নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার চরকালনা গ্রামে তিন ফসলি জমি ও জনবহুল এলাকায় প্রস্তাবিত অর্থনৈতিক অঞ্চল এর জন্য জমি অধিগ্রহণ না করবার দাবিতে প্রতিবাদসভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার(১৫ জানুয়ারি) চরকালনা গ্রামে গ্রামবাসীরা এ প্রতিবাদসভা করে।
গ্রামবাসী ও সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, লোহাগড়া ইউনিয়নের মধুমতি নদী ভাঙ্গন কবলিত চরজাজিরা-কালনা জনপদটি অপেক্ষাকৃত অনগ্রসর। কৃষিকাজ ও দিনমজুর শ্রেণির বেশি মানুষ এখানে বসবাস করে। মধুমতি নদীর পলি বেষ্টিত তিন ফসলি জমিতে ফসল উৎপাদন করে গ্রামবাসীরা জীবন-জীবিকা নির্বাহ করে থাকে। কালনাঘাট পয়েন্টে কালনা সেতু ও রেল সেতু সহ রেল লাইন ও মহাসড়ক নির্মাণ করায় ইতোমধ্যে অনেক জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে। এলাকার হাজার হাজার মানুষ ক্ষতিগ্রস্থ হলেও দেশের উন্নয়নের স্বার্থে তা মেনে নিয়েছে।
কালনা সেতুর পশ্চিমপাশের্^ সিএস,আরএস ও এসএ রেকর্ডীয় ৪৪ নং চরজাজিরা কালনা মৌজার অবস্থান। ওই অবস্থানসহ পশ্চিমে সিএস ও এসএ রেকর্ডীয় ৮২ নং কালনা মৌজায় তিন ফসলি জমি ও জনবহুল এলাকায় প্রস্তাবিত অর্থনৈতিক অঞ্চল গঠনের প্রক্রিয়া চলছে। গত ২৮ ডিসেম্বর ঊর্ধ্বতন সরকারি কর্মকর্তাসহ লোহাগড়া ও কাশিয়ানি উপজেলার এ্যাসিল্যান্ড ওই এলাকা পরিদর্শন শেষে এলাকাবাসীদের জানান, সরকার ৮২নং কালনা মৌজা ও ৪৪ নং চরজাজিরা কালনা মৌজায় একটি অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপনের পরিকল্পনা করেছে। কিন্তু এলাকাবাসীর দাবি এখানে অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলা হলে ছয়শতাধীক দরিদ্র পরিবার ক্ষতিগ্রস্থ হবে। কয়েক হাজার একর তিন ফসলি জমি নষ্ট হবে। তাই অন্যত্র অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলা হোক।
গ্রামবাসীর আয়োজনে বুধবার বেলা সাড়ে ১১টায় চরকালনা গ্রামে লোহাগড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সিকদার নজরুল ইসলামের সভাপতিত্বে প্রতিবাদসভা ও সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন লোহাগড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মুন্সী আলাউদ্দিন, সমাজসেবক হেমায়েত হোসেন মোল্যা, বীরমুক্তিযোদ্ধা বাদশা মোল্যা ও ইব্রাহিম মোল্যা, ইউপি মেম্বর গোপাল বসু, ইউপি মেম্বর আনোয়ার হোসেন মৃধা, মো. আকরাম হোসেন, ওয়ালিয়ার রহমান প্রমুখ। লোহাগড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মুন্সী আলাউদ্দিন উপযুক্ত স্থানে অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলাসহ ক্ষতিগ্রস্থদের পুনর্বাসনের দাবি জানান। লোহাগড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সিকদার নজরুল ইসলাম এলাকার দরিদ্র মানুষের কথা চিন্তা করে আরো ভালো অবস্থানে অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলার দাবি জানান।
এ বিষয়ে লোহাগড়া উপজেলার এ্যাসিল্যান্ড (সহকারী কমিশনার ভূমি) রাখী ব্যানার্জী বলেন, সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ইতোমধ্যে ওই এলাকা পরিদর্শন করেছেন। আমরা ভূমি অধিগ্রহণের জন্যে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে একটি প্রস্তাব পাঠিয়েছি। চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত বা প্রস্তাব পর্যায়ে বিষয়টি এখনো যায়নি। মানুষ যাতে কম ক্ষতিগ্রস্থ হয় সেটা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বিবেচনায় নিয়ে কাজ করছেন।