কিশোরগঞ্জের বাজিতপুর উপজেলার হিলচিয়া ইউনিয়নের বালিগাঁও গ্রামের হতদরিদ্র মুক্তিযোদ্ধা মোঃ আবু তাহের (৬৬) বছর বয়সেও মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি পাইনি। স্বাধীনতার সম্মুখ যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন তিনি। ৪৯ বছর পার হয়ে গেছে, তার সাথী সহযোদ্ধারা মুক্তিযোদ্ধা হয়ে সরকারিভাবে সম্মানি ভাতা পাচ্ছেন। ভাগ্যের কি পরিহাস স্ত্রী দুই ছেলে সহ নাতী নাতনী নিয়ে খুব কষ্টে সার গুদামে শ্রমিকের কাজ করে যে অর্থ পান তা দিয়ে তিনবেলা ভাত জুটছেনা। প্রথমে মোঃ আবু তাহের ভারত থেকে ট্রেনিং করেন। কিন্তু তার মুক্তিযোদ্ধার মুক্তিবার্তা ও সনদপত্রটি হারিয়ে যায়। পরবর্তীতে মুক্তিযোদ্ধা বসু মিয়া উরফে বড় সাহেবের সঙ্গে থেকেও যুদ্ধ করেছেন। জানা যায় ১৯৭১ সালে ১১নং সেক্টর কমান্ডার অধ্যক্ষ মতিউর রহমানের অধীনে বাজিতপুরের সরারচর, হিলচিয়া, গুরুইসহ বিভিন্ন স্থানে পাক হানাদার বাহিনীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছেন। তিনি জানান ১৯৭১ সালের ভারতের উদ্দেশ্যে গমন করার পর ভারতের মহিষখলা ইউথক্যাম্পে ট্রেনিং করার পর কোম্পানী কমান্ডার অধ্যক্ষ মতিউর রহমান ও সহযোদ্ধাদের সাথে থেকে ভারত থেকে ট্রেনিং করে দেশে এসে যুদ্ধ করেন। কিন্তু স্বাধীনতার ৪৯ বছর পার হয়ে গেছে মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় তার নাম এখনও উঠেনি। আবু তাহের দু:খ প্রকাশ করে বলেন ২০১১ সনে এপ্রিল মাসে মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়ে প্রথমবার আবেদন করেন (ক্রমিক নং- ০৩, ডিজি নং-১২৪৬১) তখনও তিনি মুক্তিযোদ্ধা তালিকায় অন্তর্ভূক্ত হননি। মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে সৈয়দ জাহান, মোঃ আবুল কালাম, সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার নূরুল হক আক্ষেপ করে বলেন, আবু তাহের মুক্তিযোদ্ধে অংশগ্রহণ করে। কিন্তু ৪৯ বছর পার হয়ে গেলেও সহযোদ্ধা তাদের সাথে সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে বলে তারা জানান। মুক্তিযোদ্ধা আবু তাহের বলেন, জীবনের শেষ বয়সে এসে যদি মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় তার নাম উঠে তাহলে তিনি স্বাধীন দেশের একজন সেবক হিসেবে পরিচিত লাভ করতে পারতেন বলে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন গত কিছুদিন আগে মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়ের মাননীয় মন্ত্রী আ.ক.ম মোজাম্মেল হকের নিকট তিনি আবেদনটি তার হাতে দিয়েছেন। তিনি বলেন, তার আবেদনটি মন্ত্রী তাকে মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি পাবেন বলে দাবী করেন।