেও তাহকে মেরা ফেলা নিষেধ এবং পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষার পরিপন্থি। তদোপরি শিয়াল মুরগী খাওয়ার অপরাধে অহরহ গণপিটুনীর দ্বারস্ত হলেও, বাঘ অহরহ গরু, মহিষ, ছাগল ভেড়া খেয়ে ধরা পড়লেও তাকে না মেরে বনে ছেড়ে দেয়া হয়ে থাকে। এমনিভাবে বড় বড় অপরাধী হেনিয়াস ক্রাইম করে বাঘের মতো ছাড় পেলেও বেচারা ভাত চোর ও মুরগী খেকো শিয়ালের ঘটনা দেখে ঘুরে ফিরে বারবার সামনে আসে, যত দোষ নন্দ ঘোষ।
প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশিত শুদ্ধি অভিযানে এ পর্যন্ত যারা র্যাব, পুলিশ, দুদক ও অন্যান্য আইন শৃংখলা বাহিনীর হাতে ধরা পড়ে আইনের বেড়াজালে আটকে পড়ে বিচারের সম্মুখীন হয়ে কারাগারে রয়েছে, ইহা একটি প্রশংসনীয় উদ্যোগ। যারা দুদক ও আইন শৃংখলা রক্ষাবাহিনীর কাছে ১৬১ ও রিমান্ডে গিয়ে সংশ্লিষ্ট ম্যাজিস্ট্রেটদের নিকট ১৬৪ ধারায় যে সমস্ত রাঘব বোয়াল ও নাটের গুরুদের প্রতিনিয়ত ক্যাসিনোর জুয়ার বোর্ড থেকে লক্ষ লক্ষ ও কোটি কোটি টাকা নেয়ার কথা বলেছে, গণমাধ্যম ও মিডিয়াতে তা প্রচারিত ও প্রকাশিত হয়েছে। তাদের সম্পর্কে এখন পর্যন্ত কোনো পদক্ষেপ জানা বা শুনা যায়নি। এ বিষয়ে নানাজন ও বিভিন্ন মহলে যথেষ্ট গুঞ্জন রয়েছে। এসব দেখে অনেকেই মন্তব্য করে থাকে ক্যাসিনো সা¤্রাজ্যের স¤্রাট, গডফাদার ও ক্যাসিনো রাজ্যের অপরিনামদর্শীরা অনেকের নাম বলার পরও র্যাব, দুদক ও আইন শৃংখলা বাহিনী নিরব কেন ? যদি এর পেছনে কিছু থেকে থাকে তবে তাহাতে দেশবাসীর জানার অধিকার রয়েছে। যদিও এ প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক লেঃ কঃ সারওয়ার বিন কাশেম যুগান্তরকে বলেছিলেন, ক্যাসিনোর সাথে যারাই জড়িত তাদের সবাইকে আইনের মুখোমুখি করা হবে। সেক্ষেত্রে কে বাম নেতা বা কে ডানপন্থি নেতা তা আমাদের বিবেচ্য বিষয় নহে। যা একটি প্রশংসনীয় মন্তব্য হিসেবে গণমাধ্যম, মিডিয়া ও সামািজক যোগাযোগ মাধ্যমে স্থান লাভ করে থাকে। স্পর্শকাতর এ বিষয়টি নিয়ে আপগ্রেড না হওয়াতে নানা মনির নানা ভাবনা ও অভিমত অমূলক কিছু নহে। ক্যাসিনোসহ আরও বেসামাল ঘুষ, দুর্নীতির বিষয়ে সামনে এগিয়ে যাওয়ার প্রেক্ষাপটে এ ঘটনার সাথে জড়িত, ইন্দনদাতা, আশ্রয় প্রশ্রয় দাতা ও বস্তাভর্তি কোটি, কোটি টাকা খেকোদের মুখোশ উন্মোচন যথাযথ বলে দেশের জনগণ, রাজনীতিক, বুদ্ধিজীবি, শ্রমজীবি, সুশীল সমাজ ও পেশাজীবিরা মনে করে থাকে। অনেকে মনে করে এসবকে পাশ কাটিয়ে ঘুষ, দুর্নীতি, ক্যাসিনো ও শুদ্ধি অভিযান নিয়ে সামনে এগুলে যদি কোনো অভাজন প্রশ্ন করে, তবে হয়তো প্রশ্নের সঠিক উত্তর দেয়া কষ্টসাধ্যও হতে পারে। তাই আগেভাগেই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের এসব দিক বিবেচনা করে ডানে বামে না তাকিয়ে সামনে এগুনোই উচিত। কারণ প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশিত শুদ্ধি অভিযানে দেশের মানুষ অকুন্ঠ সমর্থন দিয়েছে। তাতে র্যাব, আইন শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনী ও দুদক প্রশংসা অর্জন করেছে। তারপরও মানুষ ধৈর্যশীল। তবে ধৈর্য্যরেও একটা সীমা পরিসীমা রয়েছে। অনেকেই মনে করে, এ সবের কঠোর নজরদারি না হলে যদি একবার ভুল
বোঝাবুঝির (Misunderstanding) সৃষ্টি হয় ও প্রশ্ন দেখা দেয়, তবে হয়তো কারও কিছু বলার নাও থাকতে পারে। ১৯৭০ সালে কিশোরগঞ্জ স্টেডিয়ামে ন্যাপের জনাকীর্ণ জনসভায় মজলুম জননেতা মাওলানা ভাসানী বলেছিলেন, দেশ আগাছা ও পরগাছায় ভরে গেছে। এখনই এর উৎপাটন করা উচিত। সামনে আমাদের আরও সুবিস্তীর্ণ কঠিন ও বন্ধুরপথ পাড়ি দিতে হবে। ১৯৭১ সালের মহান স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধে আগাছা ও পরগাছাদের বিরোধীতা ও হানাদারদের পক্ষপাতিত্ব অবলম্বন এ উক্তিরই সুস্পষ্ট দিকদর্শন। তাই কোনো অবস্থাতেই আগাছা পরগাছাকে আশ্রয় প্রশ্রয় দেয়া কারও পক্ষেই সমীচিন নহে। এই আগাছা, পরগাছাই যতসব অপকর্মের গডফাদার ও সহায়ক।
ক্ষুধার জ্বালায় চুরি করে ভাত খাওয়ার অভিযোগে সে থানায় বলেছিল, চৌকিদার আমাকে এ অভিযোগে থানায় সোপর্দ করেছে, তা ভালো কথা। আর যারা ঘুষ, দুর্নীতি করে অসদোপায়ে কোটি, কোটি টাকা কামাই করে আলীশান বাড়ী, গাড়ী, ফ্ল্যাট করেছে বিদেশে হোমল্যান্ড বানিয়েছে, আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ ও বট গাছ হয়েছে, তাদের কী দোষ নেই ? তাদেরকে কী আমার মতো কোর্টে চালান দেয়া হবে না ? তখন থানার হুজুুর নাকি আমতা, আমতা করলেও সঠিক জবাব দিতে পারেনি। বরং বলেছিল, তাদের হাত অনেক লম্বা। এ ব্যাপারে আমার দ্বারা তাদের কোর্টে চালান দেয়াতো দূরের কথা, বরং তাদের বিরুদ্ধে বলাটাও অপরাধ।
আর আজ যা হচ্ছে ইহারই প্রতিফলন বলা চলে। তা না হলে ক্যাসিনো গডফাদারদের বলার পর, গণমাধ্যম ও মিডিয়াতে এসব কিছু ফলাও করে প্রচার ও প্রকাশিত হওয়ার পরও ক্যাসিনোর সীমাহীন ঘুষ দুর্নীতির সাথে সম্পৃক্ত দানবরা এখনও অধরা থেকে কিভাবে ঘুরে বেড়াচ্ছে, ইহাই অনেকের প্রশ্ন হিসেবে দেখা দিয়েছে। যদি পেটের জ্বালায় ভাত খাওয়া চোরের উত্তম মধ্যম ও রক্তাক্ত হয়ে থানা থেকে কোর্টে চালান হয়ে থাকে আর সমাজের বড় ও খান্দানীরা প্রশান্তি নিয়ে ঘুরে বেড়ায়, তবে তাতে আইন শৃংখলা রক্ষা বলতে কিছু অবশিষ্ট না থাকারই কথা। আর এসব দেখে যদি কোনো অভাজন ভাত খাওয়া চোরের কন্ঠের সাথে কন্ঠ মিলিয়ে দানব ও কানার তদারকি বলে মন্তব্য করে থাকে তবে হয়তো কারও কিছু বলার সুযোগ নাও থাকতে পারে।
প্রধানমন্ত্রীর আহবানে সারা দিয়ে যেমনি ঘুষ, দুর্নীতি ও ক্যাসিনো বিরোধী অভিযানে দুর্নীতিবাজদের টনক নড়েছে, তেমনি ঔষধে নকল, ভেজাল মনগড়া মূল্য নির্ধারণ, পেঁয়াজে অস্বস্থিকর আকাশচুম্বী মূল্য, সিন্ডিকেট প্রথা ও চাউলে মূল্য বৃদ্ধি রোধে শুদ্ধি অভিযানের সাথে সোনামি অভিযান পরিচালিত হলে হয়তো কোনো কিছু বলা বা জবাদিহীতা না থাকারই কথা। তদোপরি ৭৪ সালে দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে স্পেশাল পাওয়ার এ্যাক্টে মামলা ও ২০০৭ সালের ১/১১ এর কথা এখনই হয়তো ভুলে যাওয়ার নয়। ভাত খাওয়া চোর ও মুরগী খেকো শিয়াল যদি এসব দেখে এক সাথে কন্ঠ মিলিয়ে ক্যাসিনো খেকো আশ্রয় প্রশ্রয় দাতা ও পর্দার আড়ালে থাকাদের বিরুদ্ধে শাস্তির দাবী ও কোর্টে সোপর্দের দাবী জানায় তবে হয়তো সংশ্লিষ্টদের সদোত্তর মেলানো বড়ই কঠিন হতে পারে। আইনের দৃষ্টিতে ছোট বড় সকলেই সমান। যদি এর ব্যর্থয় হয় বিচারের বাণী যেমন নিরবে নিভৃতে কাঁদবে তেমনি ন্যায় বিচারের প্রতি ভূক্তভোগীদের অনাস্থায় কষ্টকেও স্তব্ধ করা নাও যেতে পারে। ভাত চোর ও মুরগী খেকো শিয়ালের শাস্তি, বড় ও খান্দানী চোরের প্রশান্তি দেখে, চোখ থাকিতে অন্ধ ও কানার বাড়ী ঘর বলে, উদাসী কন্ঠে যদি কেহ জারী, সারি, ভাটিয়ালি ও পল্লীগীতির সুরে বলে মনমাঝি তোর বৈঠা নেরে আমি আর বাইতে পারলাম না, তবে হয়তো জবাব না মিলারই কথা। অনেকে চুরি আরও সিনাজুরি ও নিজেকে জমিদার মনে করে থাকে। আইন, আদালত যদি নিজস্ব গতিতে চলে তবে তাতে কারও অপরাধের শাস্তি থেকে রেহাই পাওয়ার সুযোগ নেই। এ ব্যাপারে উদাহরণ, উপমা ও দৃষ্টান্তের প্রয়োজন আছে বলে মনে হয় না। শুদ্ধি অভিযান সবেমাত্র শুরু হয়েছে। এখনই ধৈর্য্য হারানোর কিছু নেই। সামনে খান্দানী ও বড় হুজুরের চেহারা গণমাধ্যম ও মিডিয়ায় দেখার প্রত্যাশায়, শুদ্ধি অভিযানকে নিয়ে এখনই হাল ছাড়া ঠিক হবে না। পরিশেষে বলব, ভাত খাওয়া চোরের লঘু অপরাধের কারণে মুক্তি মেললেও খান্দানী বড় চোরের শাস্তি দেখে হয়তো একদিন ভাত খাওয়া চোর যেমন তার ব্যথা ও অন্তরের জ্বালা নিবারণ করবে, তেমনি মুরগী খেকো শিয়ালও মনের উল্লাসে গেয়ে ওঠবে রোদ হচ্ছে, বৃষ্টি হচ্ছে খেঁক শিয়ালীর বিয়ে হচ্ছে।
এ.কে.এম শামছুল হক রেনু
লেখক কলামিষ্ট