রাজধানীর গাবতলীতে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনে (ডিএনসিসি) বিএনপির মেয়রপ্রার্থী তাবিথ আউয়ালের নির্বাচনি প্রচারণায় হামলার অভিযোগ পাওয়া গেছে। মঙ্গলবার বেলা পৌনে ১২টার দিকে পর্বতার কলাবাজার এলাকায় কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে জনসংযোগে নামলে পুলিশের উপস্থিতিতে তার উপর হামলা হয় বলে অভিযোগ করেছেন ধানের শীষের এই প্রার্থী। হামলার জন্য ঢাকা উত্তরের ৯ নং ওয়ার্ডে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগসমর্থিত কাউন্সিলর প্রার্থী ঠেলাগাড়ি প্রতীকের কর্মী-সমর্থকদের দায়ী করা হয়।
পুলিশ বলছে, দুই প্রার্থীর প্রচারণার সময় কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে উত্তেজনা তৈরি হলেও সেখানে হামলার কোনো ঘটনা ঘটেনি। তবে সেখানে উপস্থিত তাবিথের সহযোগীরা বলেন, তাবিথের মাথায় আঘাত লাগলেও তা গুরুতর না। তবে আহত বেশকজন নেতাকর্মীকে কাছের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। এবিষয়ে তাবিথ বলেন, পেছন থেকে কাপুরুষের মতো আমাকে টার্গেট করে মারা হয়েছে। সবচেয়ে ভয়ঙ্কর ব্যাপার হলো, এ হামলাটি আমাদের কিছু কিছু পুলিশ কর্মকর্তার সামনে হয়েছে। আমাদের পক্ষে গণজোয়ারে ঈর্ষান্বিত হয়ে প্রতিপক্ষ হামলা করেছে। আমরা তাদের পাল্টা আঘাত করি নাই। শান্তিপূর্ণভাবে আমরা প্রচারণা চালাচ্ছি। এ ঘটনায় ওই এলাকায় দুই পক্ষের কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে ধাওয়া, পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। পরে পুলিশের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি শান্ত হওয়ার পর তাবিথ গাবতলীতেই গণসংযোগ করেন।
প্রতিপক্ষকে তাৎক্ষণিক পাল্টা আঘাত না করা বিচক্ষণতার পরিচয় তবে পুলিশের সামনে বিরোধী পক্ষের ওপর হামলা কোনভাবেই কাম্য নয়। যদি উল্টোটা হতো অর্থাৎ ক্ষমতাসীন আওয়ামী সমর্থিত প্রার্থীর ওপর বিএনপির নেতাকর্মীরা যদি হামলা চালাতো সেটি যেভাবে অনাকাঙ্খিত তেমনই বিএনপি প্রার্থীর ওপর হামলাও ন্যাক্কারজনক। আমরা এই ধরণের হিংসাত্মক রাজনীতিকে অসমর্থন জানাই। বিএনপি সমর্থিত মেয়র পদ প্রার্থী তাবিথ আওয়ালের ওপর হামলার অভিযোগ পেলে তা খতিয়ে দেখবেন বলে জানিয়েছেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের রিটার্নিং কর্মকর্তা। তিনি বলেছেন অভিযোগ প্রমাণিত হলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি আরও বলেন, নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু করতে আমরা সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। আমরা আশা করি তাঁর এই বক্তব্য শুধু আশ^াসের পর্যায়েই থেকে না যায়।
নির্বাচনে সবার জন্য সমান সুযোগ তথা লেভেল প্লেইং ফিল্ড তৈরি করা নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব। এক্ষেত্রে কোনও ধরণের গাফিলতি বা পক্ষপাতিত্ব কাম্য নয়। ঢাকার দুই সিটি নির্বাচনে ভোটগ্রহণের আর মাত্র কয়েকদিন বাকি। প্রার্থীরা আর এক সপ্তাহ পর্যন্ত প্রচার-প্রচারণা চালাতে পারবেন। তবে প্রচারণার শুরু থেকেই বিভিন্ন ধরণের অভিযোগ উঠেছে। প্রার্থীদের পোস্টার লাগাতে না দেয়া বা পোস্টার লাগানো হলে সেগুলো ছিঁড়ে ফেলা অথবা প্রচারণায় বের হলে বাধা দেয়া -এগুলো বাংলাদেশের যেকোনও নির্বাচনের আগের পরিচিত চিত্র। এগুলো থেকে বের হয়ে আসতে হবে। রাজনৈতিক দলগুলোর নেতাকর্মী-সমর্থক ও এলাকাবাসী তথা ভোটারদের প্রতি আহ্বান- সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ অবস্থা বজায় রাখুন।