রাজবাড়ীতে মঙ্গলবার প্রথম আলো পত্রিকার সম্পাদক ও রাজবাড়ী প্রতিনিধির বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। রাজবাড়ীর দুই নম্বর আমলী আদালতে নাহিদ হাসান রতন (৩০) বাদী হয়ে এই মামলা দায়ের করেন। নাহিদ হাসান পাংশা উপজেলার মাছপাড়া ইউপি ছাত্রলীগের সভাপতি। তাঁর বাড়ি নওপাড়া গ্রামে।
প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমানকে দুই নম্বর ও রাজবাড়ী প্রতিনিধি এজাজ আহম্মেদকে এক নম্বর আসামি করা হয়।
আদালতের বিচারক লাবনী আক্তার বিষয়টি তদন্ত করার জন্য পাংশা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আহসান উল্লাহকে নির্দেশ দিয়েছেন। ১২ ফেব্রুয়ারি মামলার পরবর্তী দিন ধার্য করা হয়েছে। সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর (এপিপি) খান মো জহুরুল হক বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মামলার আরজীতে বলা হয়, এক স্কুল ছাত্র গুলিবিদ্ধ হওয়ার কথিত ঘটনায় উদ্দেশ্যমূলকভাবে প্রয়াত এমপি খন্দকার নুরুল ইসলামের আপন ভাতিজা ছাত্রলীগ নেতা সিসিলকে জড়িয়ে প্রথম আলো পত্রিকায় ২৩ ডিসেম্বর ‘ছাত্রলীগ নেতার গুলিতে স্কুলছাত্র গুরুতর আহত’ শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। উল্লিখিত মিথ্যা ও মানহানিকর সংবাদ সম্পর্কে এলাকার সাধারণ মানুষের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টির পাশাপাশি এ অঞ্চলের হাজার হাজার আওয়ামীলীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা মর্মাহত ও ব্যথিত হয়েছে। বিশেষ করে ছাত্রলীগের ভাবমূতি ও সুনাম ক্ষুন্ন হয়েছে। প্রকাশিত সংবাদ অসত্য, ভিত্তিহীন ও সম্মানহানিকর। এ জাতীয় খবরে বাদী ও তার দলের অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে। ঘটনার দিন এক নম্বর আসামি প্রথম আলো পত্রিকা ফটোকপি করে মাছপাড়া বাজারের বিভিন্ন এলাকায় বিলি বন্টন ও প্রচার করে। বাদী ও তার রাজনৈতিক আদর্শ পাংশা উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক খন্দকার তাসবীর হাসান সিসিলও তার বাবা ইউপি চেয়ারম্যান খন্দকার সাইফুল ইসলাম বুড়োর নামে কটূক্তি করে।
বাদীর রাজনৈতিক আদর্শ ও প্রেরণা দাতা খন্দকার তাসবীর হাসান সিসিলকে ওই ঘটনায় আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দেওয়া হয়নাই। বাদীর রাজনৈতিক প্রেরণার শেষ আশ্রয়স্থল তাসবীরের পরিবারের বিরুদ্ধে মিথ্যা বক্তব্য প্রকাশ ও মাছপাড়ার বাজারে বিলি বন্টন ও প্রচার করে বাদীর সুনাম ক্ষুন্ন করেছেন। এ বিষয়ে প্রতিবাদ লিপি দেওয়া হলেও তা প্রকাশ করা হয়নাই। ফলে বাদীর দুই কোটি টাকার সুনাম ক্ষুন্ন হয়েছে।
প্রথম আলোর সম্পাদক ও রাজবাড়ী প্রতিনিধির নামে মামলার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন রাজবাড়ীতে কর্মরত সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ। তাঁরা হলো জেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি প্রবীণ সাংবাদিক (বিটিভি প্রতিনিধি) মো. সানাউল্লাহ, সাধারণ সম্পাদক (সময় টেলিভিশন) করিম ইসহাক, রাজবাড়ী প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক (সম্পাদক, দৈনিক মাতৃকন্ঠ) খন্দকার আবদুল মতিন, বাসস প্রতিনিধি ও দৈনিক জনতার আদালত পত্রিকার সম্পাদক নুরে আলম সিদ্দিকী হক, রাজবাড়ী প্রেসক্লাবের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক (দৈনিক কালের কন্ঠ) জাহাঙ্গীর হোসেন, জেলা প্রেসক্লাবের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক (সমকাল) সৌমিত্র শীল চন্দন, রাজবাড়ী জেলা টেলিভিশন সাংবাদিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক (বাংলা নিউজ টুয়েন্টিফরডট কম) কাজী আবদুল কুদ্দুস বাবু, রাজবাড়ী জেলা রিপোর্টার্স ক্লাবের সভাপতি (এটিএন বাংলা/এটিএন নিউজ) লিটন চক্রবর্তী, সাংগঠনিক সম্পাদক (চ্যানেল ২৪) সুমন বিশ্বাস প্রমূখ।
প্রথম আলোর রাজবাড়ী প্রতিনিধি এজাজ আহম্মেদ বলেন, ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবার সঙ্গে কথা বলে বস্তুনিষ্ঠ খবর পরিবেশন করা হয়েছে। প্রকাশিত সংবাদে প্রতিবেদকের নিজস্ব কোনো মতামত উত্থাপন করা হয়নি। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় তথ্যাদি সংরক্ষণ করা আছে। পত্রিকায় খবর প্রকাশ করা নিয়ে আনীত অভিযোগ সঠিক নয়। উদ্দেশ্যমূলক ও পরিকল্পিত ভাবে কন্ঠরোধ ও হয়রানী করার জন্য এই মামলা দায়ের করা হয়েছে।