সুনামগঞ্জ জেলার তাহিরপুর উপজেলাস্থ লাউড় রাজ্যের প্রাচীন দুর্গে প্রত্নতাত্ত্বিক খনন কাজের শুভ উদ্বোধন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগীয় আঞ্চলিক পরিচালক ড. মোঃ আতাউর রহমান এর সভাপতিত্ত্বে ও ফিল্ড অফিসার মোঃ শাহীন আলম এর সঞ্চালনায় উক্ত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আহাদ, বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন তাহিরপুর উপজেলা চেয়ারম্যান করুণা সিন্ধু চৌধুরী (বাবুল) ও তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিজেন ব্যানার্জি। উপস্থিত ছিলেন তাহিরপুর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোঃ মুনতাসির হাসান, ময়নামতি জাদুঘরের কাস্টোডিয়ান (অতি.দা.) মোঃ হাফিজুর রহমান, তাহিরপুর উত্তর বড়দল ইউনিয়ন চেয়ারম্যান মোঃ আজাহার আলী, বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ আব্দুল মান্নান। প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর, আঞ্চলিক পরিচালকের কার্যালয়, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের আয়োজনে অনুষ্ঠানে লাউড় রাজ্যের প্রাচীন দুর্গের ইতিহাস ও প্রত্নতাত্ত্বিক গুরুত্ব দিয়ে বক্তব্য রাখেন ময়নামতি জাদুঘরের কাস্টোডিয়ান (অতি.দা.) মোঃ হাফিজুর রহমান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিজেন ব্যানার্জি । অনুষ্ঠানের সভাপতি চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগীয় আঞ্চলিক পরিচালক ড. মোঃ আতাউর রহমান বলেন, সিলেট একটি প্রাচীন নগরী। আর এই প্রাচীন নগরীর উৎপত্তি হিসেবে এই লাউড়ের গড় ছিল প্রাচীন রাজধানী। এখানে সঠিকভাবে গবেষণা ও খননের মাধ্যমে সঠিক ইতিহাস উদঘাটন করা সম্ভব হবে। এর মাধ্যমে এই অঞ্চলে একটি প্রত্ন-পর্যটন নগরী গড়ে উঠবে। সর্বশেষে প্রধান অতিথির বক্তব্যে সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আহাদ আলী বলেন, এই অঞ্চলটি অনেক প্রাচীন, এটিকে সরকারীভাবে রক্ষা করতে হবে। প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর খনন কাজের মাধ্যমে এটিকে প্রত্ন-পর্যটন নগরী হিসেবে রুপদান করার কাজে হাত দিয়েছে। এই কাজে জেলা প্রশাসন সবসময় সহযোগীতা করে আসছে এবং সামনের দিকেও করবে। এই কাজের মাধ্যমে এ অঞ্চলের সঠিক ইতিহাস পুনরুদ্ধার হবে। এজন্য গ্রামবাসী ও জনপ্রতিনিধিদের খনন দলকে সার্বিক সহযোগীতা করতে হবে। প্রশাসনিকভাবে এলাকাবাসিদেরকে সরকারের পক্ষ থেকে সকল প্রকার সহযোগীতা করবেন বলে আশ্বস্ত করেন। জেলা প্রশাসক আরও উল্লেখ করেছেন যে, প্রত্নপর্যটন বিকাশের মাধ্যমে এলাকার উন্নয়ন কাজ করতে প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের দলটি এখানে এসেছে। সুতরাং অতিথি এ দলটিকে আঘাত কিংবা ক্ষতি করা যাবে না। পরিশেষে, লাউড় রাজ্যের দুর্গ প্রাচীরের প্রধান ফটকের সামনে আনুষ্ঠানিকভাবে ২০১৯-২০ খ্রি. অর্থ-বছরের প্রত্নতাত্ত্বিক খনন কাজের শুভ উদ্বোধন করেন।
উল্লেখ্য যে, গত ২০১৮-১৯ অর্থবছরের প্রত্নতাত্ত্বিক খনন ও অনুসন্ধানের মাধ্যমে প্রাপ্ত নির্দশনগুলোর গুরুত্বারোপ করে প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়কে লাউড় রাজ্যের প্রাচীন দুর্গটিকে সংরক্ষিত পুরাকীর্তি ঘোষণার প্রস্তাব প্রেরণ করে। তার আলোকে এবং বাংলাদেশ পাবলিক সার্ভিস কমিশনের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাদিকের সুপারিশের প্রেক্ষিতে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৯ তারিখের এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে এ প্রত্নস্থানটিকে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের একটি সংরক্ষিত পুরাকীর্তি ঘোষণা করে।