বগুড়া শহর ও এর আশ পাশের এলাকায় আশংকাজনক ভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে পকেট মারিং , পকেট কাটিং ,টানা পার্টির দৌরত্ব এবং ছোট খাত ছিনতাই । শহরের বিভিন্ন স্থানে রাতের নির্জনতায় ছোটখাত ছিনতাইএর অভিযোগ পাওয়া গেলেও দিনে দুপুরে পকেট মার ও টানা পার্টির সঙ্গবদ্ধ চক্রের হাতে লুন্ঠিত হচ্ছেন নারী পুরুষ সহ বিভিন্ন পেশাজীবি মানুষ। অভিযোগ দীর্ঘদিন যাবত চিহ্নিত পকেটমার ও টানা পার্টির দৌরত্বের কাছে জিমি শহরবাসী ।
জানা গেছে , বেশ কিছুদিন আইন প্রয়োগকারী সংস্থার তৎপরতায় সংখ্যার দিক দিয়ে পকেট কাটা ও টানা পার্টিরতৎপরতা বেশ কিছুটা কমে এলেও হঠাৎ করেই তা আবারো বৃদ্ধি পেয়েছে। দিনে দুপুরে সঙ্গবদ্ধ চক্রের পকেটমার টানা পার্টির সদস্যদের হাতে লুন্ঠিত এবং সর্বশান্ত হচ্ছেন মানুষ । বিশেষ করে শহর এবং মফস্বল থেকে আসা মহিলা এবং বয়স্কদের টার্গেট করে শহরের রাস্তায় বিপনী বিতান বিভিন্ন মার্কেট, বাজারে তৎপর রয়েছেন এই সব চক্রের পকেট মার এবং টানা পার্টির সদস্যরা ।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রতিদিন শহরের প্রানকেন্দ্র সাতমাথা সহ ফতেহআলী বাজার মোড় , চেলোপাড়া ফতেহআলী ব্রিজ , ডাকঘড় ,ব্যাংক ,বীমা অফিস ,রাজাবাজার,ফতেহআলী বাজার ,ষ্টেশন এলাকা,একই এলাকার হকার্স মার্কেট, বিভিন্ন হাসপাতাল ,ক্লিনিক সহ আদালত পাড়া সহ কমপক্ষে ১৫টি স্থানে এ সব পকেটমারও টানা পার্টির সদস্যরা সক্রিয় রয়েছে। ফলে তাদের ক্ষপ্পরে পরে সর্বশান্ত হয়ে ফিরছেন সর্বসাধারন । নিমিষে হাত থেকে হাওয়া হয়ে যাচ্ছে ব্যাগ, পকেট থেকে তুলে নেয়া হচ্ছে মানি ব্যাগ মোবাইল সেট,কেনাকাটা করা ব্যাগ।
অধিকাংশ ক্ষেত্রে এ সব বিষয়ে ঝামেলা এড়াতে ভুক্তভোগীরা থানায় অভিযোগ না করে কান্নাকাটি কিম্বা হায় হুতশ করে বাড়ীমুখো হতে বাধ্য হন । ফলে এ বিষয়টি আইন প্রয়োগকারী সংস্থার লোকজনের কাছে গোপন থেকে যায় । অন্যদিকে অভিযোগের পরও অধিকাংশ ক্ষেত্রে হারানো জিনিষপত্র ,মোবাইল সেট, ব্যাগ ফেরত না পাওয়ায় ভুক্তভোগীরা এ ব্যপারে নিরবে থেকে যান।
নির্ভরযোগ্য সূত্র এবং ভুক্তভোগীদের অনেকের অভিযোগে জানা গেছে , বগুড়ার শহরের উত্তর চেলোপাড়া এলাকার অপর নাম পকেটমার পট্রি। এখানে বাস করেন কমপক্ষে শতাধিক চিহ্নিত পকেটমার ও সঙ্গবদ্ধ টানা পার্টির সদস্যরা । এদের মধ্য কমপক্ষে ২৫জন নারী ও কিশোর পকেটমার এবং টানাপর্টির সক্রিয় সদস্য সঙ্গবদ্ধ ভাবে শহরে তাদের তৎপরতা চালিয়ে থাকে । শহরের ব্যস্ততম এলাকা থানা রোড ,বাজার ,বিপনী কেন্দ্র সহ বিভিন্ন মার্কেটে গভীর রাত অবধি এদের তৎপরতা চলে । সকাল হতে হতেই এরা শহরে ছড়িয়ে পড়ে । একই ভাবে শহরের বিভিন্ন স্থানে থাকা চিহ্নিত কমপক্ষে ২০জন পকেটমার ও টানা পার্টির নারী পুরুষ, কিশোর সদস্য পরিকল্পিত এবং নিয়মিত ভাবে সক্রিয় হয়ে ওঠে শহরে । শহরের বিভিন্ন মার্কেট বিপনী বিতান ,শপিং মলে এদের নিয়মিত আনা গোনা দেখা যায় । কেনা কাটার চলে এরা মার্কেটে কেনা করতে আসা নারী পুরুষদের সর্বস্ব নিয়ে কেটে পরে ।
অধিকাংশ ক্ষেত্রে কেনা কাটা করতে ,চিকিৎসা নিতে আসা বিভিন্ন নারী পুরুষের সামান্য অসতর্কতায় তাদের সর্বস্ব খুয়ে বসেন। বিশেষ কায়দায় সঙ্গবদ্ধ চক্রটি চোখের পলকে পকেট কিম্বা ব্যাগ থেকে তুলে নেয় মোবাইল ফোন কিম্বা ,মানি ব্যাগ। একই ভাবে টানা পার্টির সদস্যরা প্রথমে তাদের ট্রার্গেট ঠিক করে । পরে কয়েকজন মিলে ফাঁদ তৈরী করে তারা । তাদের সেই বিশেষ সেই ফাঁদে ফেলে লুটে নেয়া হয় কেনা কাটা করতে আসা নারী পুরুষের ব্যাগ বা সঙ্গে থাকা মূল্যবান জিনিষপত্র ।
এমনি এক ঘটনায় গতকাল বৃহস্পতিবার শহরের হর্কাস মাকের্টে বিয়ের কাপড় চোপড় কিনতে এসে সর্বত্ব খুয়েছেন ভাবী ননদ । শহরের দক্ষিন চেলাপাড়া এলাকার হিরা বেগম ও তার ননদ । দুপুরে তাদের কেনা কাটা করার জন্য হকার্স মার্কেটে যান কেনা কাটা করতে । তাদের সামান্যতম অসর্তকতার সুযোগে টানা পার্টির সদস্যরা প্রায় ১৫হাজার নগদ টাকা ,মূল্যবান একটি মোবাইল ফোন সহ তাদের ভ্যানেটি ব্যগটি নিয়ে কেটে পড়ে ।
এর আগের দিন কাহালুর রাবেয়া শহরে কেনা কাটা করতে এসে তাদের স্বর্বস্ব হারিয়ে বাড়ী ফেরেন । এ বিষয়ে আইন প্রয়োগকারী সদস্যদের এ বিষয়ে তৎপরতা বৃদ্ধি সহ চিহ্নিত এসব পকেট মার ও টানা পার্টির সদস্যদের বিরুদ্ধে কঠোর হওয়ায় দাবী জানান ভুক্তভোগী ও সচেতন শহবাসী ।