স্মরণকালের সর্ববৃহত আয়োজনে সর্বাধিক কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের অংশগ্রহণে বরিশাল মহানগর আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী ও সমর্থকদের উপস্থিতিতে সম্মেলনের প্রথম অধিবেশন শেষ করা হয় নগরীর ঐতিহাসিক বঙ্গবন্ধু উদ্যানে।
সম্মেলনের দ্বিতীয় অধিবেশন নগরীর ক্লাব রোডস্থ বরিশাল ক্লাবে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ ও ৩৭১জন কাউন্সিলদের উপস্থিতিতে অনুষ্ঠিত হয়। দ্বিতীয় অধিবেশনে কাউন্সিলরদের কন্ঠভোটে সভাপতি হিসেবে অ্যাডভোকেট একেএম জাহাঙ্গীর হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক হিসেবে সিটি কর্পোরেশনের জননন্দিত মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ নির্বাচিত হয়েছেন। মহানগরীর ৩০টি ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দের কাছে জনপ্রিয় দুই নেতা মহানগর আওয়ামী লীগের প্রধান দুটি পদের দায়িত্ব পাওয়ায় খুশির জোয়ারে ভাসছে বরিশাল মহানগর আওয়ামী লীগ।
বিজয়ের মাসে আওয়ামী লীগের তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মী ও সমর্থকরা এ জয়কে আরও একটি বিজয় বলে অভিহিত করেছেন। তাদের বিজয়ে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন হাজারো নেতাকর্মীরা। রোববার রাত থেকে সোমবার দুপুর পর্যন্ত নগরীর প্রতিটি মহল্লায় মহল্লায় চলছে মিষ্টি বিতরণের ধুম। সকলের মনে বইছে খুশির আমেজ। নেতাকর্মীরা নগরীর বিভিন্ন এলাকায় রোববার রাতে আতশ বাঁজি ও তাঁরাবাতির আলোর জলকানিতে এ খুশি জানান দিচ্ছে। নেতাকর্মীরা বলেন, একেএম জাহাঙ্গীর হোসেনকে সভাপতি ও সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহকে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হওয়ায় মহানগর আওয়ামী লীগ যেন আবার যৌবণ ফিরে পেয়েছে।
সূত্রমতে, মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি শওকত হোসেন হিরনের মৃত্যুর পর দক্ষিণাঞ্চলের মধ্যে একসময়ে বিএনপির শক্তঘাঁটি হিসেবে পরিচিত বিভাগীয় মহানগরী বরিশালে আওয়ামী লীগ হ-য-ব-র-ল অবস্থার মধ্যে পরে। ঠিক সেই সময় কেন্দ্রীয় যুবলীগের সদস্য সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ বরিশালে ফিরে দলের দুর্দীনের ত্যাগী ও নির্যাতিত নেতাকর্মীদের সংগঠিত করতে থাকেন। পরবর্তীতে মহানগর আওয়ামী লীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে তাকে (সাদিক) যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব দেয়া হয়। এরপর থেকেই মহানগর আওয়ামী লীগের বিচ্ছিন্ন নেতাকর্মীদের একত্র করার মাধ্যমে সাদিক আব্দুল্লাহ তার নিজস্ব মেধায় রাজনৈতিক দুদর্শীতার মাধ্যমে বিএনপির শক্তঘাঁটি ভেঙে চুরমার করে বরিশালকে আওয়ামী লীগের দূর্গ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেন।
ফলশ্রুতিতে নেতাকর্মীদের জোরালো দাবির প্রেক্ষিতে ২০১৮ সালের বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন পেয়ে বিপুল ভোটের মাধ্যমে বিজয়ী হন সাদিক আব্দুল্লাহ। সিটি মেয়র হিসেবে গত একবছরের মধ্যেই তিনি ব্যাপক উন্নয়নমূলক কাজ করে ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করেন। পাশাপাশি সিটি কর্পোরেশনের ৩০টি ওয়র্ডে আওয়ামী লীগের ত্যাগী ও নির্যাতিত নেতাকর্মীদের সু-সংগঠিত করার পাশাপাশি দলের কা-ারী হিসেবে সর্বস্তরে বেশ সুনাম অর্জন করেছেন।
একসময় বরিশালে বিএনপির ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত ছিলো। যা এখন মেয়র সাদিক আব্দুল্লাহর বদৌলতে আওয়ামী লীগের দূর্গে পরিণত হয়েছে। আর এই জনপ্রিয়তাই মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহকে বরিশাল মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পদে একক প্রার্থী হতে বড় পুঁজি হিসেবে কাজ করেছে। এ ছাড়া বরিশাল মহানগর আওয়ামী লীগের ত্রি- বার্ষিক সম্মেলন সফল করার লক্ষে সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহর স্মরণকালের সর্ববৃহত আয়োজনের ব্যাপক প্রশংসা করেছেন কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের নেতারা।
সম্মেলনে প্রধান অতিথি ছিলেন-বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এমপি। সম্মেলনের উদ্বোধণ করেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা মন্ডলীর সদস্য ও সাবেক শিল্প মন্ত্রী আলহাজ¦ আমির হোসেন আমু এমপি। সম্মেলনে প্রধান বক্তা ছিলেন জাতীয় নির্বাহী কমিটির জ্যেষ্ঠ সদস্য, পার্বত্য শান্তি চুক্তি বাস্তবায়ন কমিটির আহ্বায়ক মন্ত্রী আলহাজ¦ আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহ এমপি। বিশেষ অতিথি ছিলেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবদুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক আ.ফ.ম বাহাউদ্দিন নাসিম, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক আফজাল হোসেন, আন্তর্জাতিক সম্পাদক শাম্মী আহমেদ, গণপূর্তমন্ত্রী রেজাউল করিম, পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী কর্নেল (অবঃ) জাহিদ ফারুক শামীম, কেন্দ্রীয় মহিলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা শাহান আরা বেগম প্রমুখ।